গুরুত্বপূর্ণ কাজে সাফল্য। আর্থিক ও বিদ্যাবিষয়ে দিনটি শুভ। শুত্রুভাবাপন্নদের এড়িয়ে চলুন। ... বিশদ
নিত্যানন্দ বংশের ত্রয়োদশ পুরুষ নবদ্বীপের বলদেব মন্দিরের কিশোর গোস্বামী বলেন, বীরভূমের বীরচন্দ্রপুরের হারাই পণ্ডিতের ঘরে জন্ম নিত্যানন্দর। ছোটবেলায় এক সন্ন্যাসীর সঙ্গে ঘর থেকে বেরিয়ে যান তিনি। কাজেই তিনি সন্ন্যাসী না হয়েও সন্ন্যাসীর জীবনযাপন করেন। মহাপ্রভুর থেকে বেশি তীর্থভ্রমণ করেন তিনি। তিনি মহাপ্রভুর থেকে ১২বছরের বড় হয়েও মহাপ্রভুকে গুরুজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতেন। নিত্যানন্দ ছিলেন শ্রীচতন্যদেবের যাবতীয় সংস্কার কর্মের মূল পরিকল্পক ও মহাপ্রভুর বৈষ্ণব আন্দোলনের মূল কাণ্ডারী। নিত্যানন্দকে বলা হয় চৈতন্য মহাপ্রভুর দিক দিশারী। তাঁকে বাদ দিয়ে চৈতন্যলীলা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। অথচ চৈতন্য জীবন রচয়িতারা নিত্যানন্দকে নিয়ে নীরব থেকে গিয়েছেন।
বৃন্দাবন দাস তাঁর চৈতন্য ভাগবতে নিত্যানন্দকে নিয়ে আলোকপাত করেছিলেন। পরবর্তীকালে নরোত্তম দাস ঠাকুর নিত্যানন্দ প্রভুকে নিয়ে আলোকপাত করেন। রঘুনাথ দাস গোস্বামী নিত্যানন্দর সঙ্গে সাক্ষাৎ না করে মহাপ্রভুর কাছে বারংবার দেখা করতে গিয়েও বারংবার ব্যর্থ হওয়ার পরে নিত্যানন্দপ্রভুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি।
বিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী বলেন, নিত্যানন্দকে বলরাম বলা হতো। নিত্যানন্দপ্রভুর বলদেব মূর্তিতে ১১৭বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে নবদ্বীপের বলদেব মন্দিরে। বিষ্ণুপ্রিয়ার কয়েকজন সেবাইত যোগনাথতলায় মহাপ্রভুর আদলে নিত্যানন্দ মন্দির তৈরি করে পুজো শুরু করেন। অনেকে এই মন্দিরকে চেনেন একলা নিতাই বাড়ি হিসেবে। এছাড়াও নবদ্বীপে নিত্যানন্দর বংশধরেরা পুজো করেন শ্রীবাস অঙ্গন, সোনার গৌরাঙ্গ বাড়ি, মদনমোহন মন্দির, রাধাবল্লভ মন্দিরে।
যোগনাথতলার একলা নিতাই মন্দিরের সেবাইত সুধীর গোস্বামীর ছেলে সুধীনবাবু বলেন, রবিবার নিত্যানন্দ ত্রয়োদশীতে মহাপ্রভুর পার্ষদ নিত্যানন্দপ্রভুর জন্মদিন তথা আবির্ভাব তিথিতে উপবাস করে শালগ্রাম শিলার উপর অভিষেক সম্পূর্ণ করা হয়, সারাদিন চলে নামজপ। ওইদিন উপবাস থাকায় সোমবার হয় মহোৎসব। নিত্যানন্দপ্রভুর মহোৎসব ডালে-চালে খিচুড়ি মহোৎসব। অন্ন ব্যঞ্জনের সঙ্গে শুক্তো, কচুর শাক, ল্যাবড়া, মোচা অবশ্যই দিতে হয়। নিত্যানন্দকে তেমনভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি বলে ক্ষোভ রয়েছে নিত্যানন্দ বংশের বর্তমান প্রজন্মের।