বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, হোলির দিন সিন্ধু প্রদেশের ঘোটকি জেলার বাসিন্দা দুই বোন রবীনা (১৩) এবং রীনাকে (১৫) তাদের বাড়ি থেকেই অপহরণ করা হয়। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দু’টি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ায়। একটিতে দেখা যায়, ওই দুই নাবালিকার ‘নিকাহ’ করাচ্ছেন এক মৌলবী। অন্য আরেকটি ভিডিওতে নিজের ইচ্ছায় তারা ইসলাম ধর্মগ্রহণ করছে বলে জবানবন্দি দিতে দেখা গিয়েছে ওই দুই কিশোরীকে।
রবিবার ট্যুইট করে পাক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী জানান, অপহরণ করে ওই কিশোরীদের পাঞ্জাবের রহিম ইয়ার খানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র মিলেছে। সেই সূত্রের উপর ভিত্তি করে সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে তদন্ত চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পাঞ্জাব এবং সিন্ধু প্রদেশের সরকারকে যৌথ উদ্যোগে এই ধরনের ঘটনা রুখতে কড়া পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দিয়েছেন ইমরান বলে জানান ফাওয়াদ। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের জাতীয় পতাকার সাদা রং হল দেশের সংখ্যালঘুরা। আর এই পতাকার প্রত্যেকটা রং আমাদের কাছে প্রিয়। এই পতাকাকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য।’
ঘটনায় দোষীদের চরমতম শাস্তি এবং দুই কিশোরীকে অবিলম্বে উদ্ধার করার দাবিতে ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ভোটের প্রচারে এসে পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলি যেন পাক প্রধানমন্ত্রী ভুলে না যান। পাকিস্তান হিন্দু সেবা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রেসিডেন্ট সুরেশ ধঞ্জা দাবি করেন, ঘোটকি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে হিন্দু সংগঠনগুলি একাধিক অবস্থান-বিক্ষোভ করার পরই পুলিস এফআইআর দায়ের করতে তৎপর হয়। তিনি বলেন, ‘হিন্দু মেয়েদের বন্দুকের ভয় দেখিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া, ধর্মপরিবর্তন করানো এবং বয়সের চাইতে অনেক বড় পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার ঘটনা সিন্ধু প্রদেশে হামেশাই ঘটে। হিন্দু সংগঠনগুলির নেতৃত্বের অভিযোগ, অভিযুক্তরা স্থানীয় কোহবার এবং মালিক সম্প্রদায়ের। পুলিসে দায়ের করা অভিযোগে দুই কিশোরীর দাদা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের সঙ্গে অনেকদিন আগে তাঁর বাবার বচসা হয়েছিল। হোলির দিন অভিযুক্তরা জোর করে বাড়িতে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দুই বোনকে তুলে নিয়ে যায়।
গতবছর ভোটের প্রচারে গিয়ে ইমরান তাঁর দলীয় অ্যাজেন্ডায় পাকিস্তানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের সার্বিক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছিলেন। শুধু তাই নয়, হিন্দু মেয়েদের জোর করে ধর্মপরিবর্তন ও বিয়ে করানোর মত ঘটনা বন্ধ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের শাসক দল পিটিআইয়ের সাংসদ তথা হিন্দু কাউন্সিলের প্রধান রমেশ কুমার ভাঙ্কওয়ানি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি জানান, ২০১৬ সালে জোর করে ধর্মপরিবর্তনের ঘটনা রুখতে আনা একটি বিল সিন্ধু প্রদেশের বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়েছিল। কিন্তু, পরে কিছু চরমপন্থী নেতাদের বাধায় তা আটকে যায়। অবিলম্বে বিলটি ফিরিয়ে এনে তা পাশ করানো উচিত বলে জানান রমেশ।
ভারত দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেখানে বসবাসকারী সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ করে আসছে। এই ঘটনায় ভারতের সেই অভিযোগ আরও জোরালো হল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক মহল। গতবছর বলিউড অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহের একটি মন্তব্যকে হাতিয়ার করে নয়াদিল্লির উদ্দেশে তোপ দেগেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। গোরক্ষার নামে হিংসার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন নাসির। যা নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ভারত সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করে, নাসিরুদ্দিনের বক্তব্য সেটাই দেখিয়েছে।