সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
বাংলা খাবার ও তার রেসিপিতে বড্ড বেশি বাহুল্য এসে গিয়েছিল। আর সেই বাহুল্যের চাপে পড়ে রেসিপির গুণ ও গুরুত্বই হারিয়ে যাচ্ছিল। তাই তো বাঙালির রান্নার গুণ ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয়ে উঠলেন শেফ নস্কর। সিটি সেন্টার ওয়ানে অম্বুজা গ্রুপের রেস্তরাঁ সোনার তরীর এগ্জিকিউটিভ শেফ তিনি। বললেন, বাঙালি রান্নার একটা ধারা আছে, ক্রমশ বিদেশি উপকরণের চাপে পড়ে সেই ধারা হারিয়ে যাচ্ছিল। বদলে উঠে আসছিল এক অদ্ভুত ধারা— ফিউশন ফুড। না বাঙালি, না ভারতীয় আবার না বিদেশি এই ধারার চাপে পড়ে বাঙালি রেসিপি হারিয়ে যাচ্ছিল। সেই হারিয়ে যাওয়া ধারাটাকে ফিরিয়ে আনায় ব্রতী শেফ নস্কর। আর সেই ধারা ফিরিয়ে আনার জন্য সোনার তরী রেস্তরাঁয় কিছু গতানুগতিক অথচ ভিন্ন স্বাদের রেসিপি চালু করেছেন তিনি। মোচার আমশোল, থোড় চচ্চড়ি, দেশি মুর্গির কষা, ভুনা ঢাকাই মাংস, লটে মাছের ঝুরি এমনই কিছু পদ। চট করে কোনও রেস্তরাঁয় এই পদগুলো পাবেন না। কিন্তু এই পদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে বাংলার ট্র্যাডিশন। তাই সোনার তরীতে এমনই পদ পরিবেশন করেন শেফ নস্কর। নিজে বিদেশি কুইজিন নিয়ে পড়াশোনা করলেও ২০০৭ সাল থেকে বাঙালি রান্না ও তার রেসিপি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি। বললেন, সোনার তরীতে এই ধরনের গতানুগতিক স্বাদের রান্না পরিবেশন করতে পেরে তিনি তৃপ্ত। অতিথিরাও এমন রান্না চেটেপুটে খাচ্ছে। শুধু বাঙালিই নয়, বিদেশি অতিথিদের কাছেও ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাঙালি রেসিপি।
পুর ভরা ভেটকি
উপকরণ: ভেটকি মাছের ফিলে ২৫০ গ্রাম, আদা ৫০ গ্রাম, রসুন ৩০ গ্রাম, কাঁচালংকা ২০ গ্রাম, ধনেপাতা ১০ গ্রাম, লেবুর রস ১০ গ্রাম, আলুসেদ্ধ ৫০ গ্রাম, গরম মশলাগুঁড়ো ১৫ গ্রাম, শুকনোলংকা ১টা,গন্ধরাজ লেবু ১০ গ্রাম, পেঁয়াজ ৪০ গ্রাম, ডিম ১টা, ময়দা ২০ গ্রাম, সাদা তেল ২০০ গ্রাম, নুন স্বাদমতো, কাসুন্দি ৫০ গ্রাম, গোলমরিচ গুঁড়ো ৫ গ্রাম।
পদ্ধতি: ভেটকির ফিলে থেকে পাতলা স্লাইস করে নিন। রসুন বাটা, লেবুর রস ও নুন দিয়ে মাছের ফিলেগুলো ম্যারিনেট করে রাখুন ১ ঘণ্টা। ফিলে থেকে পাতলা স্লাইজ কাটার পর বাড়তি যে মাছ থাকবে সেগুলো ভাপিয়ে নিন। জল ঝরিয়ে ভাপানো মাছ আলাদা করে রেখে দিন। এবার কড়ায় তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে নিন। তাতে আদা, রসুনবাটা ও কাঁচালংকাবাটা দিন। তাতে শুকনো লংকাগুঁড়ো ও ভাপানো মাছ দিয়ে কষান। তারপর আলুসেদ্ধ দিন এবং বাকি মশলা, ধনেপাতা দিয়ে দিন। নুন দিন। সব মিশে গেলে ও পুর তৈরি হলে নামিয়ে রাখুন। এবার ম্যরিনেট করা পাতলা মাছের স্লাইজ নিয়ে তার ওপর এই পুর রেখে তা রোলের মতো মুড়িয়ে নিন। ইতিমধ্যে ময়দা আর ডিম একসঙ্গে গুলে একটা ব্যাটার তৈরি করুন। মাছের রোল সেই ব্যাটারে চুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বসে এপিঠ ওপিঠ করে ছাঁকা তেলে ভেজে নিন। কাসুন্দি সহযোগে পরিবেশন করুন।
ভুনা মাংস
উপকরণ: মাটন ৭০০ গ্রাম, পেঁয়াজ ৫০০ গ্রাম, টম্যাটো পিউরি ৩০০ গ্রাম, আদা ও রসুনবাটা ৪০০ গ্রাম, জিরেগুঁড়ো ২৫ গ্রাম, ছোট এলাচ ২৫ গ্রাম, দারচিনি, লবঙ্গ সামান্য, সর্ষের তেল ২৫০ গ্রাম, কাঁচালংকাবাটা ৪০ গ্রাম, তেজপাতা ৩টে, শুকনোলংকাগুঁড়ো ৩০ গ্রাম, হলুদগুঁড়ো ২০ গ্রাম, গরম মশলা ৩০ গ্রাম।
পদ্ধতি: কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে নিন। তাতে তেজপাতা, এলাচ, দারচিনি, দিন। ফোড়ন ফুটে উঠলে পেঁয়াজ দিয়ে কষিয়ে নিন। লালচে রং ধরলে আদা রসুন বাটা, কাঁচালংকাবাটা দিয়ে কষান। কিছুক্ষণ বাদে বাকি মশলা একে একে দিন। সব মিশে গেলে মাটন দিন। কষিয়ে নিন নুন দিয়ে। একদম শেষে টম্যাটো পিউরি দিয়ে মেশান। গরম জল দিন। তারপর বেশ খানিকক্ষণ কষানো হলে ও জল ফুটতে শুরু করলে প্রেসার কুকারের ঢাকা বন্ধ করে দিন। খানিকক্ষণ স্টিম দিয়ে আঁচ বন্ধ করে ওই অবস্থাতেই রেখে দিন। দশ মিনিট বাদে স্টিম পরে গেলে প্রেসার কুকারের ঢাকা খুলে ওপর থেকে গরম মশলার গুঁড়ো ছড়িয়ে আর একবার সামান্য ফুটিয়ে নিন। গ্রেভি গাঢ় ও ঘন হলে নামিয়ে নিন। লুচি বা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন।