নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: কাঁকসা থানার গোপালপুর দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভার অন্তর্গত। বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী। গোপালপুরের আবাসনের নীচে চায়ের আড্ডা বসিয়েছিল তৃণমূল। চা খেতে খেতে উপস্থিত কয়েকজনকে উদ্দেশ্য করে বিধায়কের প্রশ্ন, গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ৭৬ হাজার ভোটে জিতিয়ে ছিলেন। পাঁচ বছরে কিছু পেলেন? উত্তর দিতে যেন মুখিয়ে ছিলেন পম্পা সরকার, অনিতা গায়েনরা। কেউ বললেন, একটা লাইট দিয়েও উপকার করেনি। তাঁর কথায় থাবা বসিয়ে অন্য একজনের দাবি, কিছু দেওয়ার কথা বাদ দিন। পাঁচ বছরে একবারও এমপিকে আমরা দেখতে পাইনি। বিজেপি বিদায়ী এমপির প্রতি মানুষের ক্ষোভ দেখে বিধায়কের পাশে বসা তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের মুখে তখন চওড়া হাসি। তাই হয়তো রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের লড়াই শুধু তৃণমূলের সঙ্গে নয় পূর্বসূরির ব্যর্থতার সঙ্গেও। বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ শুধু দুর্গাপুরের আবাসনের বাসিন্দা শেফালি দাসের নয়। কাঁকসা থানার এলাকার আবাসনের পূর্ব চট্টোপাধ্যায়ও ক্ষুব্ধ। পঞ্চায়েত মন্ত্রী তাঁদের শান্ত করে বলছেন, কিছু করেননি বলবেন না। বিজেপি এমপিরা দিল্লি গিয়ে বাংলার গরিব মানুষের টাকা বন্ধ করার জন্য দরবারও করেছেন। কোলিয়ারি, সরকারি কারখানা বিক্রি করে দিতে কেন্দ্র সরকারের হাত মজুবত করেছেন। আবাসনের বাসিন্দাদের ক্ষোভের আগুনে যেন ঘি ঢেলে দিলেন তৃণমূলের পোড় খাওয়া রাজনীতিক প্রদীপ মজুমদার। শিল্পাঞ্চলজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। প্রচার প্রায় অসম্ভব। তাই অনেক জায়গাতেই বড় বড় আবাসনে চায়ের আসর বসাচ্ছে শাসক দল। সেখানে কোথাও হাজির থাকছেন মন্ত্রী। কোথাও থাকছেন অন্য নেতারা। চায়ের আড্ডায় গল্পের ছলেই বিজেপি অপকর্ম তুলে ধরছে তৃণমূল কংগ্রেস।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে নামমাত্র ভোটে বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়া জয়লাভ করেন। দুর্গাপুর পশ্চিম ও দুর্গাপুর পূর্ব থেকে ৭৬ হাজার ভোটে লিড পাওয়ার জন্যই বর্ধমান এলাকায় ভালো ফল করলেও তৃণমূল কংগ্রেস পরাজিত হয়। অভিযোগ, দুর্গাপুরের ভয়সায় বিজেপি নেতা এমপি হলেও তিনি স্টিল সিটির জন্য কিছু করেননি। বেশিরভাগ সময়ে মানুষ তাঁকে দেখতেই পায়নি। এনিয়ে একাধিক বার এমপির নামে নিখোঁজ পোস্টারও পড়েছিল। তাঁকে নিয়ে দুর্গাপুরবাসীর ক্ষোভকেই চায়ের আড্ডায় উস্কে দিচ্ছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, শেষ পাঁচ বছর ধরে বিজেপি এমপিকে দেখা যায়নি। মানুষ নিজে থেকেই সেই কথা আমাদের বলছে। আমরা কাজের নিখিরে মানুষের কাছে ভোট চাইছি। বিজেপি জেলা সহসভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপির চায়ে পে চর্চার নকল করছে তৃণমূল কংগ্রেস। আমাদের এমপি কী কাজের প্রস্তাব রেখেছেন তা প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। তৃণমূলের এই কৌশল ইভিএমে প্রভাব ফেলবে না। নিজস্ব চিত্র