ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
সুবল সাহা ওই পঞ্চায়েত এলাকায় দোকানে দোকানে বিড়ি সরবরাহ করেন। বাড়িতে একটি মাত্র টিনের চালাঘর। সেখানেই থাকা, খাওয়া, শোয়া সব। আলাদা পড়ার ঘর সেখানে দিবাস্বপ্ন। সেই ঘরে পড়াশোনা করেই সুস্মিতা বাংলায় পেয়েছে ৯২, ইংরেজিতে ৮৭, অঙ্কে ৯৮, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৭, জীবন বিজ্ঞানে ৯৪, ভূগোলে ৯৮ এবং ইতিহাসে ৮০। বামুনপুকুর স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সুস্মিতা প্রতিবার স্কুলে প্রথম হয়েছে। তিন গৃহশিক্ষক তাকে বিনা পারিশ্রমিকে পড়াতেন। সুস্মিতা জানায়, স্কুলের শিক্ষকরা খুবই সহযোগিতা করেছেন। আমার তিন গৃহশিক্ষক বিনা বেতনে বাড়িতে এসে পড়া দেখিয়ে দিয়েছেন। আমার বাবার বন্ধুর ছেলেরা এসে আমাকে পড়া দেখিয়ে দিয়েছে। আমি ডাক্তার হতে চাই। সেই জন্য উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চাই। জানি না এই স্বপ্ন কীভাবে পূরণ হবে। সুস্মিতার মা দীপ্তি দেবী বলেন, পড়াশোনার জন্য কখনওই বলতে হতো না। আজ ও যেটা চায় সেটাই করুক।
সুস্মিতার বাবা সুবল সাহা বলেন, ওর ইচ্ছা পূরণ হোক এটাই চাই। আমার একটা ছেলে ছিল ও বিএসসি পাশ করে আর্মিতে ক্লার্কের চাকরি পেয়েছিল ২০২০ সালে। কিন্তু লকডাউনের সময় চাকরিতে যেতে পারবে কিনা সেই চিন্তায় মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়। ওর মারা যাওয়ার ৪০ দিন পরে বাড়িতে জয়েনিং লেটার এসেছিল।বামুনপুকুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিজন দাস বলেন, সুস্মিতা এবার আমার স্কুলের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। ও আমাদের স্কুলের গর্ব। ওর লক্ষ্য ছিল ৬৫০ এর বেশি নম্বর। ইতিহাসের নম্বরটা কম না হলে ওর কাঙ্ক্ষিত রেজাল্টটা হতো। ওর ভবিষ্যত আরও উজ্জ্বল হোক। সুস্মিতার বিজ্ঞান বিভাগের গৃহশিক্ষক পাপাই মোদক বলেন, সুস্মিতার পড়াশুনার প্রতি ভীষণ আগ্রহ। খুবই বাধ্য মেয়ে। যখনই সুযোগ পেয়েছি তখনই ওকে ওর বাড়িতে এসে পড়িয়ে গিয়েছি। আমার ব্যাচে এনেও পড়াতাম। যেদিন আমি পড়াতে যেতে পারিনি, সেদিন ও কান্নাকাটি জুড়ে দিত। ওর পড়ার প্রতি এত আগ্রহ এবং জানবার ইচ্ছা আমাদের মতো শিক্ষকদের অনুপ্রাণিত করেছে। বামুনপুকুর বাজারের বাসিন্দা সুস্মিতার বাবার বন্ধু শম্ভু ঘোষ বলেন, সুস্মিতা আমার বন্ধুর মেয়ে হলেও নিজের মেয়ের মতো। ওর সাফল্যে আমরা গোটা বামুনপুকুর এলাকার মানুষ ভীষণ খুশি।
• মা-বাবার সঙ্গে সুস্মিতা।