নয়াদিল্লি: টার্গেট বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’কে নাস্তানাবুদ করা। সেই লক্ষ্যে এবার পদ্মশিবিরের নজরে সিপিএম নেতা তথা কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল ইডি। ভোটের মুখে বিরোধীদের ‘শায়েস্তা’ করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করছে বিজেপি। বিরোধীদের এই অভিযোগ নতুন নয়। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআইও। তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্রের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। এমনকী তাঁকে দিল্লিতে তলব করেছে ইডি। এবার কেন্দ্রীয় সংস্থার কোপে পড়ল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র আরও এক শরিক সিপিএম। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) খপ্পরে পড়লেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারই বিজয়নের কন্যা বীণা বিজয়ন। লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা বিজয়নের সমস্যা বাড়াতে চলেছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সেখানেই জোরালো হচ্ছে বিরোধীদের বিরুদ্ধে এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। বুধবার বীণা ও তাঁর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ আইনে মামলা দায়ের করেছে ইডি। শীঘ্র তাঁকে তলব করা হতে পারে। অভিযোগ, একটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে বীণার তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার অবৈধভাবে বিপুল টাকা ঢুকেছে। আয়কর দপ্তরের তদন্তের ভিত্তিতে ইডি এই মামলা দায়ের করেছে। এই বিষয়ে সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘ইডির কাছে যদি তথ্য থাকে তদন্ত করবে। তদন্তে নিশ্চয়ই পিনারাই বিজয়নের মেয়ে বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সহযোগিতা করবেন। আমরা তো বলি, যেকোনও তদন্তকারী সংস্থা সত্ ভাবে তদন্ত করুন। তাতে কোনও সমস্যা নেই। এতে আমরা আদৌ বিচলিত নই।’ মহুয়া মৈত্রকে তলবের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি, ইডি-সিবিআই যেকোনও সংস্থা আইন মেনে সততার সঙ্গে তদন্ত করুন। তদন্ত করলে প্রশাসন আরও স্বচ্ছ হবে। তদন্ত নিয়ে আপত্তি নেই। তদন্তের নামে অকারণে হেনস্তা করাতে আমাদের আপত্তি আছে।’
এজেন্সি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক্সালজিক সলিউশনস নামে একটি কোম্পানির মালিকানা রয়েছে বীণার নামে। ২০১৭-’১৮ সালে মোটা টাকা ঢোকে সংস্থার অ্যাকাউন্টে। কোচির কোচিন মিনারেলস অ্যান্ড রুটাইল লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে বীণার সংস্থায় ১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা ঢুকেছে। কিন্তু তার পরিবর্তে কোনও পরিষেবা দেওয়া হয়নি মিনারেলস সংস্থাকে। আয়কর দপ্তরের তদন্তের বিরুদ্ধে এক্সালজিক কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানুয়ারি মাসে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, তাঁর স্ত্রীর ‘অবসরকালীন ফান্ড’ থেকে টাকায় মেয়ে কোম্পানি খুলেছে। সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।