কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ... বিশদ
তৎকালীন সময়ে এলাকায় কোনও বিদ্যালয় ছিল না। স্থানীয় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করতে অনেক দূরের বিদ্যালয়ে যেতে হতো। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা প্রাক্তন বিধায়ক প্রয়াত জনার্দন সাহু এ ব্যাপারে এগিয়ে আসেন। তিনি পালপাড়া এলাকায় একটি বিদ্যালয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। ১৯৪৯ সালের ২ অক্টোবর এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করেন জনার্দনবাবু। দীর্ঘ আলোচনার পর ঠিক হয়, গ্রামের হুইপুকুরের উত্তর দিকে ফাঁকা মাঠে বিদ্যালয় গড়ে উঠবে। ওই বিদ্যালয় গড়ার জন্য তিনি ৪৮ ডেসিমল জমি দান করেন। জনার্দনবাবুর প্রচেষ্টা, গ্রামবাসীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে স্থানীয় জমিদাররাও জমি দান করেন। সেই জমিতেই সাতটি ঘর বিশিষ্ট মাটির বাড়ি তৈরি হয়। সেমসয় ওই বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারাও মুক্তহস্তে দান করেছিলেন। ১৯৫০ সালের ৪ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের পথচলা শুরু। পরবর্তীকালে এই বিদ্যালয় সরকারি অনুমোদন পায়। প্রতিষ্ঠালগ্নে যাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই আজ আর নেই। যাঁরা আছেন, তাঁদের শুভেচ্ছাকে পাথেয় করেই বিদ্যালয় স্বমহিমায় এগিয়ে চলেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যাঁদের অবদানের কথা বরাবরই কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। প্রতিষ্ঠার সময় নাম ছিল পালপাড়া বিদ্যালয়। শিক্ষাবিদ জনার্দনবাবু বিধায়ক থাকাকালীন ‘যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমেরিকায় যার হেড অফিস রয়েছে। বর্তমানে সোসাইটির ভাবধারায় বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়ের নানা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও উন্নয়নের কাজকর্ম দেখভালের দায়িত্বেও রয়েছে ওই সোসাইটি। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তিন শতাধিক। শিক্ষক-শিক্ষিকার-শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে ২৯জন রয়েছেন।
বিদ্যালয়ে পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১৩ জানুয়ারি সকালে পতাকা উত্তোলনের পর ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মী, অভিভাবক, শুভানুধ্যায়ী, শিক্ষানুরাগীরা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে এলাকা পরিক্রমা করবেন। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পাশাপাশি পায়রা উড়িয়ে ও শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন হবে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা প্লাটিনাম জুবিলি উদযাপন কমিটির সভাপতি স্বামী অচ্যুতানন্দ গিরি। থাকবেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। ওইদিন বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জুবিলি স্মারক হলেরও শিলান্যাস হবে। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে। এখানেই শেষ নয়, চলতি বছরের ১৮ থেকে ২১ ডিসেম্বর চারদিন ব্যাপী সমাপ্তি অনুষ্ঠান মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হবে।
প্লাটিনাম জুবিলি উদযাপন কমিটির সম্পাদক, প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মাইতি বলেন, অনুষ্ঠানে শামিল হওয়ার জন্য সকলকেই আবেদন জানানো হয়েছে। তাতে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রাক্তনী, অভিভাবক, পরিচালন সমিতির বর্তমান ও প্রাক্তন সদস্য, শুভানুধ্যায়ী, শিক্ষানুরাগীরা রয়েছেন। তবে সব প্রাক্তনীর কাছে আমরা পৌঁছতে পারিনি। সংশ্লিষ্ট সবাই যাতে অংশগ্রহণ এবং সহযোগিতা করে এই কর্মসূচিকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলেন, সেটাই আমাদের একমাত্র কাম্য। পটাশপুরের যোগদা সৎসঙ্গ পালপাড়া বিদ্যালয়।-নিজস্ব চিত্র