বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এবছর মালদহের ২৬৭টি স্কুলের ৪৮ হাজার ৬২০ জন ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২৮ হাজার ৩৭৬ জনই ছিল ছাত্রী। এমনকী গত বছরের তুলনায় এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রীর সংখ্যাও বেশি ছিল। ১২৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছিল। তার মধ্যে মূল ১৯টি কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল।
মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে মালদহে সফল হয়েছেন ৮২.৪১ শতাংশ পরীক্ষার্থী। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিযুক্ত জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষা সঞ্চালনার আহ্বায়ক সঞ্জয় বল বলেন, গত বছরের থেকে সাফল্যের হার প্রায় দুই শতাংশ বেড়েছে। ছাত্রদের সাফল্যের হার ৯০.২২ শতাংশ। ছাত্রীদের সাফল্যের হার ৭৬.৬৫ শতাংশ।
এদিন সকাল ১০টা থেকে মালদহের সদর মহকুমার বার্লো গার্লস হাই স্কুল এবং চাঁচল মহকুমার সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিট ও সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়। সঞ্জয়বাবু বলেন, নির্বিঘ্নেই সব মিটে গিয়েছে। পরীক্ষার্থীরা প্রায় সকলেই নিজ নিজ স্কুল থেকে এদিনই মার্কশিট ও সার্টিফিকেট পেয়ে গিয়েছেন।
সম্ভাব্য দশম সায়নিকার বাড়ি ইংলিশবাজারের গৌড় রোড সংলগ্ন তালতলা এলাকায়। বাংলা এবং ইংরেজিতে সে ৯৯ পেয়েছে। গণিত, জীবন বিজ্ঞান এবং ভূগোলে ১০০ করে পেয়েছে সে। ভৌত বিজ্ঞানে তার প্রাপ্ত নম্বর ৯০ এবং ইতিহাসে সায়নিকা পেয়েছে ৯৩। এই কৃতীর বাবা অভিজিৎ দাস পেশায় পুলিস কর্মী। মা সোনালি দাস স্কুল শিক্ষিকা। মধ্যবিত্ত পরিবারের কন্যা একা কুম্ভ হয়ে রাজ্য মেধা তালিকায় মালদহের মুখ রক্ষা করায় আপ্লুত পরিবারের সদস্য থেকে শিক্ষিকারাও। খুশির হাওয়া জেলা পুলিস মহলেও। এদিন সায়নিকাকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে সম্বর্ধনা দেন পুলিস সুপার অজয় প্রসাদ।
সায়নিকার সাফল্যের খবর জানাজানি হতেই তার বাড়িতে ভিড় জমতে শুরু করে আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের। মেধাবিনী এই কন্যাকে মিষ্টি খাওয়াতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সাফল্যের এই কৃতিত্ব তার মা বাবা এবং স্কুলকেই দিয়েছে সায়নিকা। তার বক্তব্য, আমি নির্দিষ্ট নিয়মে পড়াশুনা করিনি। তবে পড়াশুনা করতে ভালোলাগে বলে যখন যে বিষয় পড়তে ইচ্ছা হতো তাই পড়েছি। মা বাবা সব সময় পাশে থেকেছে, উৎসাহ দিয়েছে। স্কুলের শিক্ষিকারা যেভাবে পড়িয়েছেন তা অতুলনীয়। আমি ওঁদের সবার প্রতিই কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তার।
জেলার অন্যতম খ্যাতনামা স্কুল রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির থেকে এর আগে অনেকবারই রাজ্য মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে পড়ুয়ারা। কিন্তু এবছর মেধা তালিকায় নাম না থাকায় কিছুটা হতাশ পরীক্ষার্থীরা। তাদের অনেকের দাবি, ইতিহাসে প্রত্যাশা অনুযায়ী নম্বর আসেনি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বামী সুরাত্মানন্দ বলেন, মোটের উপর সন্তোষজনক ফল করেছে আমাদের ছাত্ররা। ১০৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সকলেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। স্টার পেয়েছে ৬০ জনের বেশি পড়ুয়া। মাত্র দুই নম্বর কম পাওয়ায় রাজ্য মেধা তালিকায় প্রথম দশে স্থান পায়নি বিদ্যালয়ের ছাত্র প্রিয়ব্রত সাহা। সে পেয়েছে ৬৭৯।
জেলা ভিত্তিক মেধা তালিকায় মালদহের অন্যান্য কৃতী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে বার্লো স্কুলের সৃজা দাসবক্সি (৬৭৯), গাজোল হাজি নাকু স্কুলের রূপক রায়(৬৭৭), মালদহ গার্লস স্কুলের উদিতা মিত্র(৬৭৬), ললিতমোহন শ্যামমোহিনী স্কুলের অভিষেক চক্রবর্তী(৬৭৫), চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনের ইফতেসাম হাসনাত(৬৭৪), বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের রুদ্র চক্রবর্তী(৬৭৪), চাঁচলের রাণী দ্রাক্ষায়ণী স্কুলের বিপাশা সাহা(৬৭৩), গাজোল হাজি নাকু স্কুলের অম্বরীশ সরকার(৬৭৩), বার্লো স্কুলের কারিয়া হোসেন(৬৭৩), ওই স্কুলেরই প্রেরণা দাস(৬৭৩) এবং বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের সৌভিক রাম (৬৭৩)।