আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে রায়গঞ্জে সামান্য অর্থের বিনিময়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে আসছেন এই চিকিৎসক। এখন চিকিৎসা করানো দুর্মুল্য হয়ে ওঠায় অনেকেই পয়সার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। সেখানে জয়ন্তবাবু, সুদেববাবুর মতো চিকিৎসকরা এখনও রোগীর আর্থ সামাজিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন। শহরের বাসিন্দা জয়ন্ত ডাক্তারও প্রায় বিনে পয়সায় রোগী দেখে চলেছেন।
সুদেববাবু বলেন, রোগী ও চিকিৎসকের সর্ম্পকটাই আসল। সেটা যেন সব সময় ভালো থাকে। আবার কম টাকায় রোগী দেখা মানে আমি রোগীকে দান করছি বা দয়া করছি না। বিবেক ও মূল্যবোধ থেকে এটা করা। আমি মনে করি চিকিৎসকের কাজ শুধুমাত্র রোগীকে সারিয়ে তোলাই নয়। রোগ হওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক যেসমস্ত কারণ থাকে সেটা খুঁজে বের করা ও তা নিরসন করাও চিকিৎসকের দায়িত্ব।
রায়গঞ্জের মিলনপাড়ায় সুদেব সাহার বাড়ি। আশির দশকের শেষে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করে একটি সংগঠনের হয়ে উত্তরবঙ্গ ও সুন্দরবন এলাকায় চিকিৎসার কাজে জড়িয়ে পড়েন। এরপর ১৯৯০ সালে রায়গঞ্জে বসবাস ও সেই সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করেন। সেসময়ে তিনি মাত্র ১০ টাকায় রোগী দেখতেন। এই সামান্য ভিজিটে তিনি ১২ বছর চিকিৎসা করেছেন। এরপর ধাপে ধাপে ১৫-২০-৩০-৫০ টাকা ভিজিট হয়েছে। গত দুই বছর ধরে তিনি ৭০ টাকা ভিজিট নেন। এই সামান্য টাকা ভিজিটে রোগী দেখার কারণে জীবনে বেশ কয়েকবার অর্থ সংকটের সম্মুখীনও হতে হয়েছে। ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি করেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। তবু নিজে রোগীদের কথা ভেবে ভিজিট বাড়াতে চাননি।
প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ও বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের কয়েক জায়গায় তিনি রোগী দেখেন। দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা তাঁর কাছে আসেন। সুচিকিৎসক হিসাবে তাঁর নামডাক আছে।
অনেক চিকিৎসকই বিভিন্ন ভাবে রোগী ও সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেন। সুদেববাবু রোগী দেখার পাশাপাশি পরীক্ষামূলক ভাবে বাস্তুতান্ত্রিক জৈব উপায়ে চাষের সঙ্গেও যুক্ত। জমিকে বাঁচিয়ে, মাটির তলার জলকে বাঁচিয়ে বাস্তুতন্ত্রকে ঠিক রেখে চাষ করা যায় সেই কাজের সঙ্গেও তিনি যুক্ত। তাঁর দাবি, বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। তার অনেকগুলি খাদ্য ও পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত। তাই শুধুমাত্র রোগীর চিকিৎসা করলেই হবে না। এই সব দিকগুলি পরিবর্তনের জন্যও কাজ করতে হবে। তাই এসবে জড়ানো।