বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সোমবার কলকাতায় সিপিএম না করলেও বাম শিবিরের অপর দল নকশালপন্থী সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর তিনটি গণসংগঠন যৌথভাবে যে বিক্ষোভ জমায়েত করে, তারও অন্যতম ইস্যু ছিল এনআরসি। দলের কৃষক, খেতমজুর ও আদিবাসী সংগঠন মিলিতভাবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার সমর্থককে এজন্য শহরে জড়ো করে। প্রথমে শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনে সমবেত হয়ে সেখান থেকে দুটি বড় মিছিল করে তারা আসে কলকাতা পুরসভার সদর দপ্তর সংলগ্ন রাস্তায়। এই মিছিলের ফলে স্বাভাবিকভাবে গোটা নিউ মার্কেট ও ধর্মতলার আশপাশের চত্বরে যানজটও হয় দীর্ঘক্ষণ। এদিনের সমাবেশে মুখ্য বক্তা ছিলেন লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ। তিনি ও গণসংগঠনগুলির নেতৃবৃন্দ রাজ্যে এনআরসি চালুর উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁরা বলেন, বাংলার গ্রামাঞ্চলে ইতিমধ্যে গেরুয়া শিবিরের লোকজন এনিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করতে শুরু করেছে। তাদের পাশে না দাঁড়ালে তারা এনআরসি’র মাধ্যমে গরিব ও সংখ্যালঘু মানুষকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিচ্ছে। এই অবস্থায় কেবলমাত্র মুখে আস্ফালন না করে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক। এনআরসি ছাড়াও তিন সংগঠন আদিবাসীদের বনাঞ্চলের জমির অধিকার আইন তুলে দেওয়া, রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি মেটানো, গ্রাম বাংলায় গরিব মানুষের কর্মসংস্থান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশছোঁয়া দাম ইত্যাদি বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় এদিন। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা দাবিপত্র নিয়ে সন্ধ্যায় নেতৃত্ব রাজ্যের পরিষদীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী তাপস রায়ের কাছে দরবারও করে।
এদিকে, এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রকে প্রধান দোষী হিসেবে চিহ্নিত করলেও প্রয়োজনীয় নথি সরবরাহ করার বিষয়ে শিথিলতা দেখানোর অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনকেও কাঠগড়ায় তুলেছে বামফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল ফরওয়ার্ড ব্লক। তাদের কাছে আসা হিসেব অনুযায়ী, বিভিন্ন কারণে অসমে বসবাসকারী বাংলার আদি বাসিন্দা লক্ষাধিক নাগরিকের কাছে রাজ্য প্রশাসন প্রয়োজনীয় নথি তুলে না দিতে পারায় তাদের বে-নাগরিক তালিকাভুক্ত হতে হয়েছে। এদিন দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীকে এব্যাপারে একটি চিঠি দিয়ে বলেন, কেন্দ্র ও অসমের বিজেপি সরকারের উদ্যোগে সে রাজ্যের ১৯ লক্ষ মানুষ নাগরিক পঞ্জীকরণের ফলে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বাংলার আদি বাসিন্দা রয়েছেন ১ লক্ষ ১১ হাজার ৫০০ জনের মতো। এই নাগরিকদের নাম আমাদের রাজ্য সরকারের কাছে অনুসন্ধানের জন্য পাঠিয়েছিল এনআরসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ছ’হাজার নাগরিকের নাম প্রশাসন পাঠাতে পেরেছে। তাই বাকি লক্ষাধিক নাগরিকের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুক নবান্ন।