বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এ ব্যাপারে জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, সার্কিট ট্যুরিজম গড়ে তোলা অনেকটাই বড় ব্যাপার। আমাদের ভাবনা চিন্তার মধ্যে তা আছে। তবে একটু সময় লাগবে। আপাতত আমরা নবদ্বীপকে হেরিটেজ টাউন হিসাবে ঘোষণার জন্য চূড়ান্ত নোটিফিকেশন বেরনোর ঠিক আগের ধাপে রয়েছি। এই কাজটি যথাযথভাবে হয়ে গেলেই আমরা পরবর্তী সময়ে গোটা জেলার পর্যটন সাজানোর ব্যাপারে এগোবো। অজয়বাবু এখন শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, পর্যটন প্রসারে আমি আগেও নানা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু সেভাবে কোনওটাই এগয়নি। পর্যটন নিয়ে মানুষ আগের থেকে এখন আরও উৎসাহিত। ফলে এই বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের আর একটু ভাবনা চিন্তার দরকার আছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শুধু শান্তিপুর-ফুলিয়া নিয়েই খুব সুন্দর ট্যুরিজম সার্কিট গড়া যায়। শুধু নীলকুঠি কিংবা রেশমকুঠিই নয়। শান্তিপুরের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অজস্র স্থাপত্য আর ইতিহাসের নানা উপকরণ। সেই তালিকায় যেমন রয়েছে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের নামের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা তোপখানার মসজিদ, ইটের তৈরি আটচালার শ্যামচাঁদ মন্দির, দানবীর মরহুম শরিবত সাহেবের তৈরি সুদৃশ্য মসজিদ, ওস্তাগরপাড়ার মসজিদ-সহ প্রায় ২৬টি মসজিদ, সম্প্রীতির মেলবন্ধন শৈশবতলা, সৈয়দ সাহেবের মাজার, ব্রাহ্মসমাজের বাড়ি। এছাড়াও শান্তিপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বড় গোস্বামী বাড়ি-সহ ২৪টি বিগ্রহবাড়ি। এই সব মন্দির ও বিগ্রহবাড়ির সঙ্গে শুধু যে ইতিহাস জড়িয়ে আছে তাই নয়, এইসব মন্দিরের গায়ে পোড়ামাটির কাজ বাংলার অন্যতম দর্শনীয় বিষয়। পর্যটকের আসা যাওয়া লেগেই থাকে। আবার কারও কারও দাবি, এই শহরে ছিল বৌদ্ধস্তূপও। কিন্তু কালের নিয়মে তাও নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। আর ফুলিয়া, আদি কবির কৃত্তিবাসের জন্মস্থান। আছে কবির অস্থি সমাধি। আবার তাঁর জন্মভিটের পাশে আছে সেই বটগাছ। কথিত আছে, এই বটগাছের ছায়ায় বসেই কবি বাংলা ভাষায় রামায়ণ রচনা করেছিলেন। আছে তাঁতও। এখানকার তাঁতের শাড়ি বিখ্যাত। প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা হয়েছিল, প্রথম দিন শান্তিপুর-ফুলিয়া ঘুরে কৃষ্ণনগর হয়েছে রাত কাটাবেন পর্যটকরা। পরের দিন সকালে ঘূর্ণি, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি হয়ে সোজা মায়াপুর। মায়াপুর ঘুরে সেদিনই নদী পেরিয়ে নবদ্বীপ ঘোরা যাবে। আর যারা শুধুই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে আপন করে নিতে চান, তাঁরা চলে যাবেন বেথুয়াডহরি। সেখান থেকে ঘুরে আসা যাবে পলাশীও। দু’দিনের ভ্রমণের পরিকল্পনা।
কিন্তু সেই পরিকল্পনা বা সার্কিট গড়ে তোলার কাজ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, নানা জটিলতায় পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে জুড়ে সার্কিট ট্যুরিজমের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এটা ঠিক, নদীয়া জুড়ে এত স্থান রয়েছে, পর্যটন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজালে পর্যটকের অভাব হতো না।