পারিপার্শ্বিক কোনও ঘটনা চিন্তা বাড়াতে পারে। সাংস্কৃতিক কর্মে যোগদান ও মানসিক তৃপ্তিলাভ। শরীরের খেয়াল রাখুন। ... বিশদ
১৯৯৬ সালে ৩০ বছরের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছর। তাই চুক্তি পুনর্নবীকরণ সংক্রান্ত চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে মঙ্গলবার ফরাক্কা পরিদর্শনে আসেন ভারত-বাংলাদেশ যৌথ রিভার কমিশনের সদস্যরা। ভারতের পাঁচজন সদস্য ছাড়াও রয়েছেন মহম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের ১১ সদস্য রয়েছেন সেই দলে। আবুল হোসেন বলেন, ‘জানুয়ারি পর্যন্ত জলের পরিমাণ ঠিকই ছিল। ফেব্রুয়ারিতে পদ্মায় জলের পরিমাণ সামান্য কমেছে। তবে তা পুরোপুরি প্রাকৃতিক কারণেই হয়েছে। কোনও বছর জল বাড়বে, কোনও বছরে কমবে, এটাই তো স্বাভাবিক।’ প্রসঙ্গত, চুক্তি অনুযায়ী বর্ষার মরশুমে পদ্মায় ৬৮ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়। শুখা মরশুমে ছাড়া হয় তার অর্ধেক পরিমাণ জল।
সোমবার থেকে পাঁচ দিনের সফরে রাজ্যে এসেছেন যৌথ রিভার কমিশনের সদস্যরা। মঙ্গলবার সকালে তাঁরা ফরাক্কা ব্যারাজ পরিদর্শনে যান। সেখানে তাঁদের সামনে ব্যারেজ এবং জলবণ্টন সংক্রান্ত যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় বিশ্লেষণ করেন ফরাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর ডি দেশপাণ্ডে। বুধবার কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেবেন কমিশনের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার কমিশনের ৮৩তম বৈঠকে গঙ্গা-পদ্মা ছাড়াও মহানন্দা, তিস্তা, মনু, মুহুরি, গুমতি, ধারলার মতো আন্তর্জাতিক নদীগুলির জলবণ্টন নিয়েও আলোচনা হতে পারে। বিষয়গুলির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থ যে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে, গত ২৪ জুন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা ঢাকা ফিরে যাওয়ার আগে ৭ মার্চ কলকাতায় রাজ্য সেচদপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে গঙ্গা-পদ্মা জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ওই চিঠি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছিলেন, ‘...ইতিমধ্যে পদ্মার সঙ্গে সংযোগ হারিয়েছে জলঙ্গী এবং মাথাভাঙ্গা। গঙ্গা থেকে ভাগীরথীতে জলের স্বাভাবিক স্রোতেও যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। ফলে সুন্দরবনে লবণাক্ত জলের মাত্রা বাড়ছে। সেই সঙ্গে কলকাতা পোর্টের নাব্যতা ধরে রাখতে একটি ফিডার ক্যানাল কেটে ৪০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার প্রয়োজন পড়েছে।’ প্রসঙ্গত, ২০২১-এর ৬ জানুয়ারি, ২০২২ ও ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট যৌথ রিভার কমিশনের কারিগরি পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। তবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে আর বছরখানেক বাকি থাকায় ৬ ও ৭ মার্চের বৈঠক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।