বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
উদ্যান কর্তৃপক্ষের করা এই গবেষণায় প্রকাশ, গত ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত তিন প্রজাতির ৩৬টি বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে সেখানে। যার মধ্যে ২১টি বুনো হাতি। এছাড়া ন’টি বাঘ এবং ছ’টি চিতাবাঘের দেহও উদ্ধার হয়েছে। নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং প্রজনন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আক্রমণের জেরেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। অবাক করা বিষয় হল, এর মধ্যে ৬০ শতাংশ বা ১৩টি হাতিই বাঘের আক্রমণে মারা গিয়েছে। এবং হাতিগুলির অধিকাংশই কমবয়সি। বাকি আটটি হাতি প্রজনন ঋতু চলাকালীন নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মারা পড়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মরা হাতিদের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও বাঘের পেটে গিয়েছে। বাঘ-হাতি সংঘর্ষের এই অদ্ভুত দিকটি নিয়ে আরও তথ্য সহকারে গবেষণা করা উচিত বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা।
করবেট ন্যাশনাল পার্কের ডিরেক্টর, আইএফএস অফিসার সঞ্জীব চতুর্বেদীর মতে, বাঘেরা হাতি মেরে খাচ্ছে, এটা একটা অভূতপূর্ব ব্যাপার। তিনি আরও জানান, ‘এর একটা কারণ হতে পারে যে বাঘের পক্ষে হাতি শিকার তুলনামূলকভাবে সহজ। সম্বর বা চিতল হরিণ শিকারে বাঘের যতটা উদ্যম ও শক্তি লাগে, হাতির ক্ষেত্রে ততটা লাগে না। এবং হাতি মারা মানে তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ খাবারও।’ দেশের অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের তুলনায় অনেকটাই আলাদা করবেট। এবং সেটা প্রাণীদের বাস্তুতন্ত্র অনুযায়ী। ডিরেক্টরের দেওয়া তথ্য বলছে, ১,২০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এই জাতীয় উদ্যানে রয়েছে ২২৫টি বাঘ এবং ১,১০০-এর মতো বুনো হাতি। যেখানে রণথম্বোর, কান্হা এবং বান্ধবগড় মূলত বাঘেদের অবাধ বিচরণক্ষেত্র।
বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। এমনই মনে করছেন বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী অজয় দুবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘বাঘেরা হাতিদের মেরে খাচ্ছে, এটা একইসঙ্গে বিস্ময়কর এবং উদ্বেগের।’
এই পাঁচ বছরে মারা যাওয়া ন’টি বাঘের মধ্যে সাতটি ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ, নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ। এলাকা দখল বা প্রজনন সঙ্গী বাছা নিয়ে সংঘর্ষের জেরেই এই ঘটনা। বুনো শুয়োরের আক্রমণে বাকি দু’টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। কেস রিপোর্ট এবং বিভিন্ন নমুনা বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে এমনই অনুমান গবেষকদের। এই মৃত্যু মিছিল থামাতে বাঘেদের এলাকার গড় সীমা, তাদের চলাফেরার প্যাটার্ন এবং বর্তমান ব্যাঘ্র প্রকল্পে তাদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত বলেই গবেষণার রিপোর্টে প্রকাশ। চিতাবাঘগুলির মৃত্যুর মূল কারণও এই নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ ও বাঘের আক্রমণ। এই নিয়েও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ২৭ মে একটি বাঘিনীর মৃতদেহ উদ্ধারের পরেই বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা ও গবেষণা শুরু করে করবেট জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ।