বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
রাজ্যে ও কেন্দ্রে দুই শাসক দলকেই নিশানা করে লড়াইয়ে নেমেছিল বামফ্রন্ট। জাতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করলেও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বাংলায় দলের রাজনৈতিক অবস্থান নির্ধারণের স্বাধিকার দিয়েছিলেন। সেই সুবাদে কংগ্রেসও বামেদের মতোই দেশের শত্রু হিসেবে বিজেপিকে চিহ্নিত করে এবং বাংলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি তুলে লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ে নেমেছিল। দুই শিবিরের এই অভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থান অনিবার্য করে তুলেছিল বাম-কংগ্রেস জোটের সম্ভাবনা। দুই দলের পক্ষে দফায় দফায় আলোচনা হয়। এই আলোচনায় পূর্ব শর্ত ছিল, কেউ কারও জেতা আসনে প্রার্থী দেওয়ার দাবি জানাবে না। অর্থাৎ সিপিএমের দুই এবং কংগ্রেসের চার বিদায়ী সাংসদের আসনগুলি বাদ দিয়ে বাকি ৩৬ আসন নিয়ে বোঝাপড়া করে প্রার্থী দেওয়া হবে। কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষে থেকে রায়গঞ্জ আসন দাবি করায় আলোচনায় ভেস্তে যায়। পরে দিল্লিতে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও রাহুলের হস্তক্ষেপে তা মিটলেও শেষ রক্ষা হয়নি। কেননা, কংগ্রেসের সঙ্গে কথাবার্তা চলাকালীন বোলপুর আসনে তাদেরই প্রার্থীকে নিজেদের প্রতীক দিয়ে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেয় বামফ্রন্ট।
এই পটভূমিতে জোট ভেঙে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয় বাম ও কংগ্রেস। দু’টি কেন্দ্রে কংগ্রেস এবং দু’টি কেন্দ্রে বামেরাও প্রার্থী দেয়নি। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী নিজেও স্বীকার করেছেন, জোট হলে মানুষ বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে থাকা প্রার্থীকে বেছে নিতে পারত। তাঁর মতে, একদিকে ধর্মীয় বিভাজন, অন্যদিকে প্রবল তৃণমূল বিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছিল। সেটা আমরা যতটা ভেবেছিলাম, ফল প্রকাশের পর দেখছি সেই হাওয়া অনেক বেশি। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট প্রার্থী দেয়নি। তাই বিপুল অর্থ ও পুলিস-প্রশাসনের চাপ সত্ত্বেও বহরমপুর আসন নিজর দখলে রাখতে পেরেছেন অধীর। তিনিও মনে করেন, রাজ্যব্যাপী তৃণমূলের আচরণে অতিষ্ঠ মানুষ বিরোধী শিবিরে জায়গা খুঁজেছে, সেই পরিসরটা দেওয়া যায়নি, এটা দুর্ভাগ্যজনক। আব্দুল মান্নানের দাবি, বিজেপির ধর্মীয় বিভাজনের হাওয়া যেমন ছিল, তেমনই তৃণমূলের দুর্নীতি, ঔদ্ধত্য আর অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে মানুষ সজাগ হয়েই ভোট দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধীদের অনৈক্যের ফলে রাজ্যের শাসকের বিরোধিতা করতে গিয়ে কেন্দ্রের শাসক দলকে সমর্থন করেছেন ভোটাররা। আত্মসমালোচনার সুরে মান্নান ও অধীর একবাক্যে মেনে নিয়েছেন, ভোটারদের কাছে তৃণমূল বিরোধী বিশ্বাসযোগ্য বিকল্পের অভাবেই বিজেপির শক্তি বেড়েছে। কংগ্রেসের এই মুল্যায়নে সহমত সুজনেরও।