বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
সন্ত্রাসে আর্থিক মদত বন্ধ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হওয়ায় ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করেছে এফএটিএফ। আগামী অক্টোবরের সময়সীমা পেরিয়ে গেলে এফএটিএফ কালো তালিকাভুক্ত করতে পারে ইমরান খানের দেশকে। কাজেই সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রের তকমা সেঁটে যাওয়ার খাঁড়া ঝুলছে পাকিস্তানের মাথায়। চাপের মুখে পড়ে পাক পাঞ্জাব পুলিসের মুখপাত্র নিয়াব হায়দর নাকভি এদিন বলেন, সন্ত্রাস দমন দপ্তর জামাত-উদ-দাওয়া (জেইউডি) ও অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠনগুলির ১৩ জন নেতার (হাফিজ সইদ সহ) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগে। এই অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।
পাকিস্তান যে ১৩ জন জঙ্গিনেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে, সেই তালিকায় নাম রয়েছে হাফিজ সইদের শ্যালক তথা জামাত-উদ-দাওয়ার সহকারী প্রধান আব্দুল রেহমান মাক্কিরও। গতকাল মোট ২৩টি মামলা দায়ের হয়েছে এই জঙ্গিনেতাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এতদিন কেন সইদ ও তার সাগরেদদের গ্রেপ্তার করা হয়নি? পুলিসের ওই মুখপাত্রের জবাব, কোনও সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে আগে এফআইআর দায়ের করা হয়। তারপর গ্রেপ্তার করা হয়। সইদ ও অন্যান্যদের নামে এফআইআর হওয়ায় এই অভিযুক্তদের ‘খুব শীঘ্রই’ গ্রেপ্তার করা হবে। অন্যদিকে ইমরান খান সরকারের একটি সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, লাহোরের জাওহরে নিজের বাড়িতেই রয়েছে হাফিজ সইদ। তাকে গ্রেপ্তার করার আগে সরকারের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত আসার অপেক্ষায় রয়েছে পুলিস। সম্ভবত চলতি সপ্তাহেই সেই সরকারি সবুজ সঙ্কেত চলে আসবে।
পাক পুলিস যাই দাবি করুক, হাফিজ সইদ ও অন্য জঙ্গিনেতাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামাবাদ আদৌ আন্তরিক কি না, সেই সংশয় থাকছেই। ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা পাকিস্তানের আদালতে এখনও এক চুলও এগয়নি। ইমরান খান সরকার ক্ষমতায় আসার পরও পরিস্থিতিতে কোনও বদল হয়নি। ২০০৮ সালের ওই হামলার পর ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে হাফিজ সইদকে গৃহবন্দি করেছিল পাকিস্তান। যদিও তার এর মাসের মধ্যে পাক আদালত তাকে মুক্ত করে দেয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে লস্কর প্রতিষ্ঠাতাকে ফের গৃহবন্দি করা হয়। নভেম্বর মাসে ফের মুক্তি। লাহোর হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, সইদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য কোনও প্রমাণ মেলেনি। চাপের মুখে লস্কর-ই-তোইবাকে পাকিস্তান নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর জামাত-উদ-দাওয়া সংগঠনকে সামনে রেখে অবাধে কাজ চালিয়ে যায় সইদ। ২০১৭ সালে সইদ গৃহবন্দি হওয়ার পর জামাত-উদ-দাওয়ার নামেও পরিবর্তন হয়। নতুন নাম হয় তেহরিক আজাদি জম্মু-কাশ্মীর (টিএজেকে)। বারবার সংগঠনের নাম বদলে খোলাখুলিভাবে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসমূলক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে সইদ। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারত ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শক্তপোক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা সম্ভব নয়। সইদ ও তার ১২ জন সাগরেদের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদের এবারের পদক্ষেপকেও স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্ব দিতে চাইছে না নয়াদিল্লি। এদিন বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নামে আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, এসব লোক দেখানো পদক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের বোকা বানানো যাবে না।