উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
প্রসঙ্গত, ১৯৬৮ সাল থেকে রাজনীতির সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত আশিসবাবু। নকশাল ও বাম আমলে তিনি সক্রিয়ভাবে কংগ্রেস করেছেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি টানা বিধায়ক। তখন থেকে সাইকেলে চড়েই তিনি বহু জায়গায় ঘুরেছেন। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর তাঁকে একইভাবে সাইকেল চড়ে শহরে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। এরপর তিনি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং আয়ুষ দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হওয়ার পর নিরাপত্তা পান। বর্তমানে তিনি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী। এখন তাঁর আগে-পিছনে পাইলট-এসকর্ট গাড়ির সঙ্গে সর্বক্ষণের জন্য অন্তত সাতজন আগ্নেয়াস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী থাকে। প্রতিদিন সকালে মন্ত্রীর ব্যাঙ্ক রোডের বাড়ির সামনে তিনটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকত। সেখান থেকে তাঁকে চাপিয়ে দলীয় কার্যালয় ছাড়াও কর্মসূচিতে বিভিন্ন গ্রামে নিয়ে যাওয়া হতো। এমনিতে শহরের সংকীর্ণ রাস্তায় মন্ত্রীর বাড়ির সামনে দীর্ঘক্ষণ ধরে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় এলাকার যানজট বাড়ছিল। অনেকে এনিয়ে মন্ত্রীর সমালোচনাও শুরু করেছিলেন। তাঁর উপরে ভিভিআইপির গাড়ি ঘনঘন যাতায়াতের কারণেও যানজট মোকাবিলায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল ট্রাফিক পুলিসকে। তাই মন্ত্রী নিজেই সেই সমালোচনার অবসান ঘটালেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
যদিও একান্ত সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা শহরে পুলিস সিকিউরিটি ছাড়াই ঘোরেন। তিনি আমার কাছে আদর্শ। এটা আমার কাছে শিক্ষনীয় দৃষ্টান্ত। এছাড়া রামপুরহাট খুব একটা বড় শহর নয়। এখানে সবাই পরিচিত। আমি আগে সাইকেল চড়ে একাই ঘুরতাম। সিকিউরিটির প্রয়োজন হয়নি। যখন রাজনীতি করছি, তখন নিঃসন্দেহে মানুষের হাতের নাগালে আমার থাকা উচিত। প্রথম যখন মন্ত্রী হই, তখন প্রোটোকল অনুসারে পুলিস নিরাপত্তা দিতে শুরু করে। কিন্তু এতদিন যাঁরা খুব সহজেই আমার সঙ্গে দেখা করতে পারতেন, তাঁরাই আমার অফিসে ঢুকতে পারছিলেন না। তখনই নিরাপত্তা না দেওয়ার জন্য পুলিসকে বলেছিলাম। এছাড়া শহরে গাড়ি নিয়ে ঘুরলে সাইরেন বাজাতে নিষেধ করতাম। পরবর্তী সময়ে দেখলাম, এই নিরাপত্তার কোনও দরকার আমার নেই। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শহরে বা এলাকায় কোনও নিরাপত্তা বা এসকর্ট, পাইলট কার ছাড়াই আমি ঘুরব। তবে কলকাতা বা বিধানসভা এলাকার বাইরে যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য নিরাপত্তা ব্যবহার করব।
মন্ত্রী আরও বলেন, আঁটোসাঁটো নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে ঘুরলে, আমার মনে হয় অহঙ্কারের জন্ম দেয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষাটাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যেদিন উপর থেকে ডাক আসবে, সেদিন আমাকে যেতেই হবে। বামফ্রন্ট আমলেই এখানকার মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেছেন। ২০০১ সাল থেকে টানা মানুষ আমাকে সমর্থন করে আসছেন। সেখানে আমার তো একটা মূল্য দেওয়া উচিত। আমি এভাবেই চলতে চাই।
যেখানে নেতা-মন্ত্রীদের নিরাপত্তা বেড়েই চলেছে, সেখানে মানুষের আরও কাছে পৌঁছনোর জন্য নিরাপত্তা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের কাছে আশিসবাবুর গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।