বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
জেলা পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এদিনের অনুষ্ঠানে শুভেন্দুবাবু ছাড়াও জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস, জেলাশাসক পার্থ ঘোষ, জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান, বিধায়ক অমিয়কান্তি ভট্টাচার্য ছাড়াও প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এদিনের অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা পরীক্ষার জেলার সফল ২০জন ছাত্রছাত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে শুভেন্দুবাবু বলেন, আপনারা জানেন গত সাত বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় শতাংশের বিচারে রাজ্যে প্রথম স্থান লাভ করছে। আমি মনে করি, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জন্মের দ্বিশতবর্ষের প্রাকাল্লে জেলার কাছে এটা বড় প্রাপ্তি। জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির শিক্ষক শিক্ষিকা, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী ও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সুন্দর পরিবেশ গড়ে উঠেছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমাদের জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সুন্দর পরিকাঠামো রাজ্যের যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে দিতে পারে।
তিনি বলেন, আমি কর্মসূত্রে এই রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে দেখেছি, এই জেলার মতো শিক্ষার পরিকাঠামো খুব কম জায়গায় রয়েছে। এই জেলার বহু দানশীল ব্যক্তি তাঁদের মূল্যবান সম্পদ শিক্ষার উন্নতি ও প্রগতির স্বার্থে দিয়ে গিয়েছেন। এটা আমাদের কাছে আনন্দের। আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের বলব, নিশ্চিতভাবেই পুঁথিগত বিদ্যা বা সিলেবাস ভিত্তিক শিক্ষার মধ্যে পঠন পাঠন করে তোমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি স্বামী বিবেকানন্দ শিক্ষা নিয়ে ভাবনার কথাও মনে রাখতে হবে। তিনি বলেছেন, আমি সেই শিক্ষায় সন্তুষ্ট নই, যে শিক্ষা পুঁথিগত শিক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। আমি সেই শিক্ষা চাই, যে শিক্ষায় মানুষের চরিত্র গঠন হয়, মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি বিকশিত হয়, মনের বল বিকশিত হয় ও মানুষ স্বাবলম্বী হতে পারে। আমাদের আচার্যদেরও শুধুমাত্র সিলেবাসের বা পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আগামীদিনের দিশারীদের নতুন করে তৈরি করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার শিক্ষার অগ্রগতিতে সবসময় ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে কাজ করে। আমাদের গ্রামের মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, দরিদ্র, কৃষক, তফসিলি জাতি ও উপজাতি, সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলেমেয়েদের মধ্যে লুক্কায়িত প্রতিভা আছে। সেই প্রতিভা বিকশিত করার সুযোগ সব সময় তারা পায় না। আমাদের মতো কৃষিভিত্তিক দেশের বেশিরভাগ মানুষ এরজন্য অর্থ খরচ করতে পারেন না। সেই কারণে ভীমরাও আম্বেদকর সহ সংবিধান প্রণেতারা শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার করে গিয়েছেন। বাস্তবে স্বাধীনতার এত বছর পরেও শিক্ষাকে সর্বজনীন করার ক্ষেত্রে উদ্যোগের অনেক অভাব রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে প্রাথমিক স্তরে ছাত্রছাত্রীদের পোশাক, জুতো, মিডডে মিলের থালা সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নত করার কাজ করছে। এছাড়া শিক্ষাশ্রী, মাইনোরিটি স্কলারশিপ, সবুজসাথীর সাইকেল ও কন্যাশ্রী দেওয়া হচ্ছে।
শুভেন্দুবাবু বলেন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের সরকার গত আট বছরে ৬০টি নতুন কলেজ, ২০০টি ভোকেশনাল আইটিআই কলেজ, ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার পাশাপাশি অনুমোদন দিয়েছে। নানাভাবে প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা থেকে চিকিৎসা শিক্ষায় নজর দিয়ে বহুমুখী ব্যবস্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। যাতে ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞানের বিকাশের পাশাপাশি তাঁরা স্বাবলম্বী হয়ে সমাজের দায়িত্ব নিতে পারে। স্বাধীনতার এতিদিন পরে এই জেলার মহিষাদলের কাপাসএড়িয়ায় মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া তমলুকে ১০০ আসনের মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন পেয়েছে। যা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের।