গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
তীব্র দাবদাহ ও তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। কার্যত ভক্তশূন্য হয়ে পড়েছে তারাপীঠ মন্দির। যেখানে নিত্যদিন হাজার হাজার পর্যটকের আনাগোনায় জমজমাট থাকে তারাপীঠ, সেখানে সকাল ৯টাতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। টানা প্রখর রোদ-গরমে ভূগর্ভস্থ জলস্তর হু-হু করে নামছে। রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই সহ সর্বত্র তীব্র পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দুপুরে তাপমাত্রা ৪৩ থেকে ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাচ্ছে। একদিকে জ্বালা ধরানো রোদের তেজ, তার উপরে শুকনো গরম হাওয়া। এই জোড়া ফলায় নাকাল হচ্ছেন পথে বেরনো লোকজন। রাস্তায় মনে হচ্ছে আগুনের গোলার মধ্যে হাঁটতে হচ্ছে। তার উপরে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের জেরে গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে আমজনতার। মাত্রাতিরিক্ত গরমে কষ্ট পাচ্ছেন দেবী তারাও, এমন উপলদ্ধি থেকেই দেবীকে এখনও নিয়মিত ডাব নিবেদন করছেন সেবাইতরা।
মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, গর্ভগৃহে সারাক্ষণই এসি চলে। রয়েছে বড় ওয়াল ফ্যান। এখন গরমের কারণে সেভাবে ভক্ত সামাগম না হলেও গর্ভগৃহের দ্বার অবারিত। সারাক্ষণই খোলা রাখতে হয়। তাই এসি চললেও গর্ভগৃহ ঠান্ডা হচ্ছে না। গরমে দেবী খুবই কষ্ট পাচ্ছেন। তাই শরীর ঠান্ডা রাখতে দেবীকে নিয়ম করে ডাব নিবেদন করা হচ্ছে। বিশেষ পুজোর মাধ্যমে একটাই প্রার্থনা করছি যে বৃষ্টি নেমে আসুক। তীব্র দহনজ্বালা থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা করুন মা। না হলে শিশু থেকে বড়রা সকলেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ডাব নয়, দুপুরে গরম অন্ন ঠান্ডা করে দেবীকে ভোগ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে অবশ্যই থাকছে দই। সেই সঙ্গে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে সন্ধ্যারতির সময়। আগে বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে আরতি হতো। এখন সেটা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে হচ্ছে। আগে লুচি, পাঁচরকম ভাজা, মিষ্টি দেওয়া হতো শীতল ভোগে। বৈশাখের গরমের এই সময়ে তার সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে তরমুজ, ছোলাভেজা, শসা।
তারাময়বাবু বলেন, তারামা আমাদের প্রাণের দেবী। আমরা গরমের হাত থেকে বাঁচতে কেউ পাখা বা কেউ এসির নীচে থাকি। হালকা, ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাই। তেমনই আমাদের দেবীকে সেভাবেই রাখার চেষ্টা করছি। বারবার পা ধুইয়ে দেওয়া ছাড়াও ঠান্ডা জলে বিগ্রহের মুখ মুছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরকম টানা তাপপ্রবাহ আগে দেখিনি।