বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
মালদহের কৃষিরত্ন পুরস্কারপ্রাপক আম উৎপাদক লোকনাথ কুমার বলেন, গত কয়েকদিনের তাপমাত্রা ব্যাপক কমে যাওয়া ও বৃষ্টির কারণে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আসলে এই সময় মুকুল ফেটে ফুল বের হওয়ার সবচেয়ে ভালো সময়। সেই মুহূর্তেই মেঘলা আবহাওয়া ফুল ফোটার গতিকে কমিয়ে দিচ্ছে। এতে পরে সমস্যা হতে পারে। স্যাঁতসেতে আবহাওয়ার কারণে ছত্রাক ও রোগপোকার সংক্রমণ বেড় যায়। কিছুকিছু বাগানে ছত্রাক সংক্রমণ হতে শুরু করেছে। অনেকেই ছত্রাকনাশক ওষুধ দিতে শুরু করেছেন। এবার খুব ভালো ফলনের সম্ভাবনা ছিল। এই আবহাওয়া ফলনের কতটা কী করবে বুঝতে পারছি না। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর রাহুল চক্রবর্তী বলেন, এই আবহাওয়া ব্যতিক্রমী। দু’একদিনের মধ্যে রোদ দেখা যাবে। তাপমাত্রাও বাড়বে। তাছাড়া ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ফুল ফোটে। ফলে বড় কোনও ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে ছত্রাক ও রোগপোকার আক্রমণ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এনিয়ে গোটা মরশুম ধরেই নজরদারির প্রয়োজন আছে।
গত কয়েকদিন ধরেই মালদহে আচমকা তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। শুক্র ও শনিবার মালদহে এক দু’পশলা হালকা বৃষ্টি যেমন হয়েছে তেমনি দিনভর আকাশ মেঘে ঢেকে ছিল। শনিবার চাঁচল মহকুমার সামসির ভগবানপুর সহ এক দু’জায়গায় শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক ধাক্কায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে এসেছে। যদিও গড় তাপমাত্রা এখনও প্রায় ১৬ ডিগ্রি সেলসিলাস আছে। কিন্তু এই আবহাওয়া আম চাষিদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। উদ্যানপালন দপ্তর ও কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও দু’দিন এধরনের আবহাওয়া থাকতে পারে।
আম চাষিরা জনান, এবছর কুয়াশার প্রভাব তেমন গাঢ় না হওয়া এবং তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে ব্যাপক মুকুল এসেছিল। সেই সঙ্গে অনেক আগে থেকেই ফুল ফুটতে শুরু করেছিল। ফেব্রুয়ারির এই সময় তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকে সেই ফুল ফোটার গতি বৃদ্ধির আশা উৎপাদক মহলে ছিল। কিন্তু আচমকা তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ফুল ফোটার গতি থমকে গিয়েছে। এরজেরেই আমের ফলনে ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আম চাষিদের মতে, চূড়ান্ত মুহূর্তে একবার ফুল ফোটা থমকে গেলে তা স্বাভাবিক হতে সময় নেয়। পাশাপাশি, এই আবহাওয়া ছত্রাক তো বটেই রোগপোকার সংক্রমণকে বাড়িয়ে দিতে পারে। একবার সংক্রমণ হয়ে গেলে পরে আবহাওয়া ভালো হলেও সেই সংক্রমণ রোখা কঠিন হয়ে যায়। সম্প্রতি আম ভিনদেশে রপ্তানি শুরু হওয়ায় কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় আম চাষিদের মাথাব্যথা বাড়ছে।
এদিকে শনিবার জেলার বিভিন্ন অংশে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হয়েছে। দিনভর রোদও ওঠেনি। আকাশ মেঘলা ছিল। চাঁচলের সামসি ভগবানপুরে এদিন সকালে কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় গুলতির আকারের শিল প্রায় এক মিনিট ধরে পড়েছিল। আবহাওয়ার জেরে শনিবার তাপামাত্রা অনেকটাই নেমে যায়। সন্ধ্যার মুখে কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া শুরু হয়। রাস্তায় সেভাবে লোকজনও বেরয়নি। মূলত নিম্নচাপের জন্যে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতি আরও দিন দু’য়েক চলবে বলেই কৃষিদপ্তর ও উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।