আকস্মিক পত্নীর/ পতির স্বাস্থ্যহানিতে মানসিক চিন্তা। কাজকর্মে কমবেশি বাধা থাকবে। আর্থিক উন্নতি হবে। ... বিশদ
ভোটের বাকি আর সাতদিন। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় টহলদারির জন্য আসা আধাসেনা জওয়ানদের সঙ্গেই ভিড় বাড়ছে সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির অফিসারদের। ‘ভিডিও কলে’ ‘একজনের’ নির্দেশ নাকি বারবার পৌঁছচ্ছে সবার কাছে। কাজও শুরু করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। হাইকোর্টের নির্দেশে ২১’এর ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্ত করছে। দীর্ঘদিন সাড়াশব্দ না মিললেও এখন ভোটপর্বে কাঁথি মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের ভোট ম্যানেজারদের খোঁজে হানা দেওয়াও শুরু করেছে সিবিআই। আধাসেনা সঙ্গে নিয়ে সাজ সাজ রব।
২০০৯ সাল থেকে লাগাতার দখলে থাকা কাঁথি লোকসভা আসনে আধিপত্য বজায় রাখতে দল এবং প্রার্থী দুই পাল্টেছে ‘অধিকারী পরিবার’। পরিবারে কর্তা প্রবীণ শিশির অধিকারী বিজেপির সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ বাড়ালেও, লোকসভার পোর্টালে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও তৃণমূলের সাংসদ। গত ১৫ বছর ধরে তাঁর দখলে থাকা আসনে এবার বিজেপি প্রার্থী ছোট পুত্র সৌমেন্দু অধিকারী। গড় রক্ষার দায়িত্বে। বিপক্ষে তৃণমূলের দাবাং নেতা জেলাপরিষদের সভাধিপতি তথা বিধায়ক উত্তম বারিক। কাঁথির ভূমিপুত্র। রাজনৈতিক মহল বলছে, এই প্রেক্ষিতেই গেরুয়া শিবিরের বহুল চর্চিত স্লোগান—‘অব কী বার...’, এখানেও ‘মোদি সরকারে’র সঙ্গে সমস্বরে ‘অধিকারী পরিবার’ বলে উচ্চারিত হচ্ছে।
শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গিতে কাঁথির এমপি শিশিরবাবুর দপ্তর। চারতলা ভবনের ছাদে পতপত করে উড়ছে গেরুয়া পতাকা। ভোটটা এবার কীসের! আব কী বার স্লোগান... এখানে কি নিজেদের গড়রক্ষার? নাকি দিল্লিতে সরকার গড়ার? তৃণমূল এমপি’র দপ্তরে বসে মুচকি হেসে বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারীর সহাস্য জবাব, ‘দুটোই।’ জিতবেন? ‘অবশ্যই! ভাই (সৌমেন্দু) অনেক মার্জিনে জিতবে। দীর্ঘদিন ধরে বাবা (শিশির অধিকারী) যা উন্নয়ন করেছেন, তা মনে রেখেছে মানুষ।’ মাত্র দু’মাস আগে ‘ফুল’ বদলানো দিব্যেন্দুর সংযোজন—‘তাছাড়া তৃণমূলের দুর্নীতি আর অপশাসন তো রয়েছেই!’ যে উন্নয়নের কথা বলছেন, সে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। এমনকী প্রার্থী সৌমেন্দুর পরিচিতিতে দেওয়া ‘বিশেষণ’গুলিও তো তৃণমূলের হাত ধরেই! তাতে বিজেপির কৃতিত্ব কোথায়? দিব্যেন্দুর জবাব—‘সে সব বাবার যোগ্য নেতৃত্বেই হয়েছে’। হাসলেন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান তথা যুব তৃণমূল নেতা সুপ্রকাশ গিরি। বললেন, ‘গড়! কীসের গড়? এতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি। তাঁকে ভিত বানিয়ে তথাকথিত যে গড় হয়েছে, সেটা তৃণমূলের। অন্য কারও নয়। বাকি উত্তরটা মানুষই দেবেন। দলনেত্রীর রোড শো বুক কাঁপিয়ে দিয়েছে বিজেপির। তাই ওরা উল্টোপাল্টা বকছে।’
দাবাং উত্তম পটাশপুরের বিধায়ক। লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী। ‘লালনক্ষেত্রে’ উত্তমকে টলানো মুশকিল। পটাশপুরে জোড়াফুলের ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে এখন তাই আসরে নেমেছেন শিশিরবাবু নিজেই। শুধু পটাশপুর কেন, খেজুরি, ভগবানপুর সহ জেলার সর্বত্র ফোন পাচ্ছেন তৃণমূলের ভোট ম্যানেজাররা। ফোনে নাকি বিস্তর ‘টোপ’ও মিলছে। বিষয়টা স্বীকার করেছেন দিব্যেন্দু নিজেও। ‘এটা বাবার রাজনৈতিক ক্ষেত্র। দক্ষিণপন্থী রাজনীতির সবাই এখানে বাবার হাতে তৈরি। এটা যুদ্ধ, সব চলে!’ কাঁথিবাসীও বুঝেছেন, অব কী ৪০০ পার, বা মোদির গ্যারান্টি প্রচার করে খুব একটা ডিভিডেন্ড জুটবে না! তাই বাহুবল, অর্থবল, আধাসেনা-কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ‘গড়’ রক্ষার চেষ্টা চলছে। সেই আবর্তে মমতা সেনানী দাবাং উত্তম কীভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুললেন, সেটা দেখার জন্য মুখিয়ে গোটা বাংলা।