নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শেষ পর্যন্ত সুপার কাপে না খেলা নিয়ে মোহন বাগান, ইস্ট বেঙ্গল সহ আই লিগের সাত ক্লাবকে শো-কজ করল অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন। ক্লাবগুলির কাছে পাঠানো ই-মেলে বলা হয়েছে, আই লিগের চুক্তিপত্র তথা সুপার কাপের নিয়মাবলী অনুসারে সুপার কাপে কেন খেলল না ক্লাবগুলি, তার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা ২৫ এপ্রিলের মধ্যে পাঠিয়ে দিতে। তাছাড়া দিল্লির ফুটবল ভবনে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে ক্লাবগুলি ২৭ ও ২৮ এপ্রিল প্রতিনিধি পাঠিয়ে তাঁদের বক্তব্য জানাতে পারে। এই চিঠি দিয়েছেন ফেডারেশন সচিব কুশল দাস।
শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ঊষানাথ ব্যানার্জি জানালেন,‘আমরা সুচারুভাবে এবং অত্যন্ত সচেতনভাবে এগতে চাইছি। ক্লাবগুলির প্রতিনিধিদের বক্তব্যও আমরা রেকর্ড করব। তাই ২৭ এপ্রিল ডাকা হয়েছে চারটি ক্লাবকে। আর ২৮ এপ্রিল ডাকা হয়েছে অপর তিনটি ক্লাবকে। আমাদের অতি স্পর্শকাতর ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই ২৭- ২৮ এপ্রিল শুনানির পর শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির একটি রিভিউ মিটিং হবে। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ হয়ে যাবে।’
জানা গেল, সাতটি ক্লাবেরই মোটা জরিমানা হবে। আগামী দুই মরশুম (২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১) সুপার কাপ খেলতে পারবে না এই সাতটি ক্লাব। ফুটবল হাউসের একটি অংশ চাইছে, ছয় মাসের জন্য সাসপেন্ড হোক সাতটি ক্লাব। তবে কলকাতা লিগের কথা ভেবে এই রকম শাস্তি যাতে লাগু না হয় সেই জন্য চেষ্টা করছেন ফেডারেশনের এক প্রভাবশালী শীর্ষ কর্তা।
প্রিমিয়ার ‘এ’ থেকে নামবে দুটি দল: আসন্ন ফুটবল মরশুমে প্রিমিয়ার ‘এ’- তে খেলবে ১২টি দল। এর মধ্যে বর্তমান নিয়ম অনুসারে চারটি দল নেমে যাবে। কিন্তু এই নিয়ম পরিবর্তন করতে প্রিমিয়ারের দশটি ক্লাব আইএফএ দপ্তরে গিয়ে সচিব উৎপল গাঙ্গুলির কাছে সোমবার বিকেলে একটি ডেপুটেশন দেন। সিএফএলের ক্লাব বিবিধ দাবিতে ময়দানের একটি ক্লাবে দুই বার আলোচনায় বসেছিলেন। নববর্ষের দিন সচিব উৎপল গাঙ্গুলিকেও বেশ কিছু ক্লাব প্রতিনিধি অনুরোধ করেন খেলা বাড়াতে। প্রিমিয়ার ‘এ’তে ১২টি ক্লাব। মাত্র ১১টি ম্যচ। আর প্রিমিয়ার ‘বি’তে দশটি ক্লাব। প্রিমিয়ার ‘বি’ ডিভিশনে মাত্র ন’টি ম্যাচ। ময়দানের ছোট ক্লাবগুলির মধ্যে ইউনাইটেড ও পাঠচক্র ক্লাবের কর্তারা বিভিন্ন ক্লাবের ম্যাচ সবথেকে বেশি দেখেন। তাঁরা প্রিমিয়ার লিগের দু’টি ডিভিশন সংযুক্তকরণের ব্যাপারে সবথেকে বেশি সোচ্চার। তাঁদের সমর্থন জানান এরিয়ান ক্লাবের টিডি, বিএসএস, জর্জ টেলিগ্রাফের প্রতিনিধিরা। তাই সভার শেষে উৎপল গাঙ্গুলি বলেন,‘ দুটি ডিভিশনকে ২০১৯-২০ মরশুমে সংযুক্তিকরণ সম্ভব নয়। কারণ প্রথম ডিভিশনের লিগের নিয়ম ঠিক হয়ে গিয়েছে। প্রিমিয়ার ‘এ’ থেকে যাতে চারের বদলে দুটি দল নামে সেই ব্যাপারটি আমরা ভেবে দেখব। যখন প্রিমিয়ারের মডালিটি ঠিক হবে তখনই এই ব্যাপারটি চূড়ান্ত হবে।’
১২ দলের লিগে তিন প্রধান অবনমনের আওতায় কখনই পড়ে না। বাকি ন’টি দলের মধ্যে চারটি দল নামবে। এই ব্যাপারটি অতি হাস্যকর। উৎপল গাঙ্গুলি সচিব হওয়ার পর সুপার ডিভিশনকে প্রিমিয়ারের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। আর প্রিমিয়ারকে ভেঙে দুটি ডিভিশন করে দিয়েছিলেন। এতে কলকাতা লিগে বড় দলগুলির বিরুদ্ধে ছোট দলের তরুণদের খেলার সুযোগ সঙ্কুচিত হয়েছে। অবশ্য আইএফএ পুজোর আগে প্রিমিয়ার লিগ শেষ করে দিত। এই নিয়মেরই পরিবর্তন চাইছে ক্লাবগুলি। জুলাইয়ে আইএফএ সচিব পদে নির্বাচন। সেই কথা মনে রেখে সচিবও কিছুটা নরম হচ্ছেন। এদিকে, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সিআরএ’র কর্তাদের কাছে সুখবর। এবারও সিআরএ’র স্পনসর থাকছে অফিসার্স চয়েস। রেফারিদের পোশাকে ওই সংস্থার লোগো থাকবে।
এদিকে, নতুন ফুটবল মরশুমে ভবানীপুরের কোচ হচ্ছেন শঙ্করলাল চক্রবর্তী। গতবার সুব্রত ভট্টাচার্যের কোচিংয়ে প্রিমিয়ার এ’তে উঠেছিল ভবানীপুর। এবার প্রিমিয়ার এ’তে কোচিং করার জন্য কোচেদের ‘বি’ লাইসেন্স প্রয়োজন। এই কথা সামনে রেখে শঙ্করলালের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করল ভবানীপুর। তবে সুব্রত ভট্টাচার্যকে টিডি করার কথা ভাবছে মহমেডান স্পোর্টিং। সচিব কামরুদ্দিন এখন সৌদি আরবে আছেন। তিনি ফিরলে এ মাসের শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। কলকাতায় থাকা এক শীর্ষ কর্তা সুব্রত ভট্টাচার্যর সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা বলে রেখেছেন। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের কোচ হচ্ছেন তড়িৎ ঘোষ। পিয়ারলেসের কোচ হতে পারেন জুনিয়র রঞ্জন চৌধুরি।
ভদ্রকালী ইয়ুথ কোরের ফুটবল প্রতিযোগিতা: সম্প্রতি উত্তরপাড়ার ভদ্রকালী ইয়ুথ কোর আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভদ্রকালী ইয়ং সোসাইটি। রানার্স হয়েছে ভদ্রকালী সেবক সংঘ। ফাইনালে টাই-ব্রেকারে জেতে ইয়ং সোসাইটি। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় ও সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন শুভম ভৌমিক ও সঞ্জীব মণ্ডল।
কলকাতা হকি লিগে চ্যাম্পিয়ন সিইএসসি: কলকাতা প্রথম ডিভিশন হকি লিগে ( গ্রুপ এ) প্রত্যাশামতোই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিইএসসি (৩৩ পয়েন্ট)। রানার্স ইস্টার্ন রেল (২৮ পয়েন্ট) এবং তৃতীয় হয়েছে পাঞ্জাব স্পোর্টস (২৩ পয়েন্ট)।