ব্যবসার গতি ও বেচাকেনার সঙ্গে লাভও বাড়বে। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। শত্রু সংখ্যা বাড়বে। ... বিশদ
(ডেলগাডো, কৃষ্ণা) (মনবীর)
সঞ্জয় সরকার , ভুবনেশ্বর: বিশাল কাইথকে পরাস্ত করে বল জালে জড়াতেই গ্যালারির দিকে দু’হাত তুললেন তিনি। তবে তা সেলিব্রেশনের জন্য নয়। অ্যাওয়ে গ্যালারিতে হাজির মোহন বাগান অনুরাগীদের কাছে ক্ষমা চাওয়াই ছিল ম্যাচের সেরা রয় কৃষ্ণার উদ্দেশ্য। বছর তিনেক আগে তাঁর কাঁধে ভর দিয়েই দ্বিতীয় আইএসএল খেতাবের স্বাদ পেয়েছিলেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। কিন্তু মঙ্গলবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে প্রাক্তন ছাত্রের কাছেই পরাস্ত স্প্যানিশ কোচ। কৃষ্ণার দুরন্ত গোলে মঙ্গলবার ২-১ ব্যবধানে জিতে মাঠ ছাড়ল ওড়িশা এফসি। সেই সঙ্গে ফাইনালের পথে এক পা বাড়িয়ে রাখল সের্গিও লোবেরার দল। ঘরের মাঠে চলতি আইএসএলে অপরাজেয় তারা। অন্যদিকে, শুরুতে লিড নিয়েও মাথা নীচু করে কলকাতায় ফিরতে হচ্ছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডকে। জয়ী দলের হয়ে রয় কৃষ্ণার পাশাপাশি স্কোরশিটে নাম তোলেন কার্লোস ডেলগাডো। মোহন বাগানের একমাত্র গোলটি মনবীর সিংয়ের। আগামী রবিবার যুবভারতীতে ফিরতি পর্বে মুখোমুখি হবে দু’দল। সরাসরি ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে অন্তত দু’গোলের ব্যবধানে জিততেই হবে দিমিত্রি পেত্রাতোসদের।
লিগ-শিল্ডের লড়াইয়ে মুম্বইকে বশ মানানো একাদশ অপরিবর্তিত রেখেই এদিন দল সাজিয়েছিলেন মোহন বাগান কোচ হাবাস। অ্যাওয়ে ম্যাচে শুরুটাও দুর্দান্ত করে তারা। তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে দিমিত্রির ঠিকানা লেখা সেন্টারে হেডে জাল কাঁপান মনবীর (১-০)। চলতি আইএসএলে মোহন বাগান আপফ্রন্টের দুরন্ত ফর্ম বারবার ঢেকে দিয়েছে রক্ষণের যাবতীয় দুর্বলতা। ওড়িশা কোচ লোবেরার নোটবুকে তা আগে থেকেই তোলা ছিল। ঘরের মাঠে পিছিয়ে পড়তেই প্রতিপক্ষের দুর্বল জায়গায় আঘাত করেন তিনি। তিন ডিফেন্ডারে খেলতে নামা সবুজ-মেরুনের উইং-ব্যাক বরাবর আক্রমণ তুলে আনেন কৃষ্ণা-ইসাকরা। ১১ মিনিটের অমর রানাওয়াডের গোলমুখী শট কোনওক্রমে রুখে দলের পতন আটকান শুভাশিস। তবে ফিরতি কর্নার থেকে জাহুর ভাসানো বলে ফ্লাইট মিস করেন বিশাল। সেই বল জালে জড়ান ডেলগাডো (১-১)। বিপদ এখানেই শেষ হয়নি। মিনিট তিনেক বাদেই পেনাল্টি পায় ওড়িশা। বক্সের মধ্যে রয় কৃষ্ণাকে রুখতে গিয়ে ফাউল করেন বাগান দুর্গপ্রহরী। তবে অফ-সাইডের কারণে স্পটকিক বাতিল হয়। এই পর্বে প্রতিপক্ষ বক্সে বারবার লং-বল আক্রমণ শানাতে থাকে ওড়িশা। আর চাপের মুখে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল মোহন বাগান রক্ষণ। ৩৯ মিনিটে লম্বা গোলকিকে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি ইউস্তে। এমনকী, দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতেও পায়ে-বলে সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ তিনি। আর যোগ্য সুযোগসন্ধানীর মতো চোরা গতি কাজে লাগিয়ে জাল কাঁপাতে ভুল হয়নি রয় কৃষ্ণার (২-১)।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অবশ্য ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল মোহন বাগান। ৫৯ মিনিটে দিমিত্রির সেন্টার কোনওক্রমে আটকান ওড়িশা দুর্গপ্রহরী অমরিন্দর। তবে ফিরতি বল ফাঁকায় পেয়েও উড়িয়ে দেন আনোয়ার। ভুবনেশ্বরের প্রচণ্ড গরম, তার উপর ম্যাচে লিড নিয়েও পিছিয়ে পড়ায় মেজাজ ঠিক রাখতে পারেননি সাদিকু। অহেতুক ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আলবেনিয়ার স্ট্রাইকার। ঘরের মাঠে আনুপাতিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অবশ্য কাজে লাগাতে ব্যর্থ লোবেরা-ব্রিগেড। উল্টে ৭ মিনিটের মধ্যেই পাল্টা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন ওড়িশার কার্লোস ডেলগাডো। দু’দলই একজন কম নিয়ে বাকি সময় লড়াই চালায়। ৭৯ মিনিটে জোড়া পরিবর্তনে রক্ষণে ঝাঁপ ফেলে দেন ওড়িশা কোচ। পাল্টা জনি কাউকোর জায়গায় কামিংসকে নামিয়ে সমতাসূচক গোলের জন্য ঝাঁপান হাবাস। ৮৩ মিনিটে বল ক্রসবারে মারেন অনিরুদ্ধ থাপা। তখনই বোঝা যায়, দিনটা মোহন বাগানের নয়।
মোহন বাগান: বিশাল, আনোয়ার, ইউস্তে, শুভাশিস, মনবীর, অনিরুদ্ধ, অভিষেক (দীপক), কাউকো (কামিংস), লিস্টন (কিয়ান), দিমিত্রি ও সাদিকু।