বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
জেলা তৃণমূলের আহ্বায়ক তথা ভগবানপুরের বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি বলেন, আগামী ২৮তারিখ পূর্ব মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী দু’টি জনসভা করবেন। সভা সফল করার জন্য সর্বস্তরে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সভা নিয়ে কর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়েছে। দু’টি সভাতেই রেকর্ড ভিড় হবে। গরম কোনও বাধা হবে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী গড় নিয়ে রাজ্য তৃণমূল চিরকালই অনেকটা নিশ্চিন্ত। নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে দিন যত এগিয়েছে, শাসক দল এই জেলায় আরও শক্তিশালী হয়েছে। অধিকারী পরিবারের সাংগঠনিক দক্ষতার উপর ভরসা করে এই জেলার কোনও নির্বাচনী প্রচারে রাজ্য তৃণমূলের বড় নেতাদের মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। সেই তুলনায় অন্যান্য জেলায় রাজ্য নেতাদের আনাগোনা অনেক বেশি থাকে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নিয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্ত।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোট থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত কোনও ভোটেই শাসক দলের ভোট ব্যাঙ্ক ৫০ শতাংশের নীচে নামেনি। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে জেলায় শাসক দল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে ৫২.৩২শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে এককভাবে ৫৫.১৪ শতাংশ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ৫০.২৭ শতাংশ ভোট পায়। গত পঞ্চায়েত ভোটেও বিরোধীরা কার্যত ধরাশায়ী হয়েছে। জেলার কোনও জেলা পরিষদ আসনে বিরোধীরা জিততে পারেনি। এছাড়া প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর শাসক দলের শক্ত ঘাঁটি। তাই পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি লোকসভা আসন নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতাদের তেমন চিন্তা থাকে না। তা সত্ত্বেও ভোটের সময় দলনেত্রীর রাজনৈতিক বক্তব্য শোনার জন্য জেলার নেতা-কর্মীরা মুখিয়ে থাকেন। মূলত সেই কারণে জেলা নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা করাতে আগ্রহী ছিল।
আগামী রবিবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরে দু’টি জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দুপুর দেড়টা নাগাদ হেঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস লাগোয়া মাঠে মুখ্যমন্ত্রী প্রথম জনসভা করবেন। এরপর দুপুর আড়াইটা নাগাদ তমলুকের কুমোরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া মাঠে দ্বিতীয় জনসভায় যোগ দেবেন। দু’টি জনসভাতেই কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ হাজার দলীয় কর্মী-সমর্থককে হাজির করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই কারণে প্রয়োজনীয় বাস, ট্রেকার ও অন্যান্য গাড়িতে কর্মীদের সভায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে, ভরদুপুরে সভা হওয়ায় গরমে কর্মীরা কীভাবে দীর্ঘ সময় মাঠে বসবেন, তা নিয়েই নেতা-নেত্রীদের কপালে কিছুটা হলেও চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। সেই কারণে, মাথার উপরে যত বেশি সম্ভব ছাউনি দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা নেতৃত্ব।
এছাড়া সভায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। জলের পাউচের পাশাপাশি ৩০০ ও ৫০০ এমএলের প্রচুর জলের বোতল রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রত্যেক ব্লককে কমপক্ষে সাত থেকে ১০হাজার কর্মী-সমর্থক সভায় আনার টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সভায় গরমে কর্মী-সমর্থকদের অসুস্থ হওয়ার ঘটনার কথা মাথায় রেখে মেডিক্যাল টিম তৈরি রাখারও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য স্থানীয় নেতাদের তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে কেউ অসুস্থ হলে যাতে দ্রুত চিকিৎসা করা যায়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।