গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
শতাব্দীপ্রাচীন শহর কলকাতায় অবৈধ নির্মাণ নতুন কোনও সমস্যা নয়। বিভিন্ন সময় এই ইস্যুতে তোলপাড় হয়েছে পুরসভা। সম্প্রতি ঘটে গিয়েছে গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল বিপর্যয়। এই আবহেই বিল্ডিং বিধিতে কিছু বদল আনতে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। কয়েকমাস আগে পুরসভা নাগরিকদের যে সুবিধা দিয়েছিল, তাতে কিছুটা কাটছাঁটও করা হয়েছে। এতদিন পুরসভার নথিভুক্ত এলবিএস বা অর্কিটেক্টদের তৈরি করে দেওয়া নকশা মেনে চারতলা পর্যন্ত (১২.৫ মিটার উচ্চতাসম্পন্ন) নির্মাণ করা যেত। পরে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দার ‘সেল্ফ ডিক্লারেশন’-এর ভিত্তিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দিত পুরসভা। নয়া নিয়মে চারতলা নয়, তিনতলা (১০ মিটার উচ্চতা) পর্যন্ত কোনও নির্মাণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা থাকছে। অর্থাৎ, পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই এলবিএস বা আর্কিটেক্টের অনুমোদিত নকশার ভিত্তিতে তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ করা যাবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে যে প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা ছিল, তা কাটানোর জন্য গত বছর চারতলা পর্যন্ত নির্মাণের ক্ষেত্রে নিয়মটি আনা হয়েছিল। তাহলে এখন কেন তা কাটছাঁট করা হল? পুর-বিশেষজ্ঞদের মতে, চারতলার ক্ষেত্রে এলবিএসরাই নিমরাজি ছিলেন। বিল্ডিং বিধিতে ওই পরিবর্তনের ফলে তাঁদের দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছিল। কোনও নির্মাণ পরবর্তীকালে আইনি জটিলতায় পড়লে সংশ্লিষ্ট এলবিএস বা আর্কিটেক্টকে তার দায়ভার নিতে হতো। তাই নিয়মে এই বদল এনে চারতলার জায়গায় তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণে ছাড়পত্র দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
তবে, একই সঙ্গে ১৫ দিন অন্তর নির্মাণ সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নিয়ম এনে তাঁদের দায়িত্ব বৃদ্ধিও করা হয়েছে। এক পুর-আধিকারিকের কথায়, বিল্ডিং প্ল্যানে এলবিএস ও আর্কিটেক্টের সই থাকে। প্ল্যান অনুমোদন হয়ে গেলে সেই অর্থে আর কোনও আইনি ভূমিকা থাকত না তাঁদের। এবার থেকে নথিভুক্ত এলবিএস ও আর্কিটেক্টরা তাঁদের অনুমোদিত বাড়ি প্ল্যানমাফিক হচ্ছে কি না, ১৫ দিন অন্তর সেই ‘স্ট্যাটাস রিপোর্ট’ পেশ করবেন।
পুরসভা সূত্রে খবর, তিনতলা পর্যন্ত বাড়ি তৈরির অনুমোদনের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সিলমোহরের অপেক্ষায় বসে থাকতে হবে না। নির্মাণের প্রাথমিক অনুমোদন দিতে পারবেন এলবিএস এবং আর্কিটেক্টরা। তবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে পুরসভাই। এক্ষেত্রে বাড়ির খুঁটিনাটি তথ্য সহ ‘সেল্ফ ডিক্লারেশন’ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট নাগরিককে। জানাতে হবে, নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম হয়নি। এলবিএস বা আর্কিটেক্টের তৈরি করে দেওয়া নকশাতে কোনও বিচ্যুতি না হলে পরবর্তীতে তাতেই চূড়ান্ত সিলমোহর দেবে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ।