বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ব্রিটিশ ভারতে ১৯৩৭ সালে মাদ্রাজ রেসিডেন্সিতে হিন্দি ভাষাকে স্কুলে আবশ্যক সাবজেক্ট হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। প্রতিবাদে ই ভি রামস্বামীর (পেরিয়ার) নেতৃত্বে প্রবল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গোটা মাদ্রাজ রেসিডেন্সিতে। তিনবছর ধরে ওই বিক্ষোভ, আত্মহত্যার চেষ্টা, ভাঙচুর,গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস পরিচালিত মাদ্রাজ রেসিডেন্সির সরকারকে পদত্যাগ করতে হয় ১৯৩৯ সালে। ১৯৪০ সালে ওই সার্কুলার প্রত্যাহার করা হয়। ভারতীয় সংবিধানে বলা হয়, দেশে অফিসিয়াল ভাষা হবে হিন্দি এবং সহযোগী ভাষা ইংরাজি। তবে এটা হবে ১৫ বছরের জন্য। তারপর থেকে দেশের অফিসিয়াল ভাষা হবে হিন্দি। ১৯৬৩ সাল থেকে সেরকমই প্রস্তুতি চলে। দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাজাঘাম (ডিএমকে) দলের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু হয়। বিরোধের তীব্রতার আঁচ আন্দাজ করে ১৯৬৩ সালেই প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ অ্যাক্ট ১৯৬৩ লাগু করেন এবং জানিয়ে দেন হিন্দি ও ইংরাজি দুই ভাষাই অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে থাকবে ১৯৬৫ সালের পরও। কিন্তু ১৯৬৪ সালে নেহরুর মৃত্যুর পর যতই ১৯৬৫ সাল এগিয়ে আসে ততই প্রচার শুরু হয় পুনরায় হিন্দিকেই একমাত্র অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে চালুর জন্য। আর সেই প্রচারের জেরে দক্ষিণ ভারতজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়।
তামিলনাড়ুর ওই ভাষা আন্দোলনের তীব্রতা এতই ছিল যে রীতিমতো ভাষাদাঙ্গাও হয়। সরকারিভাবে ৭০ জনের মৃত্যু.হলেও বলা হয় বেসরকারি মৃত্যুর সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী এরপরই ঘোষণা করেন যতদিন পর্যন্ত অহিন্দি রাজ্যগুলি চাইবে ততদিন পর্যন্ত ইংরাজিও থাকবে অফিসিয়াল ভাষা। ১৯৬৭ সালে ইন্দিরা গান্ধী আইন সংশোধন করে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন হিন্দির পাশাপাশি ইংরাজি অফিসিয়াল ভাষা থাকবে অনির্দিষ্টকালের জন্য। কিন্তু এত প্রয়াস সত্ত্বেও কংগ্রেস আর জনমত সঙ্গে পায়নি। ১৯৬৭ সালে বিধানসভা ভোটে স্রেফ হিন্দি বিরোধী ভাষা আন্দোলনে ভর করেই তামিলনাড়ুতে ডিএমকে কংগ্রেসকে পরাজিত করে সরকারে ক্ষমতায় আসীন হয়। এবং তারপর থেকে আজ পর্যন্ত কংগ্রেস অথবা কোনও উত্তর ভারতের পার্টি তামিলনাড়ুতে আর সরকারে আসতে পারেনি। সুতরাং এই ইতিহাস জানা সত্ত্বেও বিজেপি সভাপতি কেন এই হিন্দি ভাষার পক্ষে সওয়াল করলেন তা নিয়ে দক্ষিণ ভারতে প্রশ্ন উঠেছে।