উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
বাড়িতে রান্নার গ্যাসের ডেলিভারি এলে, ক্যাশমেমোয় লেখা থাকে গ্যাসের দাম। গ্রাহক কত টাকা ভর্তুকি পাবেন, তাও লেখা থাকে ওই রসিদে। কিন্তু গত আগস্ট মাস থেকে সেই প্রথা তুলে দেওয়া হয়েছে। খোঁজ নিতে গিয়ে সাধারণ গ্রাহক দেখছেন, সেই মাসে তাঁরা ভর্তুকি পেয়েছেন ৭৪.০৫ টাকা। এদিকে, উজ্জ্বলা যোজনায় সেবার ভর্তুকি ছিল ৯৫.৫ টাকা। অর্থাৎ ওই মাসে সাধারণ গ্রাহক গড়ে ২১ টাকা কম ভর্তুকি পান। উজ্জ্বলা যোজনা এবং সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে ভর্তুকিতে গড়ে প্রায় ২১ টাকার ফারাক থাকছে প্রতি মাসেই। নভেম্বরে সাধারণ গ্রাহক ভর্তুকি পাচ্ছেন ১৫৬.৩৩ টাকা। উজ্জ্বলা যোজনায় মিলছে ১৭৭.৩৩ টাকা।
আগস্ট মাসে যে ২১ টাকা কম ভর্তুকি জুটেছিল গ্রাহকের, সেই ধারা যেমন চলছে, পাশাপাশি প্রতি মাসে ধাপে ধাপে ভর্তুকির অঙ্ক আরও কমিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র। কীভাবে কমছে সেই অঙ্ক? সেপ্টেম্বর মাসে রান্নার গ্যাসের বাজারদর ছিল ৬১৬.৫ টাকা। আগস্টের তুলনায় দাম বাড়ে ১৫.৫ টাকা। সেক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর মাসে গ্রাহকের ভর্তুকি বাবদ বেশি টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গ্রাহক তা পাননি। তিনি ভর্তুকি বাবদ মাত্র ৭.৯ টাকা বেশি পেয়েছেন। অর্থাৎ তিনি কম পেয়েছিলেন মাত্র ৭.৬ টাকা। অক্টোবর মাসে রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ে ১৩.৫ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই সেপ্টেম্বর মাসের ভর্তুকির সঙ্গে ওই টাকা জুড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। ভর্তুকি বাড়ে মাত্র ছ’ টাকা। অর্থাৎ গ্রাহক ফের ৭.৫ টাকা কম পান। নভেম্বরেও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এবার গ্যাসের দাম বেড়েছে ৭৬ টাকা। অক্টোবরের তুলনায় ভর্তুকি হিসেবে ৭৬ টাকা বেশি পাওয়ার কথা। কিন্তু তা গ্রাহক পাচ্ছেন না। এবার তিনি কম পেয়েছেন ৭.৬২ টাকা।
যেখানে কোটি কোটি গ্রাহকের হকের টাকা জড়িত, সেখানে ভর্তুকি কমানো নিয়ে কেন এত ধোঁয়াশা রাখল কেন্দ্রীয় সরকার? এই বিষয়ে কোনও উত্তর দিতে চাননি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির কর্তারা। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, উজ্জ্বলা যোজনায় আরও বেশি সংখ্যক গ্রাহককে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চাপ বেড়েছিল তেল সংস্থাগুলির উপর। যেখানে ২০১১ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলিকে ওই যোজনায় গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হতো, সেখানে অনেকটাই শিথিল করা হয়েছে নিয়ম। এখন একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের থেকে কম আয়ের পরিবারের মহিলা যদি উজ্জ্বলা যোজনার জন্য আবেদন করেন, তাহলে তাঁকে একটি সেল্ফ ডিক্লারেশন দিলেই হয়। অর্থাৎ সরকারের খাতায় যাঁরা গরিব, তাঁদেরই উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাসের সংযোগ দিতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা আর নেই। যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিটি পরিবারেই এলপিজি সংযোগ দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে, তাই উজ্জ্বলা যোজনায় সম হারে গ্যাসের ভর্তুকি কমানোর পক্ষপাতী নয় তারা। সেই কারণেই আর্থিক কোপ দেওয়া হয়েছে মধ্যবিত্ত সাধারণ গ্রাহককে। শেষ পর্যন্ত ভর্তুকি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তই চুপিসারে কার্যকর করা হচ্ছে বলে মনে করছেন গ্রাহকরা।