গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মঞ্চের উত্তমকুমার
বাংলা নাট্য জগতে সুরজিৎ ‘মঞ্চের উত্তমকুমার’ রূপেই খ্যাত। এহেন বিশেষণে অভিনেতা বিব্রত নন। বরং বলেন, ‘বাঙালি জীবনে এখনও সুন্দর ও শ্রেষ্ঠত্ব বোঝাতে উত্তমকুমারের তুলনা টানা হয়। আমার ২৭ বছরের অভিনয় জীবনে কেউ কোনওদিন বলেননি, অমুক চরিত্রে উত্তমকুমারের ছাপ রয়েছে। তারপরও যখন কেউ কেউ আমার শিল্পী সত্তার সঙ্গে উত্তমকুমারের অনুষঙ্গ খুঁজে পান, তাহলে বুঝতে হবে তাঁরা আমার অভিনয়ের শ্রেষ্ঠত্বকেই স্বীকৃতি দিচ্ছেন।’
জীবন্ত শিল্প
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সুরজিতের ভাষায়, ‘কুৎসিত বিজ্ঞান’। তাঁর মতে, ‘এই প্রযুক্তি আসলে প্রতিভাকে শেষ করে মানুষকে রোবটে পরিণত করার প্রচেষ্টা। তবে মঞ্চে এআই কখনও থাবা বসাতে পারবে না। কারণ থিয়েটার জীবন্ত শিল্প।’
একই অবস্থান
একটা আদর্শকে সামনে রেখে মঞ্চে পা রেখেছিলেন সুরজিৎ। নিষ্ঠা, স্বার্থত্যাগ, জেদকে সম্বল করে এতটা পথ পেরিয়ে এসেও মঞ্চের ‘ডিরোজিও’র উপলব্ধি, গ্রুপ থিয়েটার এখনও একই জায়গায় অবস্থান করছে। মঞ্চে অভিনয় করে জীবনধারণের স্বপ্নও অলীক প্রত্যাশা মাত্র এখনও। ‘আমাদের সুবিধা ছিল, আমরা জেনেই এসেছিলাম থিয়েটার করে কিছু পাব না। এখন তাও কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু অনুদান পাওয়া যায়। তাও সব দল পায় না। নাটক তৈরির লড়াই, কষ্টটা রয়েই গিয়েছে’, বললেন সুরজিৎ।
আশা
কেন্দ্রীয় অনুদান আর সরকারি সুযোগ সুবিধা না নিয়েও যে থিয়েটার করা যায়, তার উজ্জ্বল উদাহরণ কৌশিক সেন, সুজন মুখোপাধ্যায়রা। ‘ওঁরা প্রমাণ করে দিয়েছেন কোনওরকম অনুদান ছাড়াও থিয়েটার প্রযোজনা করা যায়, শো হাউজফুলও হয়। ওঁরাই আশা জোগাচ্ছেন’, বললেন সুরজিৎ। তবে থিয়েটার রুটিরুজি হয়ে উঠতে এখনও অনেক সময় লাগবে বলে মনে করেন তিনি।
অভিনেতার অভাব
কুশলী ও জনপ্রিয় মঞ্চাভিনেতারা এখন একাধিক দলে অভিনয় করেন। সাম্প্রতিক এই প্রবণতাকে স্বাগত জানিয়ে সুরজিৎ মনে করিয়ে দেন, ‘এমন নজির আগেও ছিল। উৎপল দত্ত যখন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ করেন, তখন বিজন ভট্টাচার্যকে নিয়ে এসেছিলেন। তবে এখনকার মতো এত বেশি হতো না। কারণ তখন দলে অনেক বেশি শক্তিশালী অভিনেতা থাকতেন। এখন একটি দলে একই মানের দক্ষ অভিনেতার অভাব।’
নতুন প্রজন্ম
সিরিয়াল দিয়েছে দু’বেলা অন্নের সংস্থান। থিয়েটার দিয়েছে তৃপ্তি। থিয়েটারকে বাঁচিয়ে রাখবে নতুন প্রজন্ম, বিশ্বাস সুরজিতের। তিনি বলেন, ‘অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ঋদ্ধি সেন, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, উজান গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে আমি বাংলা থিয়েটারের আরও সমৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি।’