বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর থেকেই কাটমানি ফেরতের দাবিতে বীরভূম জেলার বিভিন্ন গ্রামে বিক্ষোভ শুরু হয় শাসকদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সেই কাটমানি ইস্যুতেই রবিবার উত্তাল হয়ে উঠল নানুরের বলাইপুর গ্রাম। কীর্ণাহার-২ পঞ্চায়েতের বলাইপুর গ্রামে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন চলছিল গ্রামে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি, ১০০দিনের কাজের প্রকল্প সহ পঞ্চায়েতে বিভিন্ন দুর্নীতি করে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসীরা। সব মিলিয়ে প্রায় ৪১লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার দাবি করা হয়। গ্রামবাসীদের দাবি, পঞ্চায়েত সদস্য রবিবার তাঁদের বাড়িতে ডেকে পাঠান এবং ১০লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্থানীয়রা সকলে তাঁর বাড়ি গিয়ে পৌঁছলে ওই পঞ্চায়েত সদস্য গ্রামের বাসিন্দা বুদ্ধদেব দাসের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। সেই খবর জানাজানি হতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামের মহিলারা। তাঁরা সকলে লাঠি-ঝাঁটা হাতে নিয়ে পঞ্চায়েত সদস্যর বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে কোনওভাবে পালিয়ে যান পঞ্চায়েত সদস্য। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিস। গ্রামবাসীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিস অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা করলে মহিলারা ঝাঁটা হাতে পুলিসকে লক্ষ্য করে তেড়ে যান। পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠলে সেই মুহূর্তে পুলিস পিছু হটতে বাধ্য হয়। পঞ্চায়েত সদস্যর বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ চলাকালীন তাঁর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, গ্রামবাসীরা তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছেন। যদিও গ্রামবাসীরা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পরে আবার গ্রামে পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে বলাইপুর গ্রাম স্বাভাবিক হলেও সেখানে পুলিস রয়েছে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা বাবুরাম দাস, গদাই হাজরা, শ্যামলী দাস, জয়দেব হাজরা বলেন, গ্রামে কোনওরকম উন্নয়ন হয়নি। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ও জব ওয়ার্কাররা সব প্রকল্প থেকেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন ও কাটমানি নিয়েছেন। সেই টাকা ফেরতের দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছিলাম। রবিবার সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমাদের মারধর করা হয়। আমরা চাই, অবিলম্বে আমাদের সেই টাকা ফেরত দেওয়া হোক।
অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য মিঠুন চট্টোপাধ্যায় পালিয়ে যাওয়ার তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোন সুইচ অফ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। তৃণমূলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, বিজেপি গ্রামবাসীদের উস্কানি দিয়ে এধরনের কাজ করাচ্ছে। পঞ্চায়েত সংক্রান্ত কোনও দুর্নীতি থাকলে গ্রামবাসীরা তার জন্য বিডিওর কাছে অভিযোগ করতে পারেন। প্রমাণ হলে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু, তাঁরা বিজেপির প্ররোচনায় পড়ে বিক্ষোভ, হাঙ্গামা করছেন।
নানুর ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছে। তাঁদের ন্যায্য টাকা আদায়ের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এদিনের বলাইপুরের ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। তৃণমূলের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।