বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
রবিবার ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকে ফলাফল যে রাজাপাকসের পক্ষে যাচ্ছে, তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। তিনি ৫.২ শতাংশ ব্যবধানে তিনি শাসকদলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসাকে পরাজিত করেন। প্রেমাদাসা শ্রীলঙ্কার তামিল অধ্যুষিত অঞ্চলে ভালো ফল করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলী এলাকাগুলিতে খারাপ ফল করেন। উল্টে সিংহলী এলাকায় ব্যাপক জয় পেয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পদ প্রশস্ত করেন রাজাপাকসে। ৭০ বছর বয়সি রাজাপাকসে পেয়েছেন ৪৯.৬ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছেন ৪৪.৪ শতাংশ ভোট। রাজাপাকসের এক নির্বাচনী মুখপাত্র বলেন, ‘এই জয়ে আমরা খুশি। গোতাবায়া পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন।’
গোতাবায়া রাজাপাকসে হলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহিন্দা রাজাপাকসের ভাই। গোতাবায়া শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিব ছিলেন। দীর্ঘদিন সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। জাফনায় এলটিটিই-র বিরুদ্ধে অভিযান চলেছিল তাঁর হাত ধরেই। এই অভিজ্ঞতাই তাঁর নির্বাচনে কাজ দিয়েছে। শ্রীলঙ্কায় তামিল ও মুসলিমরা তাঁর উপর অসন্তুষ্ট হলেও সিংহলীদের মধ্যে তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হলেও তাঁকে নিয়ে সামান্য অস্বস্তিতে ভারত। চীনা ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজাপাকসে পরিবার। প্রেসিডেন্ট থাকার সময় মহিন্দা রাজাপাকসে বরাবরাই বেজিংয়ের সঙ্গে সেতুবন্ধনের কাজ করে গিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রাজাপাকসে চীনের প্রতি দুর্বল। এর নজিরও রয়েছে। তিনি যখন শ্রীলঙ্কার ক্ষমতায় ছিলেন, তখন ভারতকে কোনও খবর না দিয়েই চীনের দুই সাবমেরিনকে শ্রীলঙ্কায় রাখা হয়েছিল। এমনকী শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতা বন্দরকে কাজে লাগানোর জন্য কলম্বোর ঋণ মেটাতেও সাহায্য করেছিল বেজিং। হাম্বানতোতায় চীনের যুদ্ধজাহাজগুলিতে জ্বালানি ভরার কাজ হয়। সেখান থেকেই ভারত মহাসাগরে চীনের সাবমেরিনগুলি যাতায়াত করে। ফলে ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন থেকেই যায়।
তবে রাজাপাকসের জয়ের জন্য তাঁর সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন শ্রীলঙ্কাবাসী। কেননা এবছরের ইস্টারের সকালে কলম্বোয় গির্জা ও পাঁচতারা হোটেলে ভয়াবহ জঙ্গিহানা হয়। তাতে ২৬৯ জনের মৃত্যু হয়। এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। ভোটের প্রচারে বেরিয়ে মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন রাজাপাকসে। এসব কারণেই তাঁর জয়ের পথ প্রশস্ত হয় বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ফলাফলের পর মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রেমাদাসা। তিনি বলেন, মানুষের রায় আমি মেনে নিয়েছি। তাঁদেরকে অনেক অভিনন্দন। এদিকে দেশে শান্তি বজায় রাখা ও সমর্থকদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাজাপাকসে। এদিকে রাজাপাকসে নতুন প্রেসিডেন্ট হওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমসিঙ্ঘে। তাঁর জায়গায় দাদা মহিন্দা রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী করতে পারেন গোতাবায়া।