কর্মে বাধা থাকলেও অগ্রগতি হবে। ব্যবসায় লাভ হবে সর্বাধিক। অর্থাগম যোগটি শুভ। কর্মক্ষেত্রে এবং রাজনীতিতে ... বিশদ
সোমবার বিয়ের দিন ঠিক ছিল আকাশ এবং ঐশ্বর্যের। দু’জনেই স্বাস্থ্যকর্মী। বাড়ি আলাপুঝা জেলার থালাভেডি এলাকায়। তখন বন্যার কোনও ভ্রুকুটি ছিল না কেরলে। স্থানীয় মন্দিরে তাঁদের চার হাত এক হবে—এমনই ছিল পাকা বন্দোবস্ত। ক’দিন আগে দু’জন মিলে মন্দির প্রাঙ্গণ ঘুরে এসেছেন। পুরোহিতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার পরেই শুক্রবার থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি। থালাভেডি ডুবেছে জলের তলায়। মন্দিরের সামনেও হাঁটু সমান জল। তা বলে তো আর বিয়ের মতো মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানকে পিছিয়ে দেওয়া যায় না! নতুন জীবন গড়ার পথ থেকে সরেও আসতে চাননি আকাশ-ঐশ্বর্য। কিন্তু কীভাবে তাঁরা পৌঁছবে মন্দির প্রাঙ্গণে? মন্দিরে যাওয়ার প্রতিটি পথেই জলের স্রোত!
পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন দু’জনে। সেখানেই উঠে আসে বিকল্প পথের। ঠিক হয়, রান্না করার বড় গামলায় চেপে বর-কনে পৌঁছবে মন্দিরে। সেখানে বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে বাড়িও ফিরে আসা হবে এক পদ্ধতিতে। সেই মতো আকাশ-ঐশ্বর্যকে গামলায় চাপিয়ে শুরু হয় যাত্রা। বেশ কয়েক কিলোমিটারের ‘জলপথ’। সঙ্গী গুটিকয়েক আত্মীয়-স্বজন। মন্দিরে পৌঁছে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন তাঁরা। একেবারে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান। সব প্রতিকূলতাকে জয় করে নব দম্পতির মুখে চওড়া হাসি। লাজুক মুখ করে ঐশ্বর্য বলছিলেন, ‘নতুন জীবন গড়ার স্বপ্নপূরণে এ ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।’ আকাশের কথায়, ‘দিব্যি দীর্ঘ জলপথ ডিঙিয়ে চলে এলাম। কোনও অসুবিধা হয়নি। তবে, বিয়েতে একটু এলাহি আয়োজন হলে ভালো লাগত। কিন্তু কি আর করা যাবে!’
নতুন জীবন গড়ার এই খুশির খবরের পিঠেই বানভাসি কেরলে উঠে এসেছে জীবন বাঁচানোর লড়াইও। সেই কাহিনি অবশ্য বেশ মন খারাপ করা। গুজরাত থেকে কেরলে বেড়াতে গিয়েছিলেন এক দম্পতি। সঙ্গে তাঁদের কিশোর ছেলে। পাহাড়ি এলাকায় ঘোরার সময় ধেয়ে আসে হড়পা বান। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তিনজনে। মা আটকে পড়েন একটি প্রাইভেট গাড়িতে। বাবা-ছেলে স্রোতস্বিনী পাহাড়ি রাস্তায়। একে অপরকে জড়িয়ে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা তাঁদের। এমন সময় কেরল ট্রান্সপোর্টের একটি বাস সেই পথ ধরে আসছিল। তার পিছনে একটি টায়ার ঝোলানো। সেটিকেই খড়কুঁটোর মতো আঁকড়ে ধরেন বাবা-ছেলে। ভাগ্যিস, বাসের ভিতর থেকে তাঁদের দেখে ফেলেছিলেন কন্ডাক্টর জয়সন জোশেফ। বাস থামিয়ে দু’জনকেই উদ্ধার করেন তিনি। বেঁচে আছেন মা-ও।