Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

 ‘যত মত তত পথ’
পূর্বা সেনগুপ্ত

দক্ষিণেশ্বরের দেবালয়। বিরাট বারান্দার এক কোণের ঘরে বসে ভক্তসঙ্গে ধর্মপ্রসঙ্গ করছেন শ্রীরামকৃষ্ণ। দেবালয়ের পাঁচ টাকা মাইনের পুরোহিত হলে কি হবে...মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাণী রাসমণি থেকে তাঁর জামাই মথুরবাবু, সকলেই তাঁকে সমীহ করে চলেন। প্রাণ দিয়ে ভালোও বাসেন। কারণ, সরল এই ব্রাহ্মণ মানুুষটি হলেন খাঁটি সোনা। তাঁর জীবনে কোথাও ধর্মভাবনার এতটুকু ছেদমাত্র নেই। তৈলধারার মতোই সর্বদা তা উত্‌সারিত। বাস্তবতার খুঁটিতে বাঁধা তাঁর উপদেশ। এই জগতে কেমন করে থাকতে হবে, তা-ই সেদিন গল্পাকারে বর্ণনায় মেতেছিলেন তিনি। কী সেই কাহিনি?
এক বৈষ্ণব মঠ, সেখানে একদিন সকালের অরুণ আলোয় গুরুদেব শিষ্যদের উপদেশ দিচ্ছেন—‘এই জগতের সব কিছুই তিনি! সর্বত্র নারায়ণ বিরাজ করছেন। কেবল প্রকৃতিতে নয়, প্রতিটি জীবের ভিতরে অধিষ্ঠিত হয়ে বিরাজ করছেন তিনি। তাই কাউকে আঘাত দিতে নেই।’ ঈশ্বর সর্বত্র আছেন, গুরুর মুখে এই সত্য ভালো করে শুনলেন শিষ্যগণ। ভোরের আলো যখন শেষ হল, তখন মধ্যাহ্ন-আহারের জন্য ভিক্ষায় বের হলেন মঠবাসী ভিক্ষু-শিষ্যের দল। মঠের কাছেই রয়েছে এক বাজার। সেখানে গিয়ে ভিক্ষা সংগ্রহের জন্য তৎপর হলেন তাঁরা। ঠিক এমন সময় বাজারের মধ্যে শুরু হল জোর হট্টগোল। আতঙ্কে চিৎকার করছেন অনেকে। সকলের ভীত চীত্‌কারে সচকিত হলেন ভিক্ষুরাও। কী হল? কলরবে শোনা গেল, রাজার পালিত এক হাতি ক্ষেপে গিয়ে এদিকেই আসছে। সামনে যাকে পাচ্ছে তাকেই পিষে দিচ্ছে, না হলে ছুঁড়ে ফেলে আহত করছে। তাই সকলকে সেই ঘাতক হাতির সামনে থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলছেন মাহুত। কলরবের মধ্যেই দেখা গেল সেই হাতির অবয়ব। উপর থেকে মাহুত  যথাসম্ভব উঁচু গলায় চিৎকার করে সকলকে সাবধান করছেন। হাতি যেন মদ পান করে উদ্দাম, মাতাল! সে তার বিরাট চেহারা নিয়ে দ্রুত এগিয়ে আসছে। বাজারের মধ্যে সকলেই সতর্ক ও নিরাপদ দূরত্বে চলে গেলেও একজন স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি হলেন সেই বৈষ্ণব মঠের এক ভিক্ষু। সকালেই গুরুদেব বলেছেন, সর্বভূতে নারায়ণ আছেন। তাহলে এই পাগলা হাতির মধ্যেও তিনি অধিষ্ঠিত! যদি সত্যিই তাই হয়, তবে খামোখা হাতিকে ভয় পাব কেন? বরং তাঁকে স্তবস্তুতি করে তুষ্ট করার চেষ্টা করা উচিত। আর নারায়ণ কখনও তাঁর ভক্তকে কষ্ট দেবেন না। সুতরাং এই পাগলা হাতিকে দেখে পালিয়ে যাওয়ার বদলে তিনি স্তব শুরু করলেন। কারণ, সর্বত্র নারায়ণ—একথা মেনে নিলে কোনও জীবকে দেখেই ভীত হওয়ার কোনও কারণ তো নেই। অল্প সময়ের মধ্যেই সেই পাগলা হাতি এসে হাজির ওই ভিক্ষুর সামনে। চোখের নিমেষে তাঁকে আহত করে সে চলে গেল অন্যদিকে। মঠের অন্য ভিক্ষুরা তাঁর সংজ্ঞাহীন দেহটি নিয়ে দ্রুত মঠে এলেন। দীর্ঘ অনেকক্ষণ শুশ্রূষার পর চোখ মেলে চাইলেন আহত ভিক্ষু। গুরু তাঁকে প্রশ্ন করলেন, ‘কী ব্যাপার! পাগলা হাতির কথা জেনে সকলেই পালিয়ে গিয়েছিল, তুমি পালালে না কেন? কেন নিজেকে বিপদের মুখে নিজেকে নিয়ে গেলে?’ যন্ত্রণা চেপেই আহত ভিক্ষু উত্তর দিলেন, ‘আপনি তো বলেছিলেন, সকল জীবের মধ্যে নারায়ণ আছেন। আমি হাতি নারায়ণের স্তব করছিলাম!’ শিষ্যের উত্তর শুনে মৃদু হেসে উত্তর দিলেন গুরু, ‘বোকা ছেলে! তুমি কেবল হাতি নারায়ণকেই দেখলে? তার উপরে যে মাহুত নারায়ণ বসে তোমায় সামনে যেতে নিষেধ করছিলেন! তাঁর কথা শুনলে না কেন? কেবল হাতি নারায়ণের কথা শুনলে তো হবে না, মাহুত নারায়ণের কথাও শুনতে হবে।’
গল্পটি এখানেই শেষ। কিন্তু তাঁর গভীরতার ব্যাপ্তি গুঞ্জরিত হতে থাকল সকলের মনে। আসলে আমরা আদর্শের অনুসরণ করতে গিয়ে অনেক সময় এই ভুলটি করে বসি। তারপর ভ্রান্ত আদর্শের অনুসরণে নিজেকে ক্লান্ত করে ফেলি। যুগপুরুষ এসেছেন আমাদের ভ্রান্তি দূর করার জন্য। যেমন শ্রীকৃষ্ণ  কুরুক্ষেত্রের প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে অর্জুনকে বলছেন, ‘এ তুমি ক্লিবের মতো কি কথা বলছ পার্থ? এ তোমাকে মানায় না।’ কী বলেছিলেন অর্জুন? আপাতদৃষ্টিতে তা কিন্তু সঠিক বলেই মনে হয়। অর্জুন বলছেন, ‘আমি আত্মীয়বধ করে তাঁদের রক্তমাখা সিংহাসন চাই না। সুতরাং যুদ্ধ করব না সখা! দেখ, আমার হাত থেকে ধনুর্বাণ খসে যাচ্ছে! আমি ঘেমে উঠছি! চারিদিকে আমার আত্মীয়-আমার স্বজন।’ কৃষ্ণ বলছেন, ‘অর্জুন তুমি ক্লিবের মতো কথা বলছ। কারণ, তুমি আদর্শ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছ। তোমাকে ধর্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। আসলে তুমি পরাজয়ের আশঙ্কায় ভীত, যদি হেরে যাও তবে তোমার যশ নষ্ট হবে। তাই তোমার মুখে এখন দয়ার কথা! হে অর্জুন, তুমি এই কথা বলার সময় পাঞ্চালীর উন্মুক্ত কেশের কথা ভাবছ কি? তুমি ক্ষত্রিয়, ধর্মরক্ষা তোমার কর্তব্য ও দায়িত্ব। তাতে তোমার নিজস্ব কোনও যুক্তি বা মত থাকতে পারে না। সুতরাং যুদ্ধ কর, জয়লাভের মাধ্যমে যশ লাভ কর!’
শ্রীরামকৃষ্ণও এক ক্লেদে পূর্ণ, ভ্রান্ত যুগে বাস করছেন। সেখানে কোনটি ধর্ম আর কোনটি অধর্ম, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার কোনও মানুষ নেই। নেই কোনও দেখা লোক! শ্রীমা সারদার ভাষায়, ঈশ্বরদ্রষ্টা পুরুষ। যিনি ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষ করে আমাদের কাম্য পথটি চিহ্নিত করবেন। ভীত, অনুকরণপ্রিয়, নিজের ধর্ম সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অজ্ঞ সমাজের কাছে তিনি সঠিক পথটি তুলে ধরেছিলেন নিজের গভীর সাধনজীবনলব্ধ অনুভূতির প্রেক্ষিতে। তাঁর ধর্ম জীবনের প্রেক্ষাপটে ছিল ভারতের অবনমিত সমাজের রূপরেখা। স্বদেশ তখন পরাধীন। দেশের সঙ্গে মানুষের মনও দাসত্বে নিবিষ্ট হয়েছে! নিজের সংস্কৃতি-সভ্যতা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ বিস্মৃত। ধর্ম কেবল দু’টি ক্ষেত্রে বিতর্কে এসে দাঁড়িয়েছে—ঈশ্বর সাকার না নিরাকার? দ্বিতীয় প্রশ্ন, নিরামিষ আহার উত্‌কৃষ্ট নাকি আমিষ? হিন্দু সমাজের নানা শাখা পরস্পরের মধ্যে কোঁদলে মেতেছে। শাক্ত আর বৈষ্ণব একেবারে বিপরীতমুখী জীবনযাত্রা নিয়ে একে অপরের নিন্দায় ব্যস্ত। এছাড়া, শৈব, সৌর, গাণপত্য—সবই নিজেদের শ্রেষ্ঠ বলে প্রমাণে ব্যস্ত। তারই মধ্যে বিদেশি শক্তি আমাদের প্রতীক পুজোর নিন্দায় পঞ্চমুখ। তাকে তারা পুতুলপুজো বলে নিন্দা করছে এবং সেই নিন্দা জগতের কাছে বিতরিত হচ্ছে। কার্ল মার্ক্স ভারত সম্পর্কে বলেছেন, ‘এ হল বিচিত্র দেশ। এখানে গোরুকে, হনুমানকে পুজো করে, রথের চাকায় প্রাণ বিসর্জন দেয়, গঙ্গার জলে সদ্যোজাতকে ভাসিয়ে দেয়। এ তো আদিম যুক্তিহীন সমাজ!’ ঠিক তখনই শ্রীরামকৃষ্ণের জন্ম। এখানে স্মরণে রাখা দরকার, কেবল ভারত ভূমি নয়, সমগ্র বিশ্বেই তখন আদর্শের খরা। প্রচলিত ধর্মীয় কাঠামো মানুষকে তুষ্ট বা তৃপ্ত করতে পারছে না। মানুষের মন কিছু খুঁজে চলেছে। নতুন কিছু বাস্তবতায় সিক্ত, যুক্তিতে ঋদ্ধ সত্যরূপ ধ্রুবতারার খোঁজে ভূমণ্ডলে হাহাকার। আর তখনই শ্রীরামকৃষ্ণের প্রবেশ। স্মরণে আসে তাঁরই শ্রীমুখ কথিত এক দিব্যদর্শন। সপ্তর্ষি মণ্ডলের সাত ঋষি ধ্যানমগ্ন! এমন তাঁদের পবিত্রতা যে দেবতারা পর্যন্ত সেই স্থানে প্রবেশ করতে অক্ষম। এই সাত ঋষির তেজ থেকে জন্ম নিলেন এক শিশু, আর সেই শিশু জন্মমাত্র প্রধান ঋষির গলাটি জড়িয়ে ধরে পরম মমতায় বলে উঠলেন, ‘আমি যাচ্ছি, তুমিও এসো!’ প্রধান ঋষি তাঁর স্মিত ধ্যানতৃপ্ত নয়নদু’টি একটু উন্মোচন করে শিশুটির দিকে তাকালেন এবং তাঁর প্রস্তাবে সম্মতি দিলেন। এই শিশুটিই হলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। আর সেই প্রধান ঋষি হলেন তাঁর বার্তাবহ স্বামী বিবেকানন্দ।
মহান চরিত্র সৃষ্টি হয় সমাজকে কেন্দ্র করে। সমাজ যেমন তাঁকে সৃষ্টি করে, ঠিক তেমনই সমাজকে তিনি এক নতুন পথের দিশাও দেখিয়ে যান। শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধেও আমরা এই কথাটি বলতে পারি। এক বিরাট সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে শ্রীরামকৃষ্ণের আবির্ভাব। শ্রীরামকৃষ্ণের আগে এসেছেন বুদ্ধ। এসেছেন শঙ্করাচার্য, বাংলার চৈতন্য মহাপ্রভু। যিনি বঙ্গদেশ এবং দক্ষিণ ভারতকে অচিন্ত্য ভেদাভেদবাদের তত্ত্বের গভীরতাকে জ্ঞান-আলোয় উদ্ভাসিত করে এবং ‘কমন প্রেয়ার’ বা কীর্তনের রসে ভাসিয়ে নব-ভক্তি আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলেন। তাঁকেও এক ইসলাম ধর্ম ব্যতিরেকে অন্য কোনও ধর্মের সঙ্গে হিন্দুধর্মের তুলনার সম্মুখীন হতে হয়নি। কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণের ক্ষেত্রে যুগের ধর্মীয় প্রেক্ষাপট ছিল বিচিত্র। বৌদ্ধ ধর্ম তখন হিন্দুধর্মে শাক্ত তন্ত্রের ধারার সঙ্গ মিশ্রিত হয়ে গিয়েছে। শঙ্করাচার্যের অদ্বৈতবেদান্ত চর্চা তখন কেবল পুঁথিগত বিদ্যায় সীমাবদ্ধ। সমগ্র ভারতে বেদান্ত চর্চা হলেও বাংলাজুড়ে শাক্তপ্রভাব। মূল তন্ত্রের ধারা বা বেদান্তের সাধনা—কোনওটিরই দেখা বঙ্গদেশে মেলে না। তার বদলে সৃষ্টি হয়েছে অজস্র বৈষ্ণব আখড়া, কর্তাভজাদের আখড়া-যা তন্ত্রের নিম্নগামী গতির ফসল। সিদ্ধাই দেখাতে কেবল পটু এমন অসংখ্য ধর্মাচারের অস্তিত্ব। ইসলামের সঙ্গে যিশুর প্রদর্শিত পথ ধরে চলা খ্রিস্টানদেরও প্রিয় হয়ে উঠেছে এই বঙ্গদেশ। পৃথিবীতে যত ধর্ম আছে, প্রতিটিই কোনো না কোনভাবে ভারতভূমিকে স্পর্শ করেছে।
রানি রাসমণি নতুন গড়ে ওঠা রাজধানী কলকাতার উপকন্ঠে যে মন্দির গড়ে তুলেছিলেন, তা শুধুমাত্র মন্দির ছিল না। বরং তা পরিণত হয়েছিল আধ্যাত্মিক গবেষণাগারে। সেই মন্দিরে সাধুদের সিধে ও বসবাসের সুযোগ থাকায় বিভিন্ন ধরনের রমতা সাধুর দল মন্দিরে কিছুদিনের জন্য বাস করে যেতেন। পঞ্চবটীর জঙ্গলের পাশে গঙ্গার ধারে তাঁদের ধর্মালোচনা সভা বসত। শ্রীরামকৃষ্ণ সেই সমস্ত আলোচনা শুনতেন। যে সব সন্ন্যাসী পথভুলে বিভ্রান্তিতে রয়েছেন, তাঁদের পথও দেখাতেন তিনি। নিজের গুরু তোতাপুরী, যাঁর কাছে শ্রীরামকৃষ্ণ অদ্বৈতসাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন, তাঁর জীবনে শক্তিকে না মানার ভ্রান্তি  দূর করেছিলেন তিনি। গুরুগ্রহণ করেছেন, সিদ্ধিলাভ করেছেন এবং পরবর্তী অধ্যায়ে গুরুকেই শিক্ষাদানে সমৃদ্ধ করেছেন। সমস্ত বৈচিত্রের মধ্যে বসে তিনি প্রতিটি ধর্মকে, ধর্মভাবকে নিজের জীবনে সাধন করে সিদ্ধিলাভ করেছেন। তারপর তিনি বলেছেন, পথ অনেক কিন্তু গন্তব্য একই। ঈশ্বর একই। তাঁর কাছে নানা পথে যাওয়া যায়। আমরা সাধারণভাবে ‘যত মত তত পথ’—বাক্যটি বলি বটে, কিন্তু  শ্রীমহেন্দ্রগুপ্ত কথিত শ্রীশ্রীকথামৃতের মধ্যে তা পাওয়া যায় না। সেখানে আছে—‘মত-পথ।’ প্রতিটি মতাদর্শ একটি নবীন পথকে দেখায়। ‘যত মত তত পথ’—বাক্যটি শ্রীরামকৃষ্ণের মানসপুত্র স্বামী ব্রহ্মানন্দের চয়ন করা। ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের উপদেশ’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গ্রন্থের মূল্যও কম নয়। এখানে বলা বাঞ্ছনীয় যে, কেবল বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে শ্রীরামকৃষ্ণ সমন্বয় সাধন করেননি। তিনি হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন শাখাগুলির মধ্যেও সমন্বয় সাধন করেছিলেন। শৈব তাঁর কাছে উপস্থিত হলে মনে করত, তিনি শৈব সাধক। আবার শাক্ত বা বৈষ্ণবের ক্ষেত্রেও তাই। তাঁর নিটোল  ধর্মানুভূতি ফুটে উঠেছিল, কঠোর ধর্ম সাধনের মধ্য দিয়ে। তাঁর সাধন জীবন  গভীর হলেও তিনি কথা বলেছেন সাধারণ মানুষের ভাষায়, আমজনতার জন্য। যখন তিনি যা দেখেছেন, যা শুনেছেন, সবই উপমা আকারে তাঁর মুখ দিয়ে নির্গত হয়েছে। তাঁর সরল, সহজ, অকৃত্রিম ঈশ্বরপ্রাণতার জন্য লোকে তাঁকে ‘জগদম্বার বালক’ বলে চিহ্নিত করেছে। কারণ, তাঁর কাছে জগদম্বা বা ঈশ্বর ছাড়া নিজের কোনও অস্তিত্ব ছিল না। নিজের অহংকে তিনি ঈশ্বরের অঙ্গনে বলি দিয়েছিলেন। তাই তত্‌কালীন সমাজের বিখ্যাত সমাজ-দার্শনিক ও উনবিংশ শতাব্দীর বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে অগ্রগণ্য চরিত্র ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধে বলেছেন, এই জগতে গোরাচাঁদের পর যে শ্রীরামকৃষ্ণ চন্দ্রিমার উদয় হয়েছে, সেই চন্দ্রিমায় কোনও কলঙ্ক নেই। সত্যই তিনি নিষ্কলঙ্ক চাঁদ! জগতের সকলকে স্বীকার করে ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রচার করেছিলেন, ইট-কাঠ –পাথরের দুনিয়ায় বসে তিনি জগতের উদ্দেশ্যে বলে গিয়েছেন, ‘বিশ্বাস কর, মাইরি বলছি, ঈশ্বর আছেন, আছেন, আছেন।...তিনি খুব কান খরগে গা! পিঁপড়ের পায়ের নুপূরের ধ্বনিটুকুও তিনি শুনতে পান।’ অনন্তের আহ্বানে সাধারণ মানুষের কাছে এই দু’টি বাক্যই অনেক আশার, অনেক ভরসার।
17th  March, 2024
চারুলতার অন্দরমহল

‘আশ্বিনের ‘পরিচয়’ খুলে দেখলুম রুদ্রমশাই আবার আমার পিছনে লেগেছেন।... রুদ্রমশাই সাহিত্য বোঝেন কিনা জানি না; সিনেমা তিনি একেবারেই বোঝেন না। শুধু বোঝেন না নয়; বোঝালেও বোঝেন না।’ পরিচয় পত্রিকায় সত্যজিৎ রায়-অশোক রুদ্রের এই চাপানউতোরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘চারুলতা’।
বিশদ

21st  April, 2024
বিদেশে এখনও আমি ‘চারুলতা’

কতদিন হয়ে গেল। এখনও বিদেশে গেলে প্রায় কেউই আমাকে মাধবী বলে ডাকেন না। কী বলে ডাকে, জানেন? ‘চারুলতা।’ শুধু বিদেশে নয়, দেশের অনেক জায়গাতেও। আজ থেকে ৬০ বছর আগেকার কথা। তখন সবে ‘মহানগর’ ছবির শ্যুটিং শেষ হচ্ছে।
বিশদ

21st  April, 2024
অমলকে দেওয়া চারুর খাতাটা বাবা বাড়িতে বসেই ডিজাইন করেছিলেন

তখন আমার বয়স খুবই কম। ১৯৬৪ সালে ‘চারুলতা’ হয়েছিল। আমার বয়স তখন ১১ বছর। তাই স্মৃতি যে খুব একটা টাটকা, এমনটাও নয়। বাড়িতে ‘চারুলতা’ নিয়ে বাবাকে খুবই পরিশ্রম করতে দেখেছি।
বিশদ

21st  April, 2024
আমরি বাংলা ভাষা
অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায়

রোজকার মতো প্রাতঃভ্রমণ সেরে চায়ের দোকানে এসে বসলেন চণ্ডীবাবু। কাগজের দিকে হাত বাড়াতে যাচ্ছিলেন। আর মধ্যেই আমাকে দেখে বলে উঠলেন—
গুড মর্নিং স্যর, হ্যাপি বেঙ্গলি নিউ ইয়ার। বিশদ

14th  April, 2024
রহস্যময় গম্ভীরা

পুরীর গম্ভীরায় জীবনের শেষ আঠারোটা বছর কাটিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। অন্তর্ধানের আগে মহাপ্রভু অন্তিমবারের মতো বের হয়েছিলেন সেখান থেকেই। সেই গম্ভীরা ঘুরে ইতিহাস-রহস্যের অনুসন্ধান করলেন অনিরুদ্ধ সরকার। বিশদ

07th  April, 2024
জিপিও ২৫০

বুধবারের দুপুরবেলা। দোল-হোলি পর্বের টানা ছুটি কাটিয়ে এবার ছন্দে ফেরার পালা। কিন্তু একটু বড় ছুটি পেলেই মানুষের মতো শহরটাকেও জড়িয়ে ধরে আলস্য। অফিস-কাছারি খুলতেই আড়মোড়া ভাঙছে শহর। রাস্তাঘাটে অবশ্য তেমন ভিড় নেই। বিশদ

31st  March, 2024
অন্ধকূপেই ডাকঘরের জন্ম

শহরের বুক থেকে ইংরেজদের পুরনো কেল্লার সীমানা মুছে গিয়েছে কবেই। ফিকে হয়ে এসেছে নবাব সিরাজদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণ, প্রথম যুদ্ধজয় এবং অন্ধকূপ হত্যার স্মৃতি। এমনটাই যে হবে, আগেই অনুমান করতে পেরেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ইংরেজরা।
বিশদ

31st  March, 2024
নানা রঙের দোল

বারসানায় এখন পা-টুকু নিশ্চিন্তে রাখার জো নেই! দেহাতি, দক্ষিণ ভারতীয়, বাঙালি, বিদেশি কে নেই সেই বিখ্যাত ভিড়ে। প্রায় সবার মাথায় রংবেরঙের পাগড়ি। কারও হাতে আবির, তো কারও ক্যামেরা। একসপ্তাহ ধরে চলছে রঙখেলা। হোলি... লাঠমার।
বিশদ

24th  March, 2024
ওপেনহাইমার ও যুদ্ধবাণিজ্য

কয়েক ঘণ্টার মাত্র অপেক্ষা। লস এঞ্জেলসের আলো ঝলমলে ডলবি থিয়েটারে শুরু হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফিল্মি শোবিজ—অস্কার। এবারের অস্কার হুজুগে সারা পৃথিবীর সংবাদ শিরোনামে ‘ওপেনহাইমার’। ক্রিস্টোফার নোলানের এই সিনেমার সঙ্গেই অতীতকে ফিরে দেখলেন মৃন্ময় চন্দ।
বিশদ

10th  March, 2024
এলিট ইতিহাস
কলহার মুখোপাধ্যায়

সে নিজেই একটা ইতিহাস! তবু বেলা না যেতে খেলা তব গেল ঘুচে। তখন নাইট ক্লাব, হুক্কা বার, হ্যাং আউট, শপিং মলের কথা শোনালে মানুষ ভাবতো তামাশা করছে।
বিশদ

03rd  March, 2024
স্বেচ্ছামৃত্যু
 

গ্রিক ভাষায় ‘ইউ’ মানে ভালো আর ‘থ্যানেটোজ’ মানে মৃত্যু। দুইয়ে মিলে ইউথ্যানেশিয়া বা স্বেচ্ছামৃত্যু। গত বছর ভারতে আইনসিদ্ধ হয় প্যাসিভ ইউথ্যানেশিয়া। আইনত বৈধ হলেও, সেই পদক্ষেপকে ঘিরে দানা বাঁধছে সংশয়। স্বেচ্ছামৃত্যুর ইতিবৃত্ত খতিয়ে দেখলেন মৃন্ময় চন্দ
বিশদ

25th  February, 2024
আ’মরি বাংলা ভাষা

আসছে আরও একটা একুশে ফেব্রুয়ারি। হোয়াটসঅ্যাপ যুগে ক্রমে গুরুত্ব হারাচ্ছে দিনটি। তবুও বাংলা ভাষা বেঁচে আছে। থাকবেও। অসম ও বাংলাদেশ ঘুরে এসে লিখেছেন সুখেন বিশ্বাস। বিশদ

18th  February, 2024
সরস্বত্যৈ নমো নমঃ
কৌশিক মজুমদার

আমাদের নয়ের দশকের মফস্বলে উত্তেজনার খোরাক বলতে খুব বেশি কিছু ছিল না। বিশেষ করে আমরা যারা সেকালে ছাত্র ছিলাম, তাদের জন্য। মাস্টারমশাই আর অভিভাবকদের গণ ছাতাপেটাইয়ের ফাঁকে বুধবার সন্ধ্যায় টিভিতে চিত্রহার আর রবিবার সকালের রঙ্গোলিতে কিছু বস্তাপচা গান বাদে গোটা হপ্তাটাই কৃষিকথার আসর আর ‘খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়’-এর মতো নেহাত নিরেস ছিল। বিশদ

11th  February, 2024
কুল খেতে মানা
সন্দীপন বিশ্বাস

স্কুল থেকে ফেরার পথে বিন্তির চোখে পড়ল, বাজারে বিক্রি হচ্ছে বড় বড় কুল। পাশে রয়েছে আপেল কুল, টোপা কুল। তাই দেখে তার জিভে জল এসে গেল। মনে হল, কেটে নুন দিয়ে মেখে খেলে বিকেলটা জমে যাবে। মায়ের কাছে সে আবদার করল, ‘আমায় একটু কুল কিনে দাও না মা!’  বিশদ

11th  February, 2024
একনজরে
বিজেপি সহ তামাম বিরোধীদের কোণঠাসা করতে পুরোপুরি কর্পোরেট ধাঁচে প্রচার পরিকল্পনা সাজিয়েছে তৃণমূল। জনসংযোগই হোক বা তারকা প্রচারককে নিয়ে প্রার্থীর বর্ণাঢ্য রোড শো—সবেতেই থাকছে সেই ...

মাঠের মাঝে হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে। প্রখর রোদে মাটি ফেটে গিয়েছে। বেলা যত গড়াচ্ছে সূর্যের তেজ ততই বাড়ছে। কিন্তু তাতে হেলদোল নেই মণিরা বিবি, প্রমীলা রায়, কবিতা রায়দের। ...

আট ম্যাচে পাঁচটা পরাজয়। প্লে-অফের পথ ক্রমশ কঠিন হচ্ছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। সোমবার সোয়াই মান সিং স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে ৯ উইকেটে ...

বাড়ি ফেরার পথে এক ব্যক্তিকে পথ আটকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাত ৯টা নাগাদ চাঁচল থানার গোয়ালপাড়া এলাকার ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

জাতীয় পঞ্চায়েতী রাজ দিবস 
১০৬১: ইংল্যান্ডের আকাশে হ্যালির ধূমকেতু দেখা যায়
১২৭১ : মার্কো পোলো তার ঐতিহাসিক এশিয়া সফর শুরু করেন
১৯২৬:  যক্ষার ভ্যাকসিন বিসিজি আবিষ্কার
১৯৪২: মারাঠি মঞ্চ অভিনেতা, নাট্য সঙ্গীতজ্ঞ এবং হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী দীনানাথ মঙ্গেশকরের মৃত্যু
১৯৪৫ :সোভিয়েত সেনাবাহিনী  বার্লিনে প্রবেশ করে
১৯৫৬: লোকশিল্পী তিজ্জনবাইয়ের জন্ম
১৯৭২: চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের মৃত্যু
১৯৭৩: ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকারের জন্ম
১৯৮৭: বরুণ ধাওয়ানের জন্ম
২০১১: ধর্মগুরু শ্রীসত্য সাঁইবাবার মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৯০ টাকা ৮৩.৯৯ টাকা
পাউন্ড ১০১.৮৯ টাকা ১০৪.৫০ টাকা
ইউরো ৮৭.৯৯ টাকা ৯০.৪১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৩৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭২,৭৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,১৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮০,৫০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮০,৬০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১১ বৈশাখ, ১৪৩১, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪। পূর্ণিমা ০/১৫ প্রাতঃ ৫/১৯। স্বাতী নক্ষত্র ৪৬/৩০ রাত্রি ১২/৪১। সূর্যোদয় ৫/১৩/০, সূর্যাস্ত ৫/৫৬/৩৭। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৫ মধ্যে পুনঃ ৯/২৭ গতে ১১/৯ মধ্যে পুনঃ ৩/২৩ গতে ৫/৫ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪১ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ১/২৭ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ১/৪২ গতে ৩/২৩ মধ্যে। রাত্রি ৮/৫৬ গতে ১০/২৭ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ৯/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১১/৩৪ গতে ১/১০ মধ্যে। কালরাত্রি ২/২৩ গতে ৩/৪৭ মধ্যে। 
১১ বৈশাখ, ১৪৩১, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪। প্রতিপদ অহোরাত্র। স্বাতী নক্ষত্র রাত্রি ১২/১। সূর্যোদয় ৫/১৩, সূর্যাস্ত ৫/৫৮। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৭ মধ্যে ও ৯/২২ গতে ১১/৬ মধ্যে ও ৩/২৬ গতে ৫/১০ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৭ গতে ৯/০ মধ্যে ও ১/২২ গতে ৫/১৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ১/৪৩ গতে ৩/২৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৯/০ গতে ১০/২৭ মধ্যে। কালবেলা ৮/২৫ গতে ১০/০ মধ্যে ও ১১/৩৬ গতে ১/১১ মধ্যে। কালরাত্রি ২/২৫ গতে ৩/৪৯ মধ্যে। 
১৪ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: গুজরাতকে ৪ রানে হারাল দিল্লি

11:27:04 PM

আইপিএল: ১৩ রানে আউট সাই কিশোর, গুজরাত ২০৬/৮ (১৯ ওভার) টার্গেট ২২৫

11:18:57 PM

আইপিএল: ৫৫ রানে আউট ডেভিড মিলার, গুজরাত ১৮১/৭ (১৭.৩ ওভার) টার্গেট ২২৫

11:08:30 PM

আইপিএল: ২১ বলে হাফসেঞ্চুরি ডেভিড মিলারের, গুজরাত ১৭৭/৬ (১৭ ওভার) টার্গেট ২২৫

11:05:47 PM

আইপিএল: ৪ রানে আউট রাহুল তেওতিয়া, গুজরাত ১৫২/৬ (১৬ ওভার) টার্গেট ২২৫

10:58:15 PM

আইপিএল: ৮ রানে আউট শাহরুখ খান, গুজরাত ১৩৯/৫ (১৪.১ ওভার) টার্গেট ২২৫

10:49:17 PM