শরীর-স্বাস্থ্যের হঠাৎ অবনতি। উচ্চশিক্ষায় বাধা। সৃষ্টিশীল কাজে উন্নতি। পারিবারিক কলহ এড়িয়ে চলুন। জ্ঞাতি বিরোধ সম্পত্তি ... বিশদ
বিজেপি জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, একটা সময়ে মুকুল রায়ের নামেও তো অনেক অভিযোগ ছিল। কিন্তু বিজেপিতে এসে তিনি তো মানিয়ে নিয়েছেন। বিজেপি শৃঙ্খলাপরায়ণ দল। এখানে কোনও সমস্যা হবে না। ভালো কাজ করলে বড় দায়িত্ব এখানে পাওয়া যায়।
বড় ব্যবসায়ী পরিবারে ছেলে। ছাত্রজীবন থেকেই বামেদের সঙ্গে ওঠাবসা। এলাকার মানুষের বিপদে আপদে ঝাঁপিয়ে পড়ার কারণে জনপ্রিয়তাও ছিল তুঙ্গে। সেই জনপ্রিয়তাকে ভোটের কাজে লাগিয়েছিল সিপিএম। তখন থেকেই বাড়তে থাকে প্রভাব প্রতিপত্তি। বাড়তে থাকে ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাব। সংঘাত শুরু হয় কমরেডদের সঙ্গে। তারপরই শিবির বদল। বাম থেকে তৃণমূলে। ২০১১ সালের নির্বাচনে কমরেডদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করে তৃণমূল শিবিরের নজর কাড়েন তিনি। বুদ্ধি, পেশিশক্তি ও অর্থশক্তির জোরে উল্কার গতিতে উত্থান শুরু তাঁর। ক্রমেই ইস্কোর ‘ব্যবসার’ রাশ ধরে নেন। ক্ষমতার মধুর স্বাদ পেতে তাঁর পিছনে যুবকদের লম্বা লাইন। ২০১৫ সালের পুরসভা ভোটে তাঁর কাছ থেকে অ্যাডভানটেজ পায় শাসক শিবির। তারপরই কলকাতার হাইপ্রোফাইল নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু হয়।
বুদ্ধি, অর্থ, পারিবারিক সম্মানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় ক্ষমতা। রাজনীতির উঁচুতলায় থাকা লোকজনের সঙ্গে শুরু হয় ওঠাবসা। প্রভাব বাড়তে থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে জেদ। একে একে কোণঠাসা করেন ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বীদের। চমকানো, ধমকানোয় ওস্তাদ ‘ডন’ এর নাম জড়িয়ে যায় খুনের ঘটনায়। কিন্তু, শাসক শিবিরে সুনজরে থাকায় পুলিস তাঁকে গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা, ছোঁয়ার সাহস দেখায়নি। পুলিস ‘বন্ধু’ হয়ে যাওয়ায় কথায় কথায় বাড়তে থাকে অস্ত্র উঁচিয়ে হুঙ্কার। বিরোধীদের তো বটেই চমকানির মুখে পড়তে হয় দলের অপছন্দের নেতা, এমনকী পুলিসকেও। তারপরই শুরু হয় ডানা ছাঁটার পালা। শাসক দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গেও দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সক্রিয় হয় পুলিস।
২০১৭ সালে পুজোর পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ঘিরে বিবাদ চরমে ওঠে। অনুষ্ঠানের আয়োজনে বাধা দেয় পুলিস। তারপর থেকেই পুলিসের সঙ্গে বন্ধুত্বে ছেদ। পারস্পরিক সংঘাত ওঠে চরমে। পুলিস পৌঁছে যায় বাড়ি পর্যন্ত। উদ্ধার হয় অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র। খসে পড়ে ‘সমাজসেবী’, ’রাজনৈতিক কর্মী’র তকমা। কারণ উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের সেই তালিকায় ছিল কার্বাইনের মতো অস্ত্র। নতুন পরিচয়ে ‘ডন’। তাঁর বিরুদ্ধে আটটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। খুনেও অভিযুক্তও তিনি।
যদিও ফের তিনি রাজনীতির ময়দানে। লাল, সবুজ সরিয়ে এবার তাঁর মাথার উপর গেরুয়া শিবিরের ছাতা। তৃণমূলকে সবক শেখানোই তাঁর লক্ষ্য। কারণ যখনই তিনি দল বদলেছেন, তখনই সেই দলকে শিক্ষা দিতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছেন। এই মুহূর্তে তাঁর টার্গেট তৃণমূল। শুধু তৃণমূলকে শিক্ষা দেওয়াই নয়, তাঁর আরও একটি লক্ষ্য রয়েছে রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। কারণ পুলিসের তাড়া খেতে খেতে ক্লান্ত ‘ডন’ বুঝেছেন, বিকাশ দুবে হওয়ার চেয়ে রাজনীতিক হওয়া অনেক ভালো। সেই লক্ষ্যেই বিজেপিতে যাওয়া। বিজেপিও বাড়িয়ে দিয়েছে হাত। কারণ আসানসোল শিল্পাঞ্চলে বিজেপি ভোট পেলেও কর্তৃত্ব কায়েম করতে পারেনি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে মাটি দখলের লড়াইয়ে ‘ডন’কেই মুখ করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।