বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
স্বাভাবিকভাবে এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় খুঁজতে এখন মরিয়া সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। সেই কারণে দীর্ঘদিন পর দলের বিধায়কদের নিয়ে আলিমুদ্দিনে বৈঠকে বসলেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। ভোটে এই বিপর্যয়ের কারণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি একেবারে তৃণমূল স্তরে গিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য যে নিদান দিয়েছে, সে ব্যাপারে বিধায়কদের অবহিত করার পাশাপাশি তাঁদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শোনাও ছিল সূর্যবাবুদের এই বৈঠকের অন্যতম উদ্দেশ্য। সেই জন্য বাম সমর্থকরা কেন এবার শিবির বদল করে ঢেলে বিজেপিকে সমর্থন দিল, তার কারণ সরাসরি বিধায়কদের মুখ থেকে শোনার জন্য আগ্রহী ছিলেন তাঁরা। আর সেখানেই তাঁরা খোলাখুলি রাজ্য সম্পাদককে জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল থেকে নিস্তার পেতে বাম সমর্থকরা গেরুয়া শিবিরকে বেছে নিয়েছেন নির্ভরতার প্রশ্নে।
বিধায়করা এদিন সকলেই একসুরে রাজ্য সম্পাদককে জানিয়ে দেন, তৃণমূলের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার আশায় শাসক দলের বিরোধী মানুষ বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস সহ গত কয়েক বছর ধরে নানা কারণে শাসক দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ জনগণ নিরাপত্তার প্রশ্নে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন থাকার সুবাদে নরেন্দ্র মোদির দলকে সিপিএম বা বামেদের থেকে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য বলে মনে করেছে। বামেদের প্রচার সত্ত্বেও তৃণমূলকে ‘শিক্ষা’ দিতে বিজেপির বিপদের কথা মাথায় রাখতে চায়নি তারা। পাশাপাশি বিজেপি ও তৃণমূল যেভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারকে তুঙ্গে নিয়ে গিয়েছে, তাতে মেরুকরণের ফ্যাক্টরও তীব্র হয়ে ওঠে। এই কারণে কেবল হিন্দু নয়, সংখ্যালঘু তথা মুসলিম ভোটের একাংশও শেষ পর্যন্ত খোয়াতে হয়েছে বামেদের। বিজেপির দিকে হিন্দু ভোটের ঢল নামছে বুঝতে পেরে দলের সংখ্যালঘু ভোটারদের একাংশ আবার শেষমেশ তৃণমূলকে সমর্থন দিয়েছে মোদিকে রুখবার আশায়।
সিপিএম বিধায়করা কেউ কেউ সূর্যবাবুদের কাছে ক্ষোভ ব্যক্ত করে বলেন, বারবার বলার পরও নিচুতলায় দলের জনসংযোগের চেহারা এখনও সেই পুরনো জায়গায় ফিরে আসেনি। দলের ঘোষিত কর্মসূচি ব্যতীত অন্য সময় দলের কর্মী বা স্থানীয় নেতারা মানুষের সমস্যা নিয়ে অনেক জায়গায় খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করেন না। এমনকী, আমডাঙা বা হলদিয়ার মতো নানা জায়গায় দলের ঘরছাড়া কর্মী-সমর্থকরা পাশে নেতৃত্বকে পায়নি। এসবের কারণে দল বা বামেদের উপর আস্থা রাখার সাহস দেখায়নি মানুষ। সূর্যবাবু অবশ্য বিধায়কদের নিজেদের এলাকায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে জনসংযোগের উপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন।