কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
উত্তর দিনাজপুরের মানুষ হাতের তালুর মতো চেনেন তুলাইপাঞ্জি চালকে। কোনটা আসল, কোনটা নকল তাঁরা দেখলেই বলে দিতে পারেন। তাই ধরা পড়ার ভয়ে জেলার বাজারে ‘ডুপ্লিকেট তুলাইপাঞ্জি’ বিক্রি করার খুব একটা সাহস পায় না ব্যবসায়ীরা। তারা কলকাতা, আসানসোল, শিলিগুড়ি সহ রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে ডুপ্লিকেট চাল চালান করে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, প্যাকেট দেখে বোঝার উপায় নেই, কোনটা আসল, কোনটা নকল। প্যাকেটের উপর বড় বড় করে লেখা ‘আসল তুলাইপাঞ্জি’। অথচ ভিতরে রয়েছে পালিশ করা শোভা চাল। বর্তমানে প্রকৃত তুলাইপাঞ্জির দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকার কাছাকাছি। সেখানে ৩০ টাকায় শোভা চাল কিনে পালিশ করে বিক্রি করলে কত টাকা লাভ হয়, একবার ভাবুন।
তুলাইপাঞ্জি চালের সঙ্গে শোভা চালের একটা সূক্ষ্ম তফাত রয়েছে। চালের দানার সাইজ মোটামুটি এক। তবে তুলাইপাঞ্জি চালের এক প্রান্ত একটু মোটা হয়। সেখানে শোভা চালের পেটের অংশটি মোটা থাকে। একমাত্র নিখুঁতভাবে দেখলেই এই ফারাক বোঝা সম্ভব। তুলাইপাঞ্জির ডুপ্লিকেট বাজার ছেয়ে ফেলায়, উত্তর দিনাজপুরের কৃষকদের মধ্যে এই চাল উৎপাদনে অনীহা দেখা দিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন উৎপাদক সোলাইমান আলি। তিনি বলেন, দাম না পেলে গ্রামের কৃষকরা এই ধানের চাষ করবেন কেন? সোলাইমানের মতো আর এক কৃষক জানিয়েছেন, বর্তমানে ভুট্টা চাষ বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে তুলাইপাঞ্জির উৎপাদনে। মূলত জুলাই থেকে ডিসেম্বর— এই ছ’মাস রায়গঞ্জ, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার ও দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডি, কালিয়াগঞ্জ এলাকায় তুলাইপাঞ্জির চাষ হয়। বাকি সময় পাট ও ভুট্টা চাষ হয়। কৃষকদের মতে, ভুট্টা চাষে যে পরিমাণ সার ব্যবহার করা হয়, তাতে চাষের জমি নষ্ট হয়ে যায়। জেলার এক আধিকারিকের কথায়, বিগত পাঁচ বছরে তুলাইপাঞ্জির উৎপাদন অনেকটাই বেড়েছে। আগে ৪,৭০০ হেক্টর জমিতে এই ধানের চাষ হতো। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮,৫০০ হেক্টর। তবে দুর্বল ব্যবস্থার কারণে কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। উল্টে হাত শক্ত হচ্ছে কালো কারবারিদের। তবে ইদানীং ‘ডুপ্লিকেট’ তুলাইপাঞ্জির বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন ও পুলিস।