বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
গত বছর দলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসন জেতার টার্গেট বেঁধে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দেশের প্রায় সমস্ত বিরোধী আঞ্চলিক দলকে এক ছাতার তলায় এনে বিজেপি তথা এনডিএ’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। ব্রিগেডের মঞ্চে তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে কংগ্রেস সহ মোট ২১টি আঞ্চলিক দল হাজির হয়ে ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া’ গড়ার শপথ নিয়েছিল। একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিয়ে বিজেপি বিরোধী ভোট বিভাজন রোখার পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা। জাতীয় স্তরে তৃণমূল প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু রাজ্যে সংগঠনের মধ্যে কি তার কিছু ঘাটতি রয়ে গিয়েছিল? এখন সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজছে দল। শনিবার দলের বৈঠকেই তিনি এই নিয়ে সরব হয়েছেন। একদিকে যেমন বিজেপির হিন্দুত্বমুখী প্রচার মেকাবিলায় ব্যর্থতা, অন্যদিকে সংগঠনের অন্দরমহলেও ফাঁকফোকরের সন্ধান মিলেছে। অর্থাৎ শুধু রাজনৈতিক স্তরে নয়, সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও ত্রুটি-দুর্বলতা খুঁজে তা সংশোধনই হতে পারে আগামী ২০২২ সালের বিধানসভা বিজয়ের একমাত্র চাবিকাঠি। সুব্রতবাবুর মতে, সেই লক্ষ্যেই দলের প্রথম পর্যালোচনা বৈঠকে সাংগঠনিক পদে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন দলনেত্রী।
২০০৪ সালে লোকসভা ভোটে একটি মাত্র আসনে জিতেছিল তৃণমূল। রাজ্যের ৪২টি আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া সবাই পরাস্ত হয়েছিলেন। তখনই স্লোগান ওঠে, একচল্লিশের বিরুদ্ধে একের লড়াই। ২০০৯ সালে কংগ্রেস ও এসইউসি’র সঙ্গে জোট করে লড়াই করে প্রকৃত অর্থেই ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই স্লোগানকে বাস্তবায়িত করেছিলেন মমতা। সেদিনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সুব্রতবাবুর অভিমত, এই ফলাফল দেখে ভেঙে পড়ার কোনও কারণ নেই। এবার অবশ্য তিনি লোকসভা ভোটে লড়েননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের পোড়খাওয়া দলের কর্মীদের কাছে ‘ঠোঁটকাটা’ বলে পরিচিত এই রাজ্য সভাপতি মনে করেন, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিলে হতাশার কোনও জায়গা নেই। ১৯৭৭ সালে ইন্দিরা গান্ধী হেরে গিয়েছিলেন। জরুরি অবস্থা মেনে নেয়নি ভারতবাসী। তাই ভোটাররা ব্যালটে তার জবাব দিয়েছিলেন। পরে কংগ্রেস সেই ভুল স্বীকার করেছিল। মাত্র তিন বছরের মধ্যে ১৯৮০ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফেরেন ইন্দিরা। ইতিহাসের এই অধ্যায়ই এখন তৃণমূলের বিশল্যকরণী। সুব্রতবাবুর মতে, তিন বছরের ব্যবধানে যেভাবে মানুষের মনে আস্থা ফিরে পেয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, সেভাবেই বাংলাতেও মমতাদিকে লাল কার্পেট বিছিয়ে বিধানসভায় জেতাবে জনতা। তবে, তার একটা পূর্বশর্তও দিয়েছেন তিনি। রাজ্য সভাপতি মনে করেন, দলের মধ্যেও আত্মসমীক্ষা করতে হবে। ভুল ত্রুটি যা রয়েছে, তা কাটানোর ব্যাপারে আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেই মনে করেন তিনি। শনিবারের বৈঠক তারই ফলশ্রুতি, এমনই দাবি সুব্রতবাবুর।