নিকটজনের স্বাস্থ্য সমস্যায় মানসিক অস্থিরতা। মুদ্রণ বা সংবাদপত্রের ব্যবসা,বৃত্তি শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালনায় সাফল্য। ... বিশদ
আরামবাগের মানুষ ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত ভোট রাজনীতিতে ধর্মের প্রভাব দেখেননি। উনিশের লোকসভা ও একুশের বিধানসভা ভোটে ধর্মীয় রাজনীতি নির্ণায়ক শক্তি হয়ে ওঠে। চব্বিশের ভোটেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। সর্বস্তরের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত বুধবার পুরশুড়ার মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনে সংখ্যালঘু সমাজের মানুষ আহত। তাই নিয়ে অনেকেই প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। আরামবাগের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শেখ হাসান ইমাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ভুলে ক্ষমতা লাভের লক্ষ্যে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছেন। বোঝাই যাচ্ছে বিজেপি শেষ পর্যন্ত মেরুকরণের রাজনীতির ওপরেই ভরসা রাখছে। প্রধানমন্ত্রী ভাষণ শুনে আমরা মানসিকভাবে আহত। আমাদের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে। তাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে সতর্ক হয়েই ভোট দিতে হবে। গোঘাটের শাওড়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা শেখ সিরাজুল বলেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ভোটের সময় মরিয়া হয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। পুরশুড়ায় এসে কংগ্রেস তোষণের রাজনীতি নিয়ে মুসলিমদের নাম উল্লেখ করলেন। সংখ্যালঘু সমাজ নিয়ে একের পর এক নেতিবাচক মন্তব্য করছেন, যা আমাদের আবেগকে আহত করছে। আমরা রীতিমতো শঙ্কিত বোধ করছি। এতে সামাজিক স্তরে অস্থিরতা বাড়ার আশঙ্কা থাকে। এই পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রের মূল্যবোধ রক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরেই ভরসা রাখছি। পুরশুড়ার খুশিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সাহানার খাতুন বলেন, ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি পারিবারিক জীবনে প্রভাব ফেলছে। কট্টরপন্থার শিকার মহিলারাই সবচেয়ে বেশি হন। এমন পরিবেশ আগে দেখিনি। আরামবাগের বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, আমাদের বাঙালি পরিচয় পিছনে চলে যাচ্ছে। ধর্মীয় পরিচয় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যার জেরে রক্ষণশীলতার সঙ্গে পারস্পরিক অবিশ্বাস বাড়ছে।
সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই নির্বাচনে রামমন্দিরের হাওয়া কাজ করেনি। মোদি গ্যারান্টির ওপরেও মানুষের ভরসা। কেন্দ্রে বিজেপির সরকার গড়া নিয়ে যত অনিশ্চয়তা বাড়ছে, ওরা তত ধর্মীয় রাজনীতির ওপর জোর বাড়াচ্ছে। তৃণমূলও সিএএ নিয়ে মুসলিম সমাজকে ভয় দেখিয়ে ভোট পাওয়ার চেষ্টা করছে। তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বাগ বলেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলেও এখানে সফল হবে না। মানুষের ভরসার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরামবাগে সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, বিরোধী দলগুলো এতদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে দেখে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী সেই তোষণের রাজনীতি বন্ধ করে দিয়েছেন। সবকা সাথ সবকা বিকাশের বার্তা দিয়েছেন। রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় রাজনীতি করণের অপপ্রচার করা হচ্ছে।