কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ
শনিবার বিকেলে বালিগঞ্জের সানি পার্ক আবাসনের কাছ থেকে অপহৃত হয় শশীভূষণ দীক্ষিত নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয়রা জানান, একটি গাড়িতে করে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িটিকে তীব্র গতিতে চলে যেতে দেখেন তাঁরা। এলাকার বাসিন্দারা হকচকিয়ে যান। চলন্ত গাড়ির ছবি তুলে নেন এক ব্যক্তি। তাতে নম্বর প্লেটটি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন ১০০ ডায়ালে ফোন করে পুলিসে খবর দেন। সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের তরফে বিষয়টি বালিগঞ্জ থানায় জানানো হয়। ১০০ ডায়ালে যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হয়। মোবাইলে গাড়ির যে ছবিটি তুলেছিলেন, সেটিও সংগ্রহ করা হয়। তার সঙ্গে রাস্তায় থাকা সিসিটিভির ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হয়। মোবাইলে তোলা ছবিতে গাড়ির যে নম্বর প্লেট ফুটে ওঠে, তার সঙ্গে সংগৃহীত ফুটেজেও মিল পাওয়া যায়। এরপরই মোটর ভেহিকেলস দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিস। সেখান থেকেই গাড়ির মালিকের তথ্য ও মোবাইল নম্বর জোগাড় করা হয়। জানা যায়, অভিযুক্তরা এয়ারপোর্ট এলাকায় রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিসের একটি টিম সেখানে পৌঁছে যায়। তারা জানতে পারে, এয়ারপোর্ট থানায় রয়েছে অপহৃত ব্যক্তি। তার সঙ্গে রয়েছে অপহরণকারীরা। তদন্তকারী অফিসাররা সেখানে হাজির হন। এয়ারপোর্ট থানার পুলিস বালিগঞ্জ থানাকে গোটা বিষয়টি জানায়। তারপরই সকলকে নিয়ে আসা হয় বালিগঞ্জ থানায়।
অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিস জানতে পারে, শশীভূষণ উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাসিন্দা। অভিযুক্তদের সঙ্গে অনেক দিন আগে তার আলাপ হয়। সে জানায়, সেনাবাহিনীতে তার ভালো যোগাযোগ রয়েছে। বহু লোককে চাকরিও পাইয়ে দিয়েছে। শীঘ্রই আরও লোক নেওয়া হবে। তবে এরজন্য টাকা দিতে হবে তাকে। তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে টিকাম সিং, সোনপাল সিং শিশোদিয়া ও সতীন্দ্র সিং ১০ লক্ষ টাকা দেয়। এরপর তাদের ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে তারা দেখে, সমস্ত কাগজপত্রই জাল। এরপরই তারা ঠিক করে শশীভূষণকে অপহরণ করবে। যাতে টাকা ফেরত পাওয়া যায়। তাকে টোপ দেওয়া হয়, আরও কিছু যুবক সেনায় চাকরি করতে আগ্রহী। তা নিয়ে আলোচনা করতে ডেকে পাঠানো হয় শশীভূষণকে। সেখানে সে আসা মাত্র তাকে গাড়িতে তুলে অপহরণ করে নিয়ে পালায় ছয় যুবক। সোজা তাকে এয়ারপোর্ট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি জায়গায় আটকে রাখা হয়। এরপর অভিযুক্তরা তাকে এয়ারপোর্ট থানার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে, পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে, শশীভূষণ প্রতারণাচক্রের সঙ্গে যুক্ত। সেনাবাহিনী সহ বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে। অপহরণকারীরা তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে। তার ভিত্তিতে প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় শশীভূষণকে।