পারিবারিক মঙ্গল অনুষ্ঠান ও পুজোপাঠে আনন্দলাভ। বন্ধু বিবাদের যোগ আছে। বিদ্যাচর্চায় উন্নতি। ... বিশদ
আরবিআই বারবার আশা প্রকাশ করেছে, মুদ্রাস্ফীতির হার ৪ শতাংশের নীচে নামবে। কিন্তু কিছুতেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে না ভারতের অর্থনীতি। কারণ একটাই—কোর সেক্টরের কিছু কিছু সামগ্রীর দাম নিয়ন্ত্রণে এলেও খাদ্যপণ্য এবং নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার কমছে না। প্রবল গরম, খরা পরিস্থিতি, বহু জেলায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার আশঙ্কা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দামের ঊর্ধ্বমুখী আচরণ—মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে না আসার জন্য এই একঝাঁক কারণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিকতম স্টেট অব দ্য ইকনমি রিপোর্টে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট সরাসরি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে প্রকাশিত না হলেও আদতে পরোক্ষে তাদেরই। কারণ, এই রিপোর্ট তৈরির কাণ্ডারীরা আরবিআইয়ের আধিকারিক এবং সেই কমিটির প্রধান স্বয়ং ডেপুটি গভর্নর। সুতরাং এই তথ্য এবং পূর্বাভাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরই সিলমোহর, তথা অনুমোদন রয়েছে।
ভোটপর্ব শুরু হয়েছে। আর তারই মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই রিপোর্ট কার্যত গরিব এবং মধ্যবিত্তের জন্য রীতিমতো মাথায় বজ্রপাতের সমান। কারণ, গরিব এবং মধ্যবিত্তের প্রধান চিন্তা খাদ্যপণ্য এবং বাড়ি-গাড়ির জন্য নেওয়া ব্যাঙ্ক ঋণের ইএমআইয়ের বোঝা। রিপোর্ট বলেছে, আগামী তিন দশক ধরে যদি আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮ থেকে ১০ শতাংশ থাকে, তাহলে ভারতের অর্থনীতি দীর্ঘদিনের জন্য উন্নতির পথ ধরবে। সমস্যা হল, ৩০ বছর ধরে জিডিপি ৮ থেকে ১০ শতাংশ হার বজায় রাখবে, এতটা আশা মোদি সরকারও করছে না। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাসেই সাড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে চলতি আর্থিক বছরের জিডিপি বৃদ্ধির হার।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বুলেটিন রিপোর্টেও স্পষ্ট আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে খাদ্যদ্রব্যের দাম নিয়ে। বলা হয়েছে, মূল্যবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশের মধ্যে নেমে আসার ক্ষেত্রে একমাত্র প্রতিবন্ধকতা খাদ্যপণ্য। এই আর্থিক বছরে খাবারের দাম কিছুতেই কমছে না। আবহাওয়ার অনিশ্চয়তা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা মূল্যবৃদ্ধির হারকে স্থির হতে দেবে না। চলতি বছর গরমের পুরো মরশুমে খাদ্যপণ্যের উপর নজরদারি বিশেষ জরুরি। খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির হার একই থেকে যাওয়ার অর্থ, আগামী বেশ কিছু মাস রেপো রেটও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কমাবে না। ২০২২ সালের মে মাস থেকে বেড়ে রেপো রেট সাড়ে ৬ শতাংশে এসে থমকে আছে। কারণ এই মূল্যবৃদ্ধি। অর্থাৎ গরিব মানুষ নিত্যপণ্য কিনতে জেরবার, আর মধ্যবিত্ত ঋণের ইএমআই দিতে। ভোট হোক অথবা না হোক, এই দুই শ্রেণির ভোগান্তি অব্যাহতই।