কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ... বিশদ
মুড়িগঙ্গা নদী পেরনোর সময় জলযান বা ভেসেলে উঠতে গিয়ে তীর্থযাত্রীরা যাতে হুড়োহুড়ি না করেন, সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে বলেছেন তিনি। ভেসেলে জায়গা বুঝেই লাইন করে তীর্থযাত্রীদের নামা-ওঠার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রচণ্ড ভিড়ে হুড়োহুড়ির কারণে ‘পদপিষ্ট’ হওয়ার চেনা বিপদ এড়াতেই তাঁর এই পরামর্শ। যাতে কোনোভাবেই প্রাণহানির ঘটনা না-ঘটে সেদিকে নজর রাখতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিং করে পলি তোলার ফলে এবার সারাদিনে ২০ ঘণ্টা ভেসেল চলবে। কুয়াশার মধ্যে চলার জন্য ভেসেলগুলিতে থাকবে ফগ লাইট। জলযান, বাস প্রভৃতি জিপিএস ও স্যাটেলাইট নজরদারির মধ্যে থাকবে। গঙ্গাসাগর মেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা আগামী কাল, বৃহস্পতিবার। মেলা চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানের সময়—১৪ জানুয়ারি সকাল ৬টা ৫৮ মিনিট থেকে পরদিন সকাল ৬টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত। এবার গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন পয়েন্টে দেখভালের জন্য দশজন মন্ত্রীর পাশপাশি দশজন প্রধান সচিব পর্যায়ের আধিকারিকদের বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রীরা কাকদ্বীপের ৮ নং লট, সাগরদ্বীপের কচুবেড়িয়া প্রান্ত ও মেলাপ্রাঙ্গণে কে কোথায় থেকে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন, তাও ঠিক করে দিয়েছেন তিনি। মেলাপ্রাঙ্গণে থাকবেন অরূপ বিশ্বাস, পুলক রায়, বঙ্কিম হাজরা ও স্নেহাশিস চক্রবর্তী। ফিরহাদ হাকিম থাকবেন কাকদ্বীপে। সুজিত বসু ও রথীন ঘোষ থাকবেন কচুবেড়িয়ায়। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে মন্ত্রী ও প্রধান সচিবরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন। মেলা চলাকালে, অর্থাৎ ৯-১৭ জানুয়ারির মধ্যে যেকোনও মানুষের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর জন্য ৫ লক্ষ টাকার বিমার ব্যবস্থা রেখেছে রাজ্য সরকার। তীর্থযাত্রী বা অন্যরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে থাকছে ৫১৫টি বেড। থাকবে আইসিইউ এবং থাকবেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররাও। গুরুতর অসুস্থদের কলকাতায় আনার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকবে চারটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স ও শ’খানেক সাধারণ অ্যাম্বুলেন্স। কিছু তীর্থযাত্রী যাতে হেলিকপ্টারেও গঙ্গাসাগরে পৌঁছতে পারেন তার ব্যবস্থাও থাকছে। এজন্য তৈরি করা হয়েছে তিনটি হেলিপ্যাড। বাস, জলযান প্রভৃতি কতগুলি থাকবে, তার পরিসংখ্যানও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এবারের গঙ্গাসাগর মেলা ‘প্লাস্টিক-মুক্ত’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তীর্থযাত্রীদের পুজো দেওয়ার সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘বায়ো ডিগ্রেডেবল’ ক্যারি ব্যাগ দেওয়া হবে। তীর্থযাত্রীদের কাছে যাবতীয় তথ্য পৌঁছে দিতে বিলি করা হবে বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষায় ছাপা লিফলেট। তাঁদের সুবিধার জন্য থাকবে ১২ হাজার শৌচাগার, সঙ্গে আরও বিবিধ পরিষেবা। মেলা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করাই মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য। যাতে কোনোরকম নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি না-হয় তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকেই সক্রিয় থাকার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে স্বেচ্ছাসেবক নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী কাল, বৃহস্পতিবার তিনি কলকাতার যাবেন বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর মেলার জন্য চালু করা শিবিরে।