Bartaman Patrika
 

এক বৈশাখে

প্রদীপ দে সরকার: প্রসাদি থালা হাতে ঠাকুরঘর থেকে নামার সময় সিঁড়ির শেষ ধাপে এসে হঠাৎই ব্যালান্স হারিয়ে পড়ে গেল মানসী। ঠিক পড়ল না, পড়তে পড়তেও সিঁড়ির রেলিং ধরে ফেলায় পতন খানিকটা স্লো মোশানে হল। তবে মানসী চিৎকারে কোনও খামতি রাখল না। রান্নাঘর থেকে সরমা আঁচলে হাত মুছতে মুছতে ছুটে এল। জিষ্ণুও নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে এল। 
মেঝেতে থেবড়ে বসে মানসীকে সুর করে কাঁদতে দেখে সরমাও গলা মিলিয়েছিল কিন্তু জিষ্ণুর হালকা ধমকে দু’জনকেই থামতে হল। জিষ্ণুর কাঁধে ভর দিয়ে একটা চেয়ারে এসে বসল মানসী। জিষ্ণু জিজ্ঞেস করল, ‘ঠিক কোথায় কোথায় লেগেছে বল তো? হাঁটতে পারছ যখন পায়ে হয়তো তেমন বড় কিছু হয়নি। কোমরে লেগেছে?’
মানসী এখন খানিকটা ধাতস্থ হয়েছে। বলল, ‘না রে, হাঁটার সময় হাঁটুটা একটু কটকট করছিল। আর কোমরটাও টনটন করছে। আর, আর...’। মানসী ভাবার চেষ্টা করে। 
মানসীকে আর বেশি ভাবতে না দিয়ে জিষ্ণু বলল, ‘মা, তোমার হাঁটু আর কোমরের ওই কটকট টনটন সারা বছরই থাকে। যাক, ভাগ্য ভালো যে বড় কোনও চোট পাওনি। কতবার বলেছি সিঁড়ি দিয়ে এত ওঠানামা কোরো না। কিন্তু কারও কথা শুনলে তো! দিনে দশবার ওই সিঁড়ি দিয়ে উঠছ আর নামছ। এত ঠাকুর ঠাকুর কর কেন? দিল তো আছাড় মেরে ফেলে’।
মানসী নিজের ব্যথা ভুলে ধমক দেয় ছেলেকে, ‘আমি ঠাকুর ঠাকুর করি বলেই এখনও সবাই ভালো আছিস। আজ পয়লা বৈশাখ, সকালে চান করে একটু পুজো না দিলে হয়? সারাটা বছর ...’। কথা বলতে বলতেই মানসী হঠাৎ থেমে যায়।। জিজ্ঞেস করে, ‘হ্যাঁ রে, তোর বাবাকে দেখছি না তো? ঘরে এত বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল অথচ তার দেখা নেই কেন রে? নাকি আমি পড়ে-ধরে মরলে বাঁচে।’ 
বড় কিছু ঘটেনি দেখে বোধহয় খানিকটা নিরাশ হয়েই সরমা এর মধ্যে রান্নাঘরে ফিরে গিয়েছিল। সেখান থেকেই উত্তর দিল, ‘সে কী! তুমি জানতে না দাদাবাবু বেরবে? তুমি ঠাকুর ঘরে যাওয়ার পরে পরেই ধুতি পাঞ্জাবি পরে বেরিয়ে গেল। কী সাজ দিয়েছে গো বউদি। সোনালি পাড়ের কালো ধুতি আর ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবি’।
মানসী তার কোমরের টনটন, হাঁটুর কটকট সব ভুলে উঠে দাঁড়াল। ছেলের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই জিষ্ণু বলল, ‘হ্যাঁ, আমাকে বলে গেল তো, তোর মাকে বলে দিস বেলা করে ফিরব’।‘কোথায় গেল কিছু বলেনি?’ জিষ্ণু ঠোঁট উল্টে মাথা নাড়ে। মানসী খেঁকিয়ে উঠল, ‘বাপ সেজেগুজে বেরচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে সেটাও জানার প্রয়োজন মনে করিস না তুই?’রান্নাঘর থেকে মুখ বাড়িয়ে সরমা বলল, ‘সিঁথি’।
মানসী অবাক হয়ে তাকালো সরমার দিকে। ‘তুই কী করে জানলি? তোকে বলেছে?’
সরমা রহস্যময় ভঙ্গিতে বলল, ‘আমাকে বলবে কেন? আমি যখন সকালের চা দিতে গেলাম তখন তো দাদাবাবু ফোনে কথা বলছিল। বলল, সিঁথির মোড়ে পৌঁছে ফোন করে নেব’।
জিষ্ণু বিরক্ত হয়ে বলল, ‘এসব কী হচ্ছে মাসি? বাবা ফোনে কার সঙ্গে কথা বলছে তুমি তা আড়ি পেতে শুনতে যাচ্ছ কেন? ভেরি ব্যাড ম্যানার্স।’
মানসী খেঁকিয়ে ওঠে, ‘রাখ তোর ম্যানার্স। হ্যাঁ রে, কার সঙ্গে কথা বলছিল জানিস?’
জিষ্ণু বিরক্ত হয়ে নিজের ঘরের দিকে হাঁটা দেয়। সরমা প্রায় ফিসফিসিয়ে, রহস্যময় গলায় বলে, ‘একজন মেয়ে মানুষের ফোন গো। তবে বাবা, আমি আর কিছু বলব না। তোমার ছেলে আবার রেগে যাবে’।
এই কথাগুলো মারাত্মক। অনেকটা থ্রিলার ওয়েব সিরিজের এক একটা পর্বের শেষ দৃশ্যের মতো। পরের পর্ব না দেখা পর্যন্ত শান্তি নেই। এই মুহূর্তে সরমার পুরো কথা না শোনা পর্যন্ত শান্তি নেই মানসীর। ধমকে বলল, ‘জিষ্ণুকে নিয়ে ভাবতে হবে না, তুই যা জানিস আমাকে বল’।
সরমা এবার আরও এগিয়ে আসে। তারপর চোখেমুখে এবং কণ্ঠস্বরে আরও রহস্য মাখিয়ে বলে, ‘দাদাবাবু তো কানে তার গুঁজে ভিডিও কল করছিল। আমি একঝলক দেখেছি। কী দেখতে গো বউদি। লাল পাড় জামদানি পড়েছে আর কপালে এত্তবড় একটা লাল টিপ। অনেকটা লিলি চক্রবর্তীর মতো দেখতে।’
মানসীর মনে মেঘ জমে। ক’দিন ধরে লক্ষ করছে বিশেষ কোনও একটা ফোন ধরতে সঞ্জয়  বারান্দায় চলে যায়। তারপর নিচু গলায় কথা বলে, কথা বলতে বলতে হাসে। সব লক্ষণ একেবারে দু’য়ে দু’য়ে চারের মতো যে মিলে যাচ্ছে। সে শঙ্কিত গলায় জিজ্ঞেস করল, ‘বুড়ি লিলি না জোয়ান লিলি?’
‘জোয়ান নয়, আবার তেমন বুড়িও নয়। এই তোমার মতন।’
মানসী ফোনে ধরার চেষ্টা করে সঞ্জয়কে। ফোন সুইচড অফ। মানসীর মনে হল সঞ্জয় নিশ্চয় গাড়ি নিয়েই বেরিয়েছে। তাহলে তো রতন আছে সঙ্গে। রতনকে ফোনে পাওয়া গেল এবং জানা গেল ওরা সিঁথিতেই আছে। 
রতনের কাছে আরও জানা গেল, ‘কাকাবাবু বলল, বুঝলি রতন সেই কলেজের বান্ধবী আমার। এত দিন পর আজ পয়লা বৈশাখে তার বাড়ি যাচ্ছি, ভালো মিষ্টি নিয়ে যেতে হবে তো। তারপর বড় মিষ্টির দোকান থেকে এত্ত বড় হাঁড়ি ভর্তি রসগোল্লা আর বড় প্যাকেট ভর্তি দামি সন্দেশ কিনল। আমিই তো দোকান থেকে বয়ে আনলাম, আবার ওই বাড়িতে বয়ে নিয়ে গেলাম। ঠিক করেছি না কাকিমা? আমি থাকতে কাকাবাবু অত ভারী ভারী ওজন বইবে কেন?’
‘আদিখ্যেতা!’ বলে রাগে ফোন কেটে দেয় মানসী। 
সরমা জিষ্ণুর ঘরের দিকে উঁকি মেরে দেখে নিয়ে মানসীর কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বলল, ‘ব্যাপারটা খুব একটা সুবিধের নয় গো বউদি। শুনলে তো কলেজে একসঙ্গে পড়ত। আমার মনে হচ্ছে দাদাবাবু প্রেমে পড়েছে। নইলে ওই বউটার সঙ্গে অমন মিষ্টি করে হেসে হেসে কথা বলবে কেন? আর আমি তো একবার আড় চোখে দেখলাম, বউটা মনে হল ফ্লাইং কিস দিল দাদাবাবুকে। ও পাড়ার অয়ন ঘোষাল, ওই যে গো টাক মাথা বুড়ো লোকটা, সেও তো নাকি এমনি করেই ভিডিও কল করত। তারপর একদিন সব জানাজানি হতে বউকে ডিভোর্স দিয়ে বাড়ি ছেড়েই চলে গেল। মনে নেই? এই তো গেল বচ্ছরের কথা।’
মানসী এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। কাঁদ-কাঁদ মুখে কঁকিয়ে বলল, ‘কী বলছিস রে সরমা! আমার তো হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে রে।’
‘তাহলে আর বলছি কী বউদি। নইলে বচ্ছরের প্রথম দিনেই তোমাকে না বলে কয়ে বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করার জন্য অমন ফসফস করে সেন্ট মেখে বেরিয়ে যায়?’
‘সে কী রে, সেন্ট মেখেছে আগে বললি না তো।’
‘সব কথা বলার আর সময় দিলে কোথায়?’
মানসী এবার কেঁদেই ফেলল। সরমা মানসীর হাত ধরে বলল, ‘এখন ভেঙে পড়ার সময় নয় গো বউদি। শক্ত হও। রিমঝিমদিকে একটা খবর দাও। ওরাও আসুক। তারপর সবাই মিলে একটা কিছু কর। আমার বোনের শ্বশুরবাড়ির ওদিকে ভালো বশীকরণের লোক আছে, মাচানবাবা। সকাল থেকে লোক লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। চাইলে তার কাছ থেকে একটা তাবিজ-কবচ আনিয়ে দিতে পারি। দেখবে ওসব ভূত মাথা থেকে নেমে যাবে।’ 
মানসী খানিকক্ষণ থম মেরে বসে থাকে। এ তো আর যেমন তেমন ভূত নয়, একেবারে শাঁখা-সিঁদুর পরা শাঁকচুন্নি। ঘাড় না মটকে কি নামবে? সঞ্জয় ওর থেকে বছর চারেকের বড় হলেও এখন আর বয়সের ফারাকটা বোঝা যায় না। বরং বেশ খানিকটা মুটিয়ে গিয়ে তার নিজের চেহারায় একটু বুড়োটে ছাপ পড়েছে। ওদিকে সঞ্জয়ের প্রায় ছ’ফুট হাইট, এখনও টানটান চেহারা। মাথা ভর্তি কাঁচা-পাকা চুল। যে কোনও পোশাকে মানানসই। আর ধুতি-পাঞ্জাবি পরলে বেশ একটা অভিজাত ভাব ফুটে ওঠে চেহারায়। মেজাজ ভালো থাকলে চমৎকার রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়। সব মিলিয়ে মাঝ বয়সি যে কোনও মহিলাই সঞ্জয়ের প্রেমে পড়ে যেতে পারে। আবার এই বয়সে নাকি পুরুষ মানুষের প্রেমের ইচ্ছে নতুন করে জেগে ওঠে। আর ভাবতে পারছে না মানসী। জীবনের শেষ প্রহরে এসে কি এই ছিল পাওনা? তারপর আর কিছু ভাবতে না পেরে মেয়েকে ফোন করে। ‘শিগরিরি আয়, তোর আদরের বাপি ...।’ এরপর আর কিছু বলতে পারে না মানসী। আসলে কী বলবে ঠিক ভেবে পায় না। হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।

এমন ফোন পেলে যা হওয়ার তাই হল। রিমঝিমও ‘কী বলছ গো মা, বাপির সঙ্গে তো কাল রাত্তিরেও কথা হল,’ বলে কাঁদতে শুরু করে। পয়লা বৈশাখে অফিস ছুটি। তাই শৌর্যও বাড়িতেই ছিল। সে ছুটে এসে রিমঝিমের হাত থেকে ফোন তুলে নেয়। তারপর শাশুড়ি মাকে শান্ত করে সব কথা শোনে। ফোন স্পিকারে না থাকলেও পাশ থেকে রিমঝিম সবই শুনতে পাচ্ছে। প্রথমে সে সাংঘাতিক কিছু ভেবে ফেলেছিল। আস্তে আস্তে তার মুখ চোখ বদলাচ্ছে। ওদিকে শৌর্যর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে যেন মজা লুটছে। রিমঝিম ফোন কেড়ে নিয়ে মাকে বলল, ‘এসব কথা আমাকেই তো বলতে পারতে। জামাইকে বলার কী ছিল। এখন রাখ এক্ষুনি আসছি আমরা।’
শৌর্য এমন সুযোগ ছাড়বে কেন। বেশ রসিয়ে বলল, ‘তোমার বাপি তো খেলা জমিয়ে দিল গো। বাষট্টি বছরে পৌঁছে কলেজের বান্ধবীর সঙ্গে প্রেম। আহা কী রোমান্টিক! কী ইনস্পায়ারিং ক্যারেক্টার!’
রিমঝিমের প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে। কিন্তু বিশেষ কিছু বলতে পারছে না। ব্যাট ছাড়া ক্রিজে নেমে পড়ার মতো অবস্থা ওর। সব রাগ আছড়ে পড়ছে বেচারা তুতুলের ওপর। তিন বছরের তুতুল সদ্য গুছিয়ে কথা বলা শিখেছে। সে বলে, ‘আমি আবাল কী কলেছি?’ 
শৌর্য তুতুলকে কোলে তুলে নিয়ে গলা তুলে বলে, ‘তুমি কিছু করনি সোনা। যা করার তা তোমার দাদুভাই করছে। স্লগ ওভারে চালিয়ে খেলছে।’

চতুর্দিকের এত সবকিছুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিরক্ত জিষ্ণু। তার নিজের দু’বছরের প্রেমটা সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রায় কেটে গেছে। সিঞ্জিনী বিয়ের জন্য তাগাদা দিচ্ছিল। কারণ বাড়িতে নাকি চাপ বাড়ছে। কিন্তু জিষ্ণু বাড়িতে জানানোর জন্য আর একটু সময় চাইছিল। শৌর্যদাকে শুধু জানিয়েছিল। শৌর্যদা বলেছিল, ‘এত তাড়াহুড়োর কী আছে ব্রাদার। বাড়িতে না জানিয়ে প্রেম করা একটা দারুণ থ্রিলিং ব্যাপার, ঠিক ফ্রিজ থেকে চুরি করে মাখন খাওয়ার মতো। সবাইকে জানিয়ে-টানিয়ে বিয়ে করলেই তো সব শেষ। এই আমায় দেখছ না? লাইফ হেল হয়ে যাবে ভাই। প্রেম হল গিয়ে বসন্ত ঋতু, একটা ফুরফুরে ব্যাপার। আর বিয়ে হচ্ছে বসন্তের পরের স্টেজ, প্রখর গ্রীষ্ম, জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাবে। যতদিন পার বসন্তে আটকে থাক।’ জিষ্ণুও তাই প্রেমপর্ব টেনে যাচ্ছিল। কিন্তু বেশি টানতে গিয়ে ছিঁড়েই গেল। শেষমেশ খেপে গিয়ে সিঞ্জিনী এখন আর কথাই বলছে না। এদিকে যা শোনা যাচ্ছে সব যদি সত্যি হয় তাহলে বাবা তার পুরনো প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার জন্য পয়লা বৈশাখে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে পৌঁছে গেছে। এখন যা পরিস্থিতি নিজের বিয়ের বদলে বাপের বিয়ে না খেতে হয়।

রিমঝিমরা বাড়িতে ঢোকার মুখেই রতনের ফোন এল, দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে তিনি ফিরবেন। রতন জানাল, ‘কাকাবাবু আমাকেও এখানে খেয়ে নিতে বলছে।’
মানসী রাগে ফুটছে, ‘আমার শ্রাদ্ধতেও গিলিস হতভাগা। কিন্তু তোর কাকাবাবু নিজে ফোন না করে তোকে দিয়ে ফোন করাচ্ছে কেন?’
‘কাকাবাবুর ফোন তো খারাপ হয়ে গেছে। আর কাকাবাবু ফোন করবে কী। এ বাড়ির কাকিমণি, ওই যে গো কাকাবাবুর সঙ্গে কলেজে পড়ত, তার সঙ্গে গান গাইছে কাকাবাবু। কী সুন্দর গলা কাকাবাবুর! কেউ ছাড়তে চাইছে না। আরও কত লোক এসেছে এ বাড়িতে। উৎসব চলছে গো কাকিমা।’
মানসী ফোন কেটে দিয়ে নিজের মনেই গজগজ করতে থাকে, উঁ, কাকিমণির সঙ্গে গান গাইছে। এদিকে আমার সঙ্গে একটু হেসে কথাও বলতে পারে না। প্রেম একেবারে উথলে পড়ছে। আসুক বাড়ি। সরমাকে বলে, ‘তুই শিগগির তোর ওই মাচানবাবাকে খবর দে। এ বাড়িতে আসতে হবে, এক্ষুনি, যা লাগে লাগুক।’ 
শৌর্য রিমঝিমকে শুনিয়ে বলল, ‘বাবা বোধহয় একেবারে ফাইনাল করেই ফিরবে।’

বিকেলের মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাচানবাবার জন্য ছাদে মাচা বাঁধা হয়ে গেছে। পাড়ার বোস গিন্নি কোত্থেকে খবর পেয়ে হাজির হয়েছে। মানসী নিশ্চিত, সরমাই খবর পাচার করেছে। ওর বোন বোস গিন্নির বাড়িতে কাজ করে। এ বাড়ির ব্রেকিং নিউজটা বোনের মাধ্যমেই লিক করিয়েছে। কিন্তু সরমাকে ধরা যাচ্ছে না, সে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। 
বোস গিন্নি হাতে করে একটা পুঁচকে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে এসেছে। প্যাকেটটা মানসীর হাতে তুলে দিয়ে বলল, ‘নতুন বছরে একটু দেখা করতে এলাম ভাই। তুমি নাকি সকালে পড়ে গিয়েছিলে?’ তারপর মানসীর উত্তরের অপেক্ষা না করেই বলতে থাকে, ‘দেখ, এই বয়সটা তো খুব খারাপ। কার যে কখন পা পিছলে যায় বলা মুশকিল।’
কথার ইঙ্গিত ধরতে অসুবিধে হয় না মানসীর। মনের রাগ মনেই চেপে রেখে ঠোঁটে হাসি লেপটে বলে, ‘তোমরা তো আছ, পড়ে গেলে একটু দেখ না হয়।’ 
সঞ্জয় হাসি মুখ নিয়ে বাড়ি ফিরল শেষ বিকেলে। পিছনে মিষ্টির হাঁড়ি হাতে রতন। রাগে মানসীর গা জ্বলে যাচ্ছে কিন্তু বোস গিন্নি বসে থাকায় ফেটে পড়তে পারল না। সঞ্জয় নিজস্ব মেজাজে সোফায় গা এলিয়ে বসে বলল, ‘বুঝলে মানু, বিয়েটা একেবারে ঠিক করেই ফেললাম, এবার শুধু তারিখটা তোমরা ঠিক কর।’
মানসী থপ করে সোফায় বসে পড়েছে। রিমঝিম মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে, জিষ্ণু নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বাপির কথা শুনে পুরো ভেবলে গেছে। একমাত্র বোস গিন্নির চোখে মুখে খুশির ঝিলিক, ‘কী বলছেন দাদা, এই বয়সে বিয়ে একেবারে ঠিক করে ফেললেন?’
সঞ্জয় ভারিক্কি স্বরে বলল, ‘এই বয়সেই তো মানুষ অভিজ্ঞতায় ভর করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়।’
মানসী ডুকরে কেঁদে ওঠে। শৌর্য বলে, ‘এত কান্নাকাটির কী আছে মা? বিয়ে ঠিক হয়েছে, শাঁখ বাজান, উলু দিন, সবাইকে মিষ্টি খাওয়ান।’
শৌর্য যে এতটা ফক্কড়ি করবে ভাবতে পারেনি রিমঝিম। ধমকে বলে, ‘কী অসভ্যতা করছ শৌর্য?’
সঞ্জয় মেয়েকে থামিয়ে বলে, ‘অসভ্যতার কী আছে? আজ বাদে কাল বিয়ে, বাড়িতে শাঁখ বাজবে না?’ 
শৌর্য এবার এগিয়ে আসে, ‘বাবা, অনেক নাটক হয়েছে, এরপর আর বাড়াবাড়ি হলে মায়ের হার্ট অ্যাটাক হবে। যতই বকাঝকা করুক হার্ট তো আপনাকেই দিয়ে রেখেছে।’
সঞ্জয় হা হা করে হাসিতে ফেটে পড়ে, ‘ভালো বলেছ। আরে তুমিই তো খবরটা দিলে। নইলে হতভাগা তো আমাদের কিছু না জানিয়ে হাত-পা ছড়িয়ে বসে ছিল।’
রিমঝিম থাকতে না পেরে শৌর্যকে বলল, ‘কী হচ্ছে একটু খুলে বলবে কি?’
শৌর্য জিষ্ণুর প্রেম কাহিনি সংক্ষেপে বলার পর সঞ্জয় বলল, ‘তারপর শৌর্য ফেসবুক খুলে মেয়েটির ছবি দেখাতে জানতে পারলাম, আরে, এ তো আমার কলেজের বান্ধবী অঞ্জনার মেয়ে। ব্যস, মেসেঞ্জারে মেসেজ করে ফোন নম্বর নিয়ে অঞ্জনার সঙ্গে যোগাযোগ করলাম।’
শৌর্য বলল, ‘আমিই বললাম, বাবা, বিয়ের পাকা কথা পয়লা বৈশাখে সারুন। আপনার ছেলে, এসো হে বৈশাখ, গেয়েই না হয় জীবনের অগ্নিকুণ্ডে প্রবেশ করুক।’
রিমঝিম বলল, ‘এসব তো এমনিই করতে পারতে। এত নাটক করতে গেলে কেন?’
সঞ্জয় হাসতে হাসতে বলল, ‘তোর মা যা সন্দেহবাতিক, তার সঙ্গে সরমা আছে ধুনো দেওয়ার জন্য। মনে হল ওদের একটু ঘোল খাওয়াই। সরমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ভিডিও কল করলাম। আর রতনকে দিয়ে ফোনে দুয়েকটা ইনফরমেশন দিলাম। ব্যস, বাকি গল্পটা ওরাই তৈরি করে নিয়েছে।’
সারাদিনের মেঘাচ্ছন্ন আকাশ যেন হঠাৎই ঝলমলে সান্ধ্য জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে। এমন আনন্দের আবহে একমাত্র বোস গিন্নি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে আছে আর ভাবছে মিষ্টি কেনার টাকাটা জলে গেল। 
14th  April, 2024
পয়লা বৈশাখ আজও বাঙালিরই আছে

পুরনো সময়কে পাশে সরিয়ে রেখে আরও একটি নতুন বছর। বাংলা নববর্ষের সঙ্গে দুনিয়ার সব প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাঙালির এক আত্মার টান। নব উদ্দীপনা, নব আনন্দের এই জোয়ারে নতুনকে বরণ করে নিতে তৈরি বাংলা সংস্কৃতি জগতের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বরাও। কেউ ফিরে গিয়েছেন পুরনো দিনে। কেউ আবার বলেছেন নতুন ও পুরনোর মেলবন্ধনের কথা। বাদ যায়নি ভূরিভোজ থেকে হালখাতার স্মৃতিরোমন্থনও। বিশদ

14th  April, 2024
হে নূতন

একটি নরম ভোর। নির্মল। স্নিগ্ধ। জানলা খুললেই মুখের উপর ছড়িয়ে পড়ে আলো। গাছের পাতায় লাগে মৃদু হাওয়া। ভেসে বেড়ায় অচেনা গন্ধ। মুখর হয় কোকিলের কুহুতানে।
বিশদ

14th  April, 2024
বাংলা নববর্ষ বাঙালি সংস্কৃতি

নববর্ষ আর পয়লা বৈশাখ বলতেই আমাদের আগে কী মনে পড়ে? চৈত্র সেলের শেষলগ্ন, দোকানে দোকানে হালখাতা, বাঙালি খাবার আর ভূরিভোজ, নতুন পোশাক, প্রভাতফেরি, মঙ্গল শোভাযাত্রা আর রবিঠাকুরের গান।
বিশদ

14th  April, 2024
চৈত্রের চিঠি
 

ওহ সরি, তোর এত সুন্দর নামটা...সেই বার বার বুঁচকি বলেই ডেকে ফেলি।  আসলে ঐন্দ্রিলা বললে না, তোকে কেমন পর পর লাগে।  যাই হোক, তুই যখন এই চিঠি পাবি, তখন তোর বাবা আর মা পরামর্শ করে আমাকে তোদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।  
বিশদ

14th  April, 2024
গাজন মেলার পালা

এই সময় অর্থাৎ চৈত্রমাস পড়লেই আমাদের ‘আকুপাকু মন’ সেই ছেলেবেলায়, কিশোরবেলার দিনে ফিরে যেত। শুধু কী মন, আমাদের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিও যেন ফিরে যেত অন্য এক সম্পূর্ণ নতুন প্রকৃতি রচনায়। যেদিকে তাকাও লালে লাল। পলাশ শিমুলের কী মোহময় বাহার।
বিশদ

14th  April, 2024

Pages: 12345

একনজরে
অপহরণের ১৪ দিনের মাথায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল এক হামাস জঙ্গি। বলেছিল, ‘সবাইকে মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু তুমি এখানে আমার সঙ্গে থাকবে আজীবন। তুমিই আমার সন্তানদের ...

জল্পনাই সত্যি হল। আইএসএলে ব্যর্থতার জেরে কোচ ইভান ভুকোমানোভিচকে ছেঁটে ফেলল কেরল ব্লাস্টার্স। শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে তা জানিয়েও দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, চলতি আইএসএলে ভালো শুরু করলেও ক্রমশ ছন্দ হারায় দক্ষিণের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি দল ...

পুকুর খনন করতে গিয়ে অজানা জন্তুর হাড়গোড় উঠে আসতেই শুক্রবার চাঞ্চল্য ছড়ায় ফালাকাটা ব্লকের দেওগাঁও গ্রাম পঞ্চায়তের বেলতলি ভাণ্ডানি গ্রামে। স্থানীয়দের দাবি, ওই হাড় পূর্ণবয়স্ক গণ্ডারের হতে পারে ...

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) বৈঠক বন্ধ করার নির্দেশ দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর। শুক্রবার দপ্তরের তরফে রেজিস্ট্রারকে এই মর্মে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ২৯ এপ্রিল বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পারিবারিক মঙ্গল অনুষ্ঠান ও পুজোপাঠে আনন্দলাভ। বন্ধু বিবাদের যোগ আছে। বিদ্যাচর্চায় উন্নতি। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৫২৬: মুঘল সম্রাট বাবর দিল্লির সুলতানকে পরাজিত করেন
১৬৬৭: অন্ধ এবং দরিদ্র ইংরেজ কবি জন মিলটন তার প্যারাডাইজ লস্ট কাব্যের স্বত্ব ১০ পাউন্ডে বিক্রয় করেন
১৮৭৮: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নারীশিক্ষা দানের ব্যবস্থা করে ও নারীদের এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসার সম্মতি প্রদান করে
১৮৮১: দাদাঠাকুর ওরফে শরচ্চন্দ্র পণ্ডিতের জন্ম
১৮৯৭: বাঙালি ঐতিহাসিক, ছন্দবিশারদ ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ প্রবোধচন্দ্র সেনের জন্ম
১৯১২ : ভারতীয় অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী এবং নৃত্য পরিচালক জোহরা সেহগলের জন্ম
১৯৩৫: বাঙালি ভূতত্ববিদ, বিজ্ঞানী ও সমাজকর্মী প্রমথনাথ বসুর মৃত্যু  
১৯৩৬: ইংরেজি গণিতবিদ, জীববিজ্ঞানী ও দার্শনিক  কার্ল পিয়ারসনের মৃত্যু
১৯৬০: সাহিত্যিক রাজশেখর বসু ওরফে ‘পরশুরাম’-এর মৃত্যু
১৯৬২:  বাঙালি রাজনীতিবিদ এ. কে. ফজলুল হকের মৃত্যু
১৯৬৮: দাদাঠাকুর ওরফে শরচ্চন্দ্র পণ্ডিতের মৃত্যু
১৯৭২: অ্যাপোলো ১৬ মহাকাশযান পৃথিবীতে ফিরে আসে
১৯৮১: জেরক্স পার্ক বাজারে আনে কম্পিউটারের মাউস
১৯৮৯: বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ে ৫০০ মানুষ নিহত হয়
১৯৯২: রাশিয়া ও অন্যান্য প্রজাতন্ত্রগুলো আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকে যোগ দেয়
১৯৯৩: ডাকারে যাওয়ার পথে লিবরেভিল্লেতে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান জাম্বিয়া জাতীয় ফুটবল দলের সমস্ত সদস্য
১৯৯৪: দক্ষিণ আফ্রিকায় সাধারণ নির্বাচনে প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ পান কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকরা
২০০৬: নিউ ইয়র্ক সিটিতে যেখানে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ছিল সেখানে ফ্রিডম টাওয়ার তৈরির কাজ শুরু হয়
২০০৯: ভারতীয় অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক ফিরোজ খানের মৃত্যু
২০১৭: অভিনেতা বিনোদ খান্নার মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৪৮ টাকা ৮৪.২২ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৬ টাকা ১০৫.৯৯ টাকা
ইউরো ৮৭.৯৩ টাকা ৯১.০৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৩,১০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,৪৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৮৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৪ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪। তৃতীয়া ৭/৫০ দিবা ৮/১৯। জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র ৫৮/১৩ রাত্রি ৪/২৮। সূর্যোদয় ৫/১০/৪৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/৪৯। অমৃতযোগ দিবা ৯/২৭ গতে ১২/৫১ মধ্যে। রাত্রি ৮/১২ গতে ১০/২৭ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৭ গতে ১/২৭ মধ্যে পুনঃ ২/১২ গতে ৩/৪১ মধ্যে। বারবেলা ৬/৪৬ মধ্যে পুনঃ ১/১০ গতে ২/৪৬ মধ্যে পুনঃ ৪/২৩ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৭/২২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৫ গতে উদয়াবধি। 
১৪ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪। তৃতীয়া দিবা ৬/৪০। জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র রাত্রি ২/৫৩। সূর্যোদয় ৫/১১, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৯/২২ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/১৬ গতে ১০/২৭ মধ্যে ও ১১/৫৬ গতে ১/৫২ মধ্যে ও ২/৩ গতে ৩/৩৩ মধ্যে। কালবেলা ৬/৪৭ মধ্যে ও ১/১১ গতে ২/৪৭ মধ্যে ও ৪/২৩ গতে ৫/৫৯ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/২৩ মধ্যে ও ৩/৪৭ গতে ৫/১১ মধ্যে। 
১৭ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: রাজস্থান ৭ উইকেটে হারাল লখনউকে

11:20:50 PM

আইপিএল: ২৮ বলে হাফসেঞ্চুরি সঞ্জু স্যামসনের,রাজস্থান ১৭৮/৩(১৭.৩ ওভার), টার্গেট ১৯৭

11:01:00 PM

আইপিএল: রাজস্থান ১৪৪/৩ (১৫ ওভার), টার্গেট ১৯৭

10:59:18 PM

আইপিএল: ১৪ রানে আউট রিয়ান পরাগ,রাজস্থান ৭৮/৩(৮.৪ ওভার), টার্গেট ১৯৭

10:27:57 PM

আইপিএল: ২৪ রানে আউট জয়সওয়াল,রাজস্থান ৬০/২(৬.১ ওভার), টার্গেট ১৯৭

10:18:35 PM

আইপিএল: ৩৪ রানে আউট বাটলার,রাজস্থান ৬০/১ (৫.৫ ওভার), টার্গেট ১৯৭

10:11:30 PM