কর্মস্থলে জটিল কর্মে সাফল্য ও সুনাম। অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় বাড়বে। ... বিশদ
হঠাৎ এত আয়োজন করে গাছের বিয়ে দিতে কেন উদ্যোগ নিলেন গ্রামবাসীরা? তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন তাপপ্রবাহ চলতে থাকায় নাজেহাল অবস্থা সকলের। বৃষ্টির অভাবে মাঠে ফসল নষ্ট হচ্ছে। ভূগর্ভস্থ জল নীচে নেমে যাচ্ছে। সেখানে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি গাছের গুরুত্ব বোঝাতেই এই বিয়ের আয়োজন। গাছ না বাঁচলে, আমরা কেউ বাঁচব না— সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ।
বিয়ের লগ্ন মেনে শালগ্রাম শিলাকে সাক্ষী রেখে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণে দুই গাছের বিয়ে দেন পুরোহিত। লগ্ন মেনে রাত ১১ টা ৪৩ মিনিটে শুরু হয় বিয়ে। বর সাজানো হয় পাকুড় গাছকে এবং কনের বেশে সাজিয়ে তোলা হয় বট গাছকে। পরানো হয় টোপর, গয়না ও বিয়ের পোশাক। উপস্থিত ছিলেন পাত্র ও পাত্রীর বাবা-মা। বর ও কনেযাত্রীদের জন্য মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, পনিরের তরকারি, নিরামিষ সব্জি, চাটনি এবং শেষপাতে পায়েস। প্রায় আড়াই হাজার মানুষ পাত পেড়ে খেয়েছেন বলে জানান উদ্যোক্তারা।
পাত্রীর বাবা রাজকুমার হালদার বলেন, এই জায়গাটা ফাঁকা ছিল। আমি এবং পাত্রের বাবা দীনেশ রায় গাছ দু’টি লাগিয়েছিলাম। আমার মেয়ে নেই বলে বট গাছকে নিজের মেয়ে ভেবে পাকুড় গাছের সঙ্গে বিয়ে দিলাম। পরিবেশের যা অবস্থা, তাতে আমাদের সকলকেই গাছের প্রতি যত্নবান হতে হবে। এই আয়োজনের মাধ্যমে সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা। কনের বাবা দীনেশ রায়ের কথায়, বৃষ্টি হচ্ছে না। দাবদাহের জেরে পুকুর, টিউবওয়েলে জল নেই। সকলের মঙ্গল কামনায় বট ও পাকুড়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতির এই রুক্ষ্ম চেহারা যেন কোমল অবস্থায় ফিরে আসে।
এই বিয়েকে কীভাবে দেখছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা? রায়গঞ্জের ভূগোলের বিশিষ্ট শিক্ষক তথা পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ রায় বলেন, এই ঘটনা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। দু’টো গাছ সমগোত্রীয় বলেই হয়তো বিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই বিয়ের উদ্যেশ্য কী, আমাদের সেটা আগে দেখতে হবে। বৈজ্ঞানিকভাবে গুরুত্ব না থাকলেও আস্থা ও বিশ্বাসের উপর ভর করে দু’টো গাছকে রক্ষার জন্য বিয়ের যে আয়োজন গ্রামবাসীরা করেছেন, তাকে সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি আরও গাছ লাগানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। তবেই এই পরিবেশকে বাঁচাত পারব আমরা। নিজস্ব চিত্র