Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ডাক দিয়েছে কোন সকালে
বিজলি চক্রবর্তী

হরি হে তুমি আমার সকল হবে কবে...।’ গলা ছেড়ে গানটা গাইতে গাইতে বিশ্বরূপ রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল। হাতের কাজ বন্ধ করে নবনীতা বিশ্বরূপের মুখোমুখি হল। বিশ্বরূপ গান বন্ধ করল না। নবনীতার চোখের মুগ্ধতা তাকে উৎসাহিত করে। বিশ্বরূপের গানের ভক্ত নেহাত কম নয়। নবনীতার সঙ্গে তার সম্পর্ক গানকে কেন্দ্র করে। গানের এক অনুষ্ঠানে নবনীতার সঙ্গে তার আলাপ। সেটা ছিল এক ঘরোয়া অনুষ্ঠান। তবে শ্রোতার সংখ্যা নেহাত কম ছিল না। নবনীতা একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনিয়েছিল। বিশ্বরূপ শুনিয়েছিল অতুলপ্রসাদের গান। মুগ্ধতার রেশ ছড়িয়ে পড়েছিল চারদিকে। সবার অনুরোধে তাকে আরও একটা গান গাইতে হয়েছিল। বিভিন্ন জনের গান কবিতা পাঠের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান জমে উঠেছিল। —‘কী হল হাতের কাজ থামালে কেন!’ —‘গানটা শেষ কর না। তোমার গলায় অতুলপ্রসাদের গানের কোনও তুলনা হয় না।’ —‘আমি এখনও গানের চর্চা রেখেছি। তাই গাইতে পারি। তুমি তো মাঝপথেই চর্চা থামিয়ে দিলে। ঠিক আছে। বাদ দাও সে সব কথা। আজ তো ছুটির দিন। একটু আড্ডা মেরে আসি।’ টেনে দরজা বন্ধ করে বিশ্বরূপ বেরিয়ে গেল। নবনীতা বারান্দায় এসে দাঁড়াল। হাঁটার ভঙ্গিতে বুঝতে পারল বিশ্বরূপ গান গাইছে। ছোট ফ্ল্যাটে ছোট বারান্দা। তিনটের বেশি টব রাখবার জায়গা নেই। গোলাপ গাছে দুটো ফুল আছে। লাল রং। ফুলের ছবি তুলে মেয়েকে পাঠাতে হবে। মোবাইলটা হাতেই ছিল। হঠাৎ বেজে উঠল। সেভ করা নম্বরে মেয়ের মুখ ভেসে উঠল। পারমিতা। ব্রিলিয়ান্ট ছাত্রী। বেঙ্গালুরুতে পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত— ‘তোর কথাই ভাবছিলাম রোমি। গোলাপ ফুলের ছবি তুলতে বারান্দায় এসেছিলাম। তোকে পাঠাব।’ —‘তাই! তোমরা কেমন আছ!’ ডোরবেলটা বেজে উঠল। ফোন বন্ধ করে নবনীতা দরজা খুলল। বিশ্বরূপ! —‘কী ব্যাপার ফিরে এলে এত তাড়াতাড়ি!’ —‘দরকার আছে। আমি কয়েকদিনের জন্য একটু বাইরে যাব!’ কথা বলতে বলতে বিশ্বরূপ দ্রুত হাতে ব্যাগ গুছিয়ে নিল। আলমারি খুলে কিছু কাগজপত্র নিয়ে ব্যাগে রাখল। কয়েকদিন বলতে ঠিক কত দিন সেটা বলেনি। 
কয়েকটা দিন কেটে গেল। তবে বিশ্বরূপ সংসার ত্যাগ করেনি। ফোন করে। তবে ফোন রিসিভ করে না। কোথায় আছে বলে না। বিশ্বরূপের বন্ধুরাও কিছু জানতে পারে না। পুলিসকে ইনফর্ম করে না নবনীতা। এভাবে হঠাৎ করে চলে যাওয়া নতুন কিছু নয়। বেশ কয়েকবার বিশ্বরূপ এভাবে বেরিয়ে পড়েছে। স্থির স্বভাবের মানুষটা হঠাৎ করে অস্থির হয়ে ওঠে। সেটা নবনীতা জানে। প্রশ্ন করলে বিশ্বরূপ হাসে। —‘আমি কি ঠিক জানি! —আমারে পাড়ায় পাড়ায় খেপিয়ে বেড়ায় কোন খ্যাপা সে!’ এই মানুষটাকে নবনীতা কখনও কখনও যেন চিনতে পারে না। তবে তার ভালোবাসার ভাঁটা পড়ে না। 
অচেনা এক স্টেশনে বিশ্বরূপ নেমে পড়ল। তার টিকিট কাটা ছিল অনেক দূরের। তবে সে আগেই নেমে পড়ল। এভাবে ঘুরে বেড়াতে তার ভালো লাগে। টিকিট দেখিয়ে সে বাইরে বেরিয়ে এল। শহর থেকে দূরে না হলেও এটা একটা গ্রাম। ট্রেনের জানালা দিয়ে চলমান গাছগাছালি দেখে জায়গাটা পছন্দ হওয়ায় সে নেমে পড়েছে। পাকা রাস্তা। অটো, সাইকেল রিকশ যাতায়াত করছে। এর কোনওটাতেই সে উঠবে না। হেঁটেই যাবে। তার কোনও গন্তব্য স্থির করা নেই। হেঁটে না গেলে কিছুই ভালো করে দেখা হয় না। এই ধরনের গ্রাম। স্টেশনে একইরকম পরিবেশ। রাস্তার দু’ধারে অগুনতি দোকান। সংসারের যাবতীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায়। সব্জির দোকান নয়, হাট। বিশ্বরূপ হাটের ভেতর নেমে এল। এত টাটকা সতেজ আনাজসব্জিপাতি শহরের বাজারে পাওয়া যায় না। সব্জির ছোঁয়া ঠান্ডা বাতাস চোখেমুখে এসে লাগছে। হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছা করে। অথচ বিশ্বরূপ কোনও দিন বাজার করেনি। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সে সামনের দিকে এগিয়ে চলল। বেশিক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না। অভিজ্ঞতা সেটাই বলে। শহরের মানুষ কিছুটা নিস্পৃহ, নির্লিপ্ত হয়। বিনা কারণে কারও প্রতি কৌতূহল দেখায় না। গ্রাম বা শহরতলির মানুষরা খুব বেশি কৌতূহলী। শহরের অচেনা মানুষ দেখলে তো কথাই নেই। কোথা থেকে আসা হয়েছে, কার বাড়িতে যাওয়া হবে এ সব না জেনে শান্তি নেই। বেলা একটু বেড়েছে। সকালের জলখাবার খেয়ে সে বেরিয়েছে। গরম লাগছে। পুজোর বেশি দেরি নেই। তার ডানদিকে বিস্তীর্ণ ধানখেত। তার গা ঘেঁষে কাশফুলের অজস্র গাছ। কলকাতায় এটা দেখতে পাওয়া যায় না। বিশ্বরূপের পা ব্যথা করছে। বুঝতে পারল তারও বয়স বেড়েছে। তরুণ বয়সে যেটা সহজ ছিল এখন সেটা সহজ নয়। তার মেয়েও কত বড় হয়ে গেল। বাজার এলাকা ছেড়ে সে অনেকটা দূরে চলে এসেছে। মানুষের কোলাহল স্তিমিত হয়ে এসেছে। তার বাঁদিকে বসতি চোখে পড়ল। অনেক ঘর লোকের বসবাস মনে হচ্ছে। এরা সবাই চাষি। উল্টো দিকের জমিতে এরাই চাষ আবাদ করে। প্রাচুর্য হয়তো নেই। তবে খুব একটা অভাবও নেই। জীর্ণশীর্ণ চেহারা কারও নেই। প্রত্যেকটি ঘরের সামনে উঠোন। দড়িতে কাপড় শুকোচ্ছে। উঠোনের একধারে শুকনো কাঠ জড়ো করা। ওই কাঠ দিয়ে উনুনে আগুন ধরিয়ে রান্না হয়। ওইরকম একটি উনুনের সামনে একজন মহিলা বসে রান্নায় ব্যস্ত। বেশিক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক হবে না। ঠিক তখনই মহিলার চোখ পড়ল তার দিকে। মাথার ঘোমটা টেনে ঠিক করে তার সামনে এসে দাঁড়াল। বিশ্বরূপ সন্ত্রস্ত হল। —‘আপনি কি কাউকে খুঁজছেন!’ শান্ত গলার স্বর। মহিলাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে মনে হল। 
কাকে খুঁজছে, কী খুঁজছে বিশ্বরূপ নিজেই জানে না। হারা উদ্দেশ্যে ঘুরে বেড়াতে তার ভালো লাগে। —‘নাহ, আমি কাউকে খুঁজছি না। অনেকক্ষণ ধরে হাঁটছি। একটু বসা দরকার।’ মহিলা কিছুটা অবাক হল। তবু একটা বেতের মোড়া এনে উঠোনে রেখে বিশ্বরূপকে বসতে বলল। —‘আপনি কোন বাড়িতে যাবেন! নাম বললে আমি চিনতে পারব মনে হয়। আমরা এখানে সবাই সবাইকে চিনি।’ —‘তাই! আমি তো তাকে চিনি না।’ এক গ্লাস জল মহিলা বিশ্বরূপের হাতে দিল। —‘বাড়িতে কেউ নেই! চারদিক চুপচাপ!’ বিশ্বরূপের কথা শেষ হওয়ার আগে একসঙ্গে বাড়িতে ঢুকে এল। সবাই কথা বলে চলেছে। শুনছে কে বোঝা যাচ্ছে না। বিশ্বরূপকে দেখে সবাই চুপ করে গেল। মাঝবয়সি একজন মানুষ তার দিকে এগিয়ে এল।’ —‘আপনি কে! ঠিক চিনতে পারলাম না তো!’ —‘চেনবার কথা তো নয়। আমিও আপনাদের চিনি না। অথচ আপনাদের বাড়িতে আমি হাজির হয়েছি। রাস্তায় দেখা হলে কোনও প্রশ্ন উঠত না। কিন্তু একজন অচেনা মানুষ আপনাদের বাড়ির উঠোনে বসে আছে! প্রশ্ন তো উঠবেই।’ —‘সেটাই কি স্বাভাবিক নয়!’ —‘অবশ্যই।’ বারান্দা থেকে আর একটা মোড়া এনে মানুষটি বিশ্বরূপের মুখোমুখি বসল। —‘শুরু করুন আপনার কথা।’ কথায় কথায় অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে। আর বেশিক্ষণ এই বাড়িতে বসে থাকা যাবে না। বসে থাকা উচিত নয়। 
নাম না জানা একটা গাছের নীচে বাঁধানো বেদীতে বিশ্বরূপ বসে আছে। বিকেল শেষ হতে চলেছে। বাড়িটাতে অনেক লোক থাকে। সকালে সে যখন এখানে পৌঁছেছে তখন একজন মহিলাকে সে দেখেছে। পরে যারা এসেছে মনে হচ্ছে সবাই এই বাড়ির বাসিন্দা। তাদের মধ্যে আরও দু’জন মহিলা ছিল। সঙ্গে দু’টি বাচ্চা। দু’জন পুরুষ মানুষ। আলাদা করে তাদের সঙ্গে আলাপ হয়নি। অবস্থাপন্ন গৃহস্থ পরিবার। বিশ্বরূপকে তারা ফিরে যেতে দেয়নি। ফিরে যাওয়ার সুবিধাও ছিল না। স্টেশনে গেলে ট্রেন পাওয়া যেত। কিন্তু রাস্তা ভালো নয়। দিনের আলোয় আলোয় সে চলে এসেছিল। রাস্তা চেনবার দরকার তো ছিল না। রাস্তা তাকে যেদিকে টেনে নিয়ে গেছে সেভাবেই সে চলে এসেছে। কিন্তু এখন তাকে রাস্তা চিনে যেতে হবে। তাই আজ আর ফেরা হল না। সারাদিন অনেক কথাই হয়েছে। অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। সে বিশেষ কোনও প্রশ্ন করেনি। দুপুরে ঘুমানোর অভ্যেস তার নেই। কিন্তু আজ ঘুমিয়েছে। ক্লান্তিই এর কারণ। ঘরে সে একাই ছিল। এখনও ঠান্ডা পড়েনি। শহরে তো একেবারেই না। তবুও একটা হাল্কা চাদর তাকে দেওয়া হয়েছিল। সেটা গায়ে দিয়ে শুয়ে বেশ আরাম বোধ হচ্ছিল। তবে খুব বেশিক্ষণ সে ঘুমোয়নি। একজন অচেনা অজানা মানুষকে এত সহজে থাকতে দেওয়ায় অবাক লাগছিল। তার নিজের বাড়িতে এভাবে কেউ এলে তাকে তো থাকতে দেওয়া হতো না। অপরিচিত কোনও বাড়িতে তার থাকবার অভিজ্ঞতা আছে। অথচ নিজেদের বাড়িতে কাউকে থাকতে দেওয়ার সাহস তার বা তাদের হয়নি। গৃহছাড়া স্বভাব তাকে বারবার গৃহছাড়া করেছে। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের অদৃশ্য সীমারেখা অজান্তেই অতিক্রম করেছে। 
সকালে যে মোড়াটায় বিশ্বরূপ বসেছিল উঠোনে, সেই মোড়াটা সেখানেই ছিল। সন্ধে নামতে এখনও দেরি আছে। বাড়িটা চুপচাপ। তবে একেবারে নিস্তব্ধ নয়। নিচুস্বরে ঘরের মধ্যে কথোপকথন চলছে। কী বিষয়ে কথা হচ্ছে সেটা শুনতে পাওয়া যাচ্ছে না। সে মোড়াটাতে এসে বসল। উঠোনের একধারে একটা ট্রাক্টর রাখা। এদের তাহলে জমি-জিরেত আছে। নাকি ট্রাক্টর ভাড়া দেওয়া এদের ব্যবসা। তার অনুমান ঠিক না ভুল জানবার আগ্রহ তার নেই। একটা অচেনা অজানা পরিবারকে অনুমানে বুঝে নিতে তার ভালো লাগে। সেই আনন্দটা এখন সে পাচ্ছে। এই পরিবারে জীবনে সে হয়তো আর ফিরে আসবে না। অনেক বার সে বাড়িছাড়া হয়েছে। কত জায়গায় কত বিচিত্র পরিবারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছে। তাদের সঙ্গে তার এখন আর দেখা হয়নি। অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে। তার বাউন্ডুলে মনটা তাকে বারবার ঘরছাড়া করেছে। কিন্তু বাউল হওয়া তার হয়ে ওঠেনি। অন্ধকারে অচেনা রাস্তায় তার বেরিয়ে পড়া হল না। এ কি তবে ভাবের ঘরে চুরি! দিনের আলোতে ঘুরে বেড়াবার মজা সে পেতে চায়। রাতের অন্ধকারে তার ভয়। যা কিছু অচেনা অজানা সেটাই তো অন্ধকার। নিজের চেনা পরিসরের বাইরে কীসের ভরসায় সে বেরিয়ে পড়ে। তাকে হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে আসে কে! শেষ পর্যন্ত তো সে ঘরে ফিরে যায়। পরিচিত জনের কাছে। খুঁটিবদ্ধ প্রাণী তার নির্দিষ্ট সীমার বাইরে যেতে পারে না। বিশ্বরূপের অবস্থা ঠিক সেইরকম। সে বেরিয়ে পড়ে কিন্তু ছড়িয়ে পড়তে পারে না। —‘আপনি চা খান তো!’ চমকে উঠল বিশ্বরূপ। এই বাড়িতে এসে যে মহিলার সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়েছিল সামনে দাঁড়িয়ে তিনি। —‘হ্যাঁ, খাই। দুধ চিনি বাদ দিয়ে।’ —‘বেশ তাই হবে।’ সকালবেলা বাড়িতে মহিলা একাই ছিলেন। তাকে নিয়ে মহিলার চোখেমুখে কৌতূহল ফুটে উঠেছিল। সবাই যখন ফিরে এসেছিল তখন নানা কাজে মহিলা ঘরের ভিতরে ছিলেন। তার সম্পর্কে আর কিছু জানবার কোনও ইচ্ছে যেন তার ছিল না। কিংবা ইচ্ছে হয়তো ছিল, সুযোগ ছিল না। মহিলার স্বামীই এই বাড়ির কর্তা। কিছুটা রাশভারী ভদ্রলোককে বিশ্বরূপের ভালোই লেগেছে। মাঝে মাঝে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়বার তাগিদ তার মধ্যে আছে জেনে ভদ্রলোক খুব অবাক হয়েছেন। বিশ্বরূপ তার কিছু কিছু অভিজ্ঞতার কথা বলেছে। দু’ কাপ চা এনে মহিলা তাদের সামনে একটা টুলের উপর রেখে দাঁড়িয়ে রইল। —‘কিছু বলবে।’ 
‘হ্যাঁ, চায়ের সঙ্গে কিছু খেতে হবে তো। কী দেব তোমাদের বল!’ 
‘না, না, বিস্কুটই যথেষ্ট। আর কিছু লাগবে না।’ বিশ্বরূপ বাধা দিল। 
‘সে কি! তা হয় নাকি! আমরাও তো খাব। এবার আমাদের জমিতে বেগুনের ফলন খুব ভালো। সাইজ ও স্বাদ দুটোই। সেই বেগুনের বেগুনি করে খাওয়াব। বলা যায় না এই বেগুনির লোভেই আবার আমাদের এখানে আপনাকে আসতে হবে।’ সবার সঙ্গে মহিলাও হেসে উঠলেন। 
সন্ধে হয়ে গেছে। একমাত্র সে ছাড়া সবাই কিছু না কিছু কাজে ব্যস্ত। পরিচিত একটা গানের সুর তার কানে এসে লাগল, —‘আলো ওগো আলো আমার...।’ বারবার ঘুরে ঘুরে প্রথম লাইন গাওয়া হচ্ছে। হারমোনিয়াম বাজিয়ে ছোট একটা মেয়ে গলা সাধছে। শহরে এভাবে গলা সাধা আজকাল শোনা যায় না। গুন গুন করে সেও গানটির সঙ্গে গলা মেলাল। বিভিন্ন পাখপাখালির শব্দ ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে আসছে। 
খুব ভোরে বিশ্বরূপ তৈরি হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এল। সঙ্গে বাড়ির কর্তা। সকালবেলায় চা তৈরি করে দিয়েছিলেন মহিলা। সদর দরজার তালা খুলে দিয়ে হাসিমুখে একপাশে সরে দাঁড়ালেন মহিলা। হাত জোড় করে নমস্কার জানিয়ে বিশ্বরূপ রাস্তায় চলে এলেন। দরজার কপাট ধরে মহিলা দাঁড়িয়ে রইলেন। এভাবে বেরিয়ে পড়তে তারও বড় শখ ছিল। সম্ভব ছিল না। চাপা পড়েই ছিল সেই শখ। কে যেন আবার সেই শখটা জাগিয়ে দিল। 
15th  December, 2024
অস্তরাগ
সঞ্জয় রায়

অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভা নদীর জলে গলে গলে যাচ্ছে। বসন্ত বাতাসে চরাচর জুড়ে গোধূলির অদ্ভুত বর্ণচ্ছটায় প্রকৃতি যেন মায়াময়। চিত্রপটে স্যিলুট হয়ে বসে আছে দু’টি নরনারী। জীবনের প্রান্তদেশে পৌঁছে দু’টি মন পরস্পর খুঁজে পেয়েছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অদ্ভুত মিল। বিশদ

05th  January, 2025
অতীতের আয়না: সাহেবি বড়দিন ও নিউ ইয়ার
অমিতাভ পুরকায়স্থ

কাজকর্ম শিকেয় তুলে পাঁচ দিন ধরে বাঙালির দুর্গোৎসব পালন যাঁরা বাঁকা চোখে দেখেন, তাঁদের আঠারো শতকের কলকাতা থেকে ঘুরিয়ে আনতে পারলে বেশ হতো। সে সময় শহরের সাহেব-মেমদের বড়দিন উপলক্ষ্যে খানা-পিনা-নাচ-গান ও কেনাকাটার হুল্লোড়ের মরশুম চলত দিন দশেক। বিশদ

05th  January, 2025
গুপ্ত রাজধানী: ইন্ডিয়া গেট
সমৃদ্ধ দত্ত

গরিব ও মধ্যবিত্তদের কাছে সেই আর্থিক শক্তি কোথায়! রবিবার অথবা ছুটির দিন কিংবা ন্যাশনাল হলিডে হলেই কোনও বৃহৎ শপিং মল অথবা মাল্টিপ্লেক্সে যাবে! অনেকক্ষণ মেনুকার্ড দেখার পর শেষ পর্যন্ত বরাবরের মতোই ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন অর্ডার করার বিলাসিতাও যাদের থাকে না, তারা যাবে কোথায়? বিশদ

05th  January, 2025
কেউ দেখেনি
প্রদীপ আচার্য

নিরাপদর নিরাপদে থাকার সুখ উবে গেল। গ্রামের নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার একটা আলাদা সুখ আছে। সেই সুখের মুখে আজ ঝামা ঘষে দিল একটা জানোয়ার। সবাই সাপের ভয় দেখিয়েছে। বিশদ

29th  December, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হোলি ট্রিনিটি চার্চ
সমৃদ্ধ দত্ত

দিল্লি মানেই ইতিহাসের গল্প। এর আনাচকানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপত্য। এরমধ্যে বেশ কয়েকটির খোঁজ এখন আর রাখেন না পর্যটকরা। ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে গোপনেই পড়ে রয়েছে সেইসব স্থাপত্য। তারই খোঁজে গুপ্ত রাজধানী। বিশদ

29th  December, 2024
আজও রহস্য: রেস কোর্সের অশরীরী
সমুদ্র বসু

ভূত মানুন আর না মানুন, ভূত-প্রেত নিয়ে আগ্রহ কিন্তু সবার। আমাদের আশপাশের গ্রাম, শহর, মফস্‌সল থেকে শুরু করে খোদ কলকাতা শহরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে ব্যাখ্যার অতীত বিভিন্ন ঘটনা আজও ঘটে। সেই তালিকায় আছে কলকাতা রেস কোর্সেরও নাম। বিশদ

29th  December, 2024
চোর  মিনার

গম্বুজ। সমাধি। শহিদ স্তম্ভ। এসবই তো ইতিহাসের চিহ্ন হিসেবে সর্বত্রই  দেখা যায়।  কখনও মসৃণ বহিরঙ্গ। কখনও চিত্রাঙ্কন। আবার কোনও সময় ভাস্কর্যের নমুনা থাকে বহির্গাত্রে। কিন্তু এই মিনারের স্তম্ভগাত্রে এত গর্ত কেন? মাটি থেকে সোজা উঠে গিয়েছে আকাশের দিকে। বিশদ

22nd  December, 2024
কলকাতা এক পরীর দেশ

আসলে আমরা খেয়াল না করলেও আমাদের চারপাশের হাওয়ায় এখনও দিব্যি নিঃশ্বাস নেয় আঠেরো-উনিশ শতকের কলকাতা। আর সেই পুরনো কলকাতার স্মৃতিকে ধরে রাখার অন্যতম প্রতীক হল— পরী।
  বিশদ

15th  December, 2024
লাল মন্দির

সমৃদ্ধ দত্ত
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লালকেল্লা ও লাল মন্দির। একটি জগৎ বিখ্যাত। অন্যটি স্বল্প খ্যাত। লাল মন্দিরের উচ্চতা তো কম নয়। লালকেল্লার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদনি চকের দিকে তাকালেই চোখে পড়ার কথা। অথবা সেভাবে পর্যটকদের দৃষ্টিগোচরই হয় না।
বিশদ

15th  December, 2024
আদরের পিউ
কৌশানী মিত্র

অনির্বাণের কাল নাইট ছিল। সারারাত দুর্দান্ত পরিশ্রম গিয়েছে। জুনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে এই অদ্ভুত একটা আধা গ্রাম-আধা শহর মতো জায়গাটায় এসে থাকতে শুরু করেছে ও। এখানে আসার পর থেকেই সকাল-দুপুর-রাত কেমন গুলিয়ে যায় অনির্বাণের। বিশদ

08th  December, 2024
প্রতিশোধ
সাবিনা ইয়াসমিন রিঙ্কু

মাত্র ছ’মাসেই যে ফল পেয়ে যাবে ভাবতে পারেনি জয়তী! প্রদীপ্ত কি নিজেও ভাবতে পেরেছিল বাষট্টি থেকে চুরানব্বই হবে! বেশ লম্বা বলে বাইরের লোকরা পার্থক্যটা অতটা ধরতে না পারলেও জয়তী জানে পুরনো প্যান্টগুলো আর কোমর পর্যন্ত উঠতে চাইছে না। বিশদ

01st  December, 2024
বনের মানুষ

—মাস্টার, আজ ডিম বাদ দে, হামাদিগের ছেলে-মেয়েগুলান কেউ খাবেকনি রে!
—কেন?
—হামার সঙতে আসে ওই শর্বরী টুডুটা আছে না? উয়ার ছেলেটোর গায়ে ‘মায়ের দয়া’ বের হইচে। উয়ার লিগে হামাদের পাড়ার সবার মাছ-মাংস-ডিম খাওয়াটো বারণ আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
কিছু কিছু সত্য
অংশুমান কর

বড়মা যখন খবরটা দিল তখন সুকমল শেভ করছিল। সকালটা তার খুবই তাড়াহুড়োয় কাটে। তখন এক মিনিটও মহার্ঘ। এক মিনিটের জন্যও এক-দু’দিন ও ট্রেন মিস করেছে। বাসে করে স্কুলে পৌঁছে দেখেছে প্রেয়ার শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রার্থনা শুরু হওয়ার পরে স্কুলে পৌঁছতে ওর খুব লজ্জা লাগে।
বিশদ

10th  November, 2024
দোলনা
সুমন মহান্তি

সরকারি হাসপাতালের এমারজেন্সি ওয়ার্ডের সামনে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়াতেই মহীন ক্ষীণগলায় বললেন, ‘অপারেশনটা যেন তাড়াতাড়ি করে। ডাক্তারকে তাড়া দিবি।’ বিশদ

03rd  November, 2024
একনজরে
অসমের কয়লা খনি থেকে প্রায় ৪৮ ঘন্টা পরে উদ্ধার করা হল এক শ্রমিকের দেহ। মৃত শ্রমিক নেপালের উদয়াপুর জেলার বাসিন্দা। নাম গঙ্গা বাহাদুর শ্রেষ্ঠ । ভারতীয় সেনার ২১ প্যারা স্পেশাল ফোর্স ডিমা হাসাওয়ের  কয়লা খনি থেকে বুধবার শ্রমিকের দেহ উদ্ধার ...

লালসার শিকার বানাতে শিশু ও মেয়েদের প্রস্তুত করছে একদল পাকিস্তানি যুবক। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটেনে এ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে। তবুও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। এবার জাতীয় স্তরে তদন্তের আর্জি জানাল হিন্দু কাউন্সিল ইউকে। ...

‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেছেন তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। এই অভিযোগ এনে বুধবার আদালতে  মানহানির ফৌজদারি মামলা দায়ের করলেন আইএসএফ বিধায়ক নৌসাদ সিদ্দিকি। ...

বুধবারের বারবেলা। যুবভারতীর প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে জোর কদমে ম্যাচ সিচুয়েশনের মহড়া চলছে মোহন বাগানে। হায়দরাবাদ ম্যাচের প্রথম একাদশে দু’টি বদল করে দল সাজিয়ে ছিলেন কোচ হোসে ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পরিবারের কারও স্বাস্থ্য অবনতিতে মানসিক চিন্তা। অপ্রিয় সত্য কথার জন্য সামাজিক ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে পারেন। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১০২৫: সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করলেন সুলতান মামুদ
১৩২৪:  ভেনিসিয় পর্যটক ও বনিক মার্কো পোলোর মৃত্যু
১৬৪২: বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর মৃত্যু
১৮০৬: ব্রিটেন উত্তমাশা অন্তরীপ দখল করে নেয়
১৮৬৭: আফ্রিকান আমেরিকানরা ভোটাধিকার লাভ করে
১৮৮৪: সমাজ সংস্কারক ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের মৃত্যু
১৯০৯: সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম
১৯২৬: বাদশা হোসেন বহিষ্কার। ইবনে সাউদ হেজাজের নতুন বাদশা। দেশের (হেজাজ) নাম পরিবর্তন করে সৌদি আরব করা হয়।
১৯২৬:  কিংবদন্তি ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী তথা ওড়িশি নৃত্যের জন্মদাতা কেলুচরণ মহাপাত্রের জন্ম 
১৯৩৫: প্রবাদপ্রতিম অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর জন্ম
১৯৩৫: মার্কিন গায়ক এলভিস প্রেসলির জন্ম
১৯৩৯: অভিনেত্রী নন্দার জন্ম
১৯৪১: ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দের প্রয়াণ
১৯৪২: ইংরেজ পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের জন্ম
১৯৫৭: অভিনেত্রী নাফিসা আলির জন্ম
১৯৬৩: প্রথমবারের মতো লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বিখ্যাত পেইন্টিং ‘মোনালিসা’ আমেরিকার ন্যাশনাল গ্যালারী অব আর্টে প্রদর্শন
১৯৬৫: অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদারের জন্ম
১৯৬৬: বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক বিমল রায়ের মৃত্যু
১৯৮৪: প্রথম ভারতীয় মহিলা পাইলট সুষমা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৯০: অভিনেত্রী নুসরত জাহানের জন্ম

08th  January, 2025


ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৪.৯৮ টাকা ৮৬.৭২ টাকা
পাউন্ড ১০৫.৩২ টাকা ১০৯.০৫ টাকা
ইউরো ৮৭.১৯ টাকা ৯০.৫৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৭,৫০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৭,৯০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৪,০৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৯,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৯,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৫ পৌষ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫। দশমী ১৫ দিবা ১২/২৩। ভরণী নক্ষত্র ২১/২৫ দিবা ৩/৭। সূর্যোদয় ৬/২২/৪২, সূর্যাস্ত ৫/৪/৪৬। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৯ মধ্যে পুনঃ ১/৩১ গতে ২/৫৭ মধ্যে। রাত্রি ৫/৫৮ গতে ৯/৩১ মধ্যে পুনঃ ১২/১০ গতে ৩/৪৩ মধ্যে পুনঃ ৪/৩৬ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ২/২৪ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৪৪ গতে ১/২৩ মধ্যে।
২৪ পৌষ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫। দশমী দিবা ১১/৪৬। ভরণী নক্ষত্র দিবা ২/৫০। সূর্যোদয় ৬/২৫, সূর্যাস্ত ৫/৫। অমৃতযোগ দিবা ৭/৫০ মধ্যে ও ১/৩১ গতে ২/৫৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৫/৫৮ গতে ৯/৩১ মধ্যে ও ১২/১১ গতে ৩/৪৪ মধ্যে ও ৪/৩৮ গতে ৬/২৫ মধ্যে। কালবেলা ২/২৫ গতে ৫/৫ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৪৫ গতে ১/২৫ মধ্যে। 
৮ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইএসএল: চেন্নাই-ওড়িশা ম্যাচ ড্র, স্কোর ২-২

10:42:12 PM

বিনোদন জগতে শোকের ছায়া, প্রয়াত জনপ্রিয় মালায়লাম গায়ক পি জয়চন্দ্রন

10:39:00 PM

অস্ট্রেলিয়া সফর সেরে বিশাখাপত্তনামের এয়ারপোর্টে নামতেই নীতিশ কুমার রেড্ডিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা ভক্তদের

10:27:00 PM

জোকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল একাধিক ঝুপড়ি
ভরসন্ধ্যায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! জোকার কাছে ডায়মন্ড হারবার রোডের ধারে আগুন ...বিশদ

10:11:11 PM

উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় সরযূ নদীর ঘাটে শুরু সন্ধ্যা আরতি

10:00:00 PM

দিল্লিতে মানসরোবর পার্ক মেট্রো স্টেশনের কাছে আগুন, মৃত ১
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিধ্বংসী আগুন লাগল দিল্লির মানসরোবর পার্ক মেট্রো স্টেশনের ...বিশদ

09:58:11 PM