বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
চিরাচরিত প্রথা মেনে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মাহেশে জগন্নাথদেবের ৬২৩-তম স্নানযাত্রা পালিত হল। আর তা দেখার জন্য এদিন সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বর্ধমান, হাওড়া, নদীয়া, কলকাতা, দুই মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনা সহ ভিন রাজ্য থেকেও বহু মানুষ হাজির হন। প্রথা মেনে খোল-করতাল বাজিয়ে এদিন দুপুর ১ টা নাগাদ জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে মাহেশের জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন স্নানপিঁড়ি মাঠের নাটমন্দিরে নিয়ে আসা হয়। এরপর গঙ্গা থেকে তুলে রাখা ২৮ ঘড়া জল ও দেড় মণ দুধ দিয়ে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে স্নান করানো হয়।
সকাল থেকে প্রখর রোদকে উপেক্ষা করেই ছাতা হাতে নিয়ে দূর থেকে আসা মানুষ স্নানযাত্রা দেখার জন্য ভিড় জমান। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে স্নানপর্ব চলার পর জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। এদিন সকাল থেকেই মন্দির সংলগ্ন এলাকা সহ স্নানপিঁড়ির মাঠ ও নাটমন্দির এলাকায় প্রচুর পুলিস মোতায়েন করা হয়।
স্নানযাত্রা প্রসঙ্গে শ্রীশ্রীজগন্নাথজিউ ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান সেবায়েত সৌমেন অধিকারি বলেন, পুরীর পরেই মাহেশের রথ। এবার এই রথযাত্রা ৬২৩-তম বছরে পা দিয়েছে। চিরাচরিত প্রথা মেনেই ভাদ্র মাসের ষাঁড়াষাঁড়ি বানের সময় গঙ্গা থেকে ২৮টি পেতলের ঘড়ায় করে স্নানের জল তুলে রাখা হয়। সেই জল দিয়েই আগাগোড়া তিন বিগ্রহের স্নানপর্ব চলে। প্রতিবছরই স্নানপর্বের কাজ শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যার পর থেকে প্রথমে জগন্নাথ ও পরে একে একে বলরাম-সুভদ্রার জ্বর আসে। তারপরেই মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই নিয়ম মেনে বিগ্রহের গায়ে লেপ জড়িয়ে পাঁচন দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, বিগ্রহের জ্বর আসার পরেই প্রথা মেনে তাঁদের শুশ্রুষার জন্য ঘাটাল থেকে দু’একদিনের মধ্যেই কবিরাজ আনা হবে। সাত থেকে আট দিনের মধ্যে বিগ্রহরা সুস্থ হয়ে উঠবেন। তারপরই বিশেষ পুজোর মাধ্যমে ঠাকুরের নামকীর্তন শুরু হয়। রথযাত্রার একদিন আগে মন্দিরের দরজা ফের সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, এবার ২৭৯-তম বছরে পা দিল গুপ্তিপাড়ার স্নানযাত্রা উৎসব। ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য গঙ্গা পেরিয়ে নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, বর্ধমান ও হুগলির কয়েক হাজার মানুষ মন্দিরের সামনে হাজির হন। গুপ্তিপাড়া মন্দিরের মহন্ত গোবিন্দানন্দ পুরী বলেন, প্রথা মেনে এদিন দুপুর ১টায় মন্দির থেকে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে মন্দিরের সামনে নাটমন্দিরে বের করে আনা হয়। এরপর দুধমিশ্রিত ১০৮ কলসি গঙ্গাজলে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তিন বিগ্রহকে স্নান করানো হয়। স্নানপর্ব শেষ হওয়ার পর তিন বিগ্রহকেই মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন ভাইবোনের জ্বর আসার পরই মন্দিরের মূল দরজা বন্ধ রাখা হয়। রথের আগের দিন সকাল থেকে মন্দিরের মূল দরজা ফের ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।