ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
সাগরদ্বীপ ব্লকের মুড়িগঙ্গা ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষি দীপঙ্কর জানা ও দুধকুমার জানা বলেন, তাঁদের ২ বিঘা করে পান বরজ আছে। ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন নিজেদের টাকাতেই তাঁরা ওই বরজ পুনর্গঠনের কাজ করছেন। জৈব পদ্ধতিতে চাষের জন্য প্রয়োগ করছেন একরে ১০ কুইন্টাল খামারসার, সবুজসার ২০ কেজি, জীবাণুসার ২০ কেজি, নিমখোল ১ কুইন্টাল, হাড়ের গুঁড়ো ১০ কেজি, কেঁচোসার ১৬০ কেজি ও কচুরিপানাসার ১ কুইন্টাল। এর থেকে জৈব অবস্থায় ৪০:২০:২০ অনুপাতে মাটিতে মিলবে নাইট্রোজেন, ফসফেট ও পটাশ। এর পর প্রতি তিনমাস অন্তর প্রয়োগ করতে হবে ভালোভাবে পচানো জৈব মিশ্রসার। দীপঙ্কর জানা বলেন, তাঁরা বাড়িতে গোবর, গোমূত্র ও নানারকম জৈব উপাদান দিয়ে সার তৈরি করেছেন। সেই সার পান চাষে সহায়ক হয়েছে। স্থানীয়ভাবে তাঁরা নিমপাতা ও হলুদপাতা দিয়ে তৈরি করেছেন জৈব কীটনাশক। পানের পাতায় সাদামাছি ও কালোমাছির আক্রমণ রোধে তাঁরা ওই জৈব কীটনাশক প্রয়োগ করে ভালো ফল পাচ্ছেন। সাগরদ্বীপের মুড়িগঙ্গা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষি পলি মণ্ডলজানা ও পরিমল জানার আক্ষেপ, বহু চেষ্টা করেও তাঁরা পানের উন্নত জাত বিধান ১ ও ২ পাচ্ছেন না। তাই নিজেরাই কলমের চারা তৈরি করছেন। বরজে চারা থেকে চারার দূরত্ব রাখছেন ৯ ইঞ্চি আর সারি থেকে সারির দূরত্ব ২৮ ইঞ্চি।
সাগরদ্বীপ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা বিবেকানন্দ বাগ বলেন, তাঁর ব্লকে ৩৮৫ হেক্টর এলাকায় পান চাষ হয়। প্রায় ১৬০০ বরজ রয়েছে। এখানে পানের বাজার দু’টি। হরিণবাড়ি ও রুদ্রনগর। কিন্তু সেখানে তেমন ক্রেতা নেই। তাই চাষিদের কাকদ্বীপের আদর্শ পান বাজার বা গণেশনগর সুপার পান বাজারে ফসল নিয়ে যেতে হচ্ছে।
কাকদ্বীপ ব্লকের স্বামী বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষি পঞ্চানন মণ্ডল, তুলসি মণ্ডল বলেন, উম-পুনে তাঁদের ৪ বিঘার পান বরজ ভেঙে পড়েছে। কীভাবে আবার ঘুরে দাঁড়াবেন ভাবতে পারছেন না। কাকদ্বীপ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা জিতেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, তাঁর ব্লকে ৩৯৮ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। উম-পুনের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বরজ প্রতি ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বরজ পুনর্গঠনে সাহায্য করা হবে।
নামখানা ব্লকের শিবরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষি খোকন মাইতি ও দীপক মাইতি বলেন, উম-পুনের আগে কাকদ্বীপ বাজারে বাংলা পাতার ১০ হাজার বড় পান বিক্রি করে পেয়েছেন ১২ হাজার টাকা। এখন মিলছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। নামখানা ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা দীপু শিকারি বলেন, তাঁর ব্লকে ২৬৪ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। মৌসুনি, নারায়ণপুরের মতো কয়েকটি এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙে পান বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওইসব এলাকায় বরজ পুনর্গঠনের আগে ধৈঞ্চা চাষ করে নিতে হবে। তাতে মাটির নোনাভাব কমবে। এবং নাইট্রোজেনের জোগান বাড়বে।
পাথরপ্রতিমা ব্লকের দ্বীপময় জিপ্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষি সঞ্জীব প্রধান ও গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, কলমের সাহায্যে তাঁরা পান চারা তৈরি করছেন। একটি চারা থেকে সপ্তাহে মাত্র একটি পাতা তোলা যাবে। এক বিঘা জমির বরজে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার পান চারা লাগানো উচিত। পাথরপ্রতিমা ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা ড. শুভম দে বলেন, তাঁর ব্লকে ৩৯৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। এই ফসলে পাতাপচা ও গোড়াপচা রোগ লেগেই থাকে। প্রতিরোধে তামা ঘটিত মিশ্রণ প্রয়োগ করতে পারেন চাষিরা। এতে ভালো ফল পাওয়া যায়। ৫০ লিটার জলে ৫ কেজি কলিচুন ও ৫ কেজি তুঁতে মিশিয়ে চাষি নিজে বাড়িতেই ওই মিশ্রণ তৈরি করে নিতে পারবেন।