সংবাদদাতা, রামপুরহাট ও বোলপুর: শিক্ষকদের চাকরি চলে যাওয়ার পর চাকরিখেকো রাম-ভাম উন্মত্ত উল্লাসে মেতেছে। এবিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। রবিবার বীরভূমের বোলপুর ও রামপুহাটে জোড়া কর্মসূচিতে এসে সাংবাদিকদের এমনটাই বললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে নির্বাচনী প্রচার সংক্রান্ত একটি বৈঠকে যোগ দেন। মূলত পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমিতির সদস্যদের নিয়ে এই বৈঠক হয়। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলপুর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী অসিত মাল সহ অন্যান্যরা। এরপর সাংবাদিক বৈঠকে নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিজেপিকে একহাত নেন। এদিন সন্ধ্যায় রামপুরহাটের মুক্তমঞ্চে শতাব্দী রায়ের সমর্থনে সভা করেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানেও বিজেপি সহ বাম-কং জোটকে তুলোধনা করেন। 
তিনি বলেন, কিছু শিক্ষক আমার কাছে কান্নাকাটি করছিলেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কৌশল করে তাঁদের সরানো হয়েছে। এই শিক্ষকদের চাকরি চলে যাওয়ার পর চাকরিখেকো রাম-ভামদের যে উন্মত্ত আনন্দ ও উল্লাস দেখছি, সবাইকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বলব। বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে। তবে বঞ্চিত ও যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষকদের পাশে আমরা আছি। তাঁদের ভোটের ডিউটিতে ডাকার অর্থ নির্বাচন কমিশন হয়তো বলতে চায়, ওঁরা শিক্ষক। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন আমাদের মতকেই মান্যতা দিচ্ছে। প্রয়োজনে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও জানানো হবে। আসলে, আমাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যেন পরপর তিনবার জিতে আমরা যেন অপরাধ করে ফেলেছি। 
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে তিনি বলেন, এক বা দু’জন গন্ডগোল যদি করেও থাকে তারজন্য গোটা সরকারকে কলুষিত করা ঠিক নয়। সন্দেশখালি নিয়েও তৃণমূলকে কলুষিত করার জন্য বিজেপি নানা কাণ্ড করছে। ভোটের ফল বেরলেই আপনারা দেখতে পাবেন, সন্দেশখালির মানুষ কী বলছেন। 
বীরভূম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শীতলকুচির রক্তের দাগ প্রার্থীর হাতে ছিল। ফলে বিজেপি যখন সেটা বুঝতে পারল তারাই ভিতর থেকে মনোনয়ন বাতিল করাল কি না, সেটা আমরা জানি না। কিন্তু সন্দেহ থেকেই যায়। 
অনুব্রত মণ্ডল প্রসঙ্গে বলেন, সাংগঠনিকভাবে তিনি থাকলে হয়তো বীরভূমের দুই কেন্দ্রে জেতার মার্জিন বাড়ত। তবুও শতাব্দী রায় ও অসিত মাল দু’জনেই জিতবেন। আসলে বিজেপি চাইছে আমাদের সব নেতা-নেত্রী জেলে থাকুক। সেটাও যদি হয়, তারপরও মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ভোট দেবেন। 
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যোগীর বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে কতটা পছন্দ করেন সেটা আমার সন্দেহ আছে। ‌ওঁকে তিনি তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হতে দেবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। শিবরাজ সিং চৌহানের মতো ওঁকেও ঘাড়ধাক্কা দিতেই পারেন। তবে বীরভূম সফরে প্রধানমন্ত্রী এলে দেখবেন, তিনি ভয়ে ভয়ে কথা বলছেন। আর ফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখবেন, রাজ্যে তাঁর যাতায়াত কমে যাবে।
ব্রাত্যবাবু বলেন, শতাব্দীর প্রথম সিনেমা আতঙ্ক। সেটাই এখন আমাদের দেখাচ্ছে বিজেপি। এই কেন্দ্রে বাম-সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর লড়াইয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরাজ্যে কংগ্রেস ও বিজেপির ফারাক নেই। কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে আপনি সিএএ ও এনআরসি চাইছেন।