সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
বুধবার সকালে ভাজাচাউলি গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসের টোটোয় চালকের সিটে বসেছিলেন গৌতম দে। হাঁটুর উপর থেকে ডান পা নেই। ২০০০ সালে ২৪অক্টোবর সিপিএমের হার্মাদরা স্থানীয় ঘাটবাড় বুথের তৃণমূলের সম্পাদক গৌতম দে এবং আর এক নেতা তাপস মাইতিকে তুলে নিয়ে যায়। হার্মাদ বাহিনীর আক্রমণে তাপস মারা যান। গাছে পা পেঁচিয়ে গৌতমের দুই পা ভেঙে দেয়। তারমধ্যে ডান পা কেটে বাদ দিতে হয়। তাপস মাইতির মতো হরিণা পাশদলবাড়ের বিধান মাইতি, ইছাগেড়িয়ায় আশুতোষ মাইতি, বামুনিয়ার শচীন ধাড়া সহ মৃতদের তালিকা দীর্ঘ।
১৯৭৮-’৮৩ সালে সিপিএমের দখলে ভাজাচাউলি পঞ্চায়েত থাকার সময় অত্যাচার শুরু। জমি, ভেড়ি দখল, বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের খেসারত দিতে হয় সিপিএমকে। ১৯৮৩ সাল থেকে টানা তিনটি টার্ম কংগ্রেস দখল করে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত। মাঝেমধ্যেই রাজনৈতিক সন্ত্রাসে উত্তপ্ত হয় ভাজাচাউলি। কিন্তু, ২০০০ সালে সবং, পিংলা, গড়বেতায় হার্মাদবাহিনীর লাগামহীন অত্যাচার চলাকালীন আবারও ভাজাচাউলি উত্তপ্ত হয়। ২০০৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। কিন্তু, ২০০৯ থেকে আবারও রাজনৈতিক সংঘর্ষে সিপিএমের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কানাইলাল ঘড়া তৃণমূলের দিকে ঝুঁকে যান। সেইসঙ্গে সিপিএম ছন্নছাড়া হয়। সিপিএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান বিভাস পড়্যা এখন দীঘার বাসিন্দা। লাল সন্ত্রাসের আর এক নায়ক ভানু গিরি ভাজাচাউলি ছেড়ে এখন তমলুকে সিপিএমের জেলা পার্টি অফিসের হোল টাইমার।
ভাজাচউলি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫০৩৯জন গৃহবধূ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপভোক্তা। গোটা তল্লাটে সব জায়গায় পানীয় জলের পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস এখন গোটা জেলার মধ্যে মডেল পঞ্চায়েত। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিস যেন কোনও কর্পোরেট সংস্থার অফিস। পঞ্চায়েতে কাজে আসা সাধারণ ব্যক্তিদের বসার জন্য রয়েছে দামি চেয়ার টেবিল। স্থানীয় দক্ষিণ নিশ্চিন্তা গ্রামের মনিকা মণ্ডল, হরিণা পাশদলবাড় গ্রামের আরতি দাস বলেন, আমরা অতীতের সন্ত্রাসের কথা আর মনে রাখতে চাই না। হিংসা, হানাহানি থেকে ভাজাচাউলি এখন মুক্ত। আমরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাচ্ছি।
ভাজাচাউলি অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ বেজ বলেন, ভাজাচাউলি মানে একটা সময় হিংসা হানাহানি লেগেই থাকত। অতীতের সেই কালো দিন থেকে বেরিয়ে এখন এই এলাকা পুরোপুরি শান্ত। সিপিএমের সেইসব নেতাদের বেশিরভাগ এখন বিজেপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কেউ কেউ আমাদের দলের সঙ্গেও মিশে গিয়েছেন। এই তল্লাটে এখন আর সেভাবে সিপিএম নেই। তবে, বিজেপি গতবছর পঞ্চায়েত ভোটে দাগ কাটতে পারেনি। এবার লোকসভা ভোটেও পারবে না।