নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কোথাও আগুন লেগেছে কি না, এই খবরটুকু তার কাছে পৌঁছে গেলেই হল। কিছুক্ষণের মধ্যে সে চলে যেত ঘটনাস্থলে। প্যান্ট গুটিয়ে গামবুট পরে দমকল কর্মীদের সঙ্গে ঢুকে পড়ত আগুন নেভানোর জন্য। বাড়ি, দোকান বা গোডাউন, যেখানে আগুন জ্বলত, সেখানে পাইপে করা জলও দিত। সতর্ক করার ঢংয়ে লাগোয়া ঘর বা বিল্ডিংয়ের লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বলে সেখানে ঢুকে পড়ত অভিযুক্ত। আলমারিতে থাকা সোনার গয়না ও নগদ টাকা থাকত টার্গেট।  একই কায়দায় বড়বাজারে একটি বাড়ি থেকে দশ লক্ষ টাকা মূল্যের সোনার অলঙ্কার ও নগদ হাতিয়ে শনিবার পুলিসের হাতে ধরা পড়ল আফ্রিদি বারি।
পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২৯ এপ্রিল বড়বাজার এলাকার একটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের ইঞ্জিন। আগুন নেভাতে স্থানীয় মানুষ দমকলের সঙ্গে হাত লাগান। এই খবর পেয়ে সেখানে দ্রুত পৌঁছে যায় আফ্রিদি। সকলের সঙ্গে ঢুকে পড়ে বাড়ির ভিতরে। আগুন নেভার পর সেখানে থেকে যায় সে। একটি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে রাখা ছিল একটি আলমারি। ঘরে ঢুকে ওই আলমারি ভেঙে ফেলে অভিযুক্ত। ভল্ট খুলে আলমারিতে থাকা সোনার গয়না ও নগদ তিরিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর দমকলের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর বাড়ির মালিক আবু তালেব ভিতরে ঢোকেন। একটি ঘরের আলমারিতে তাঁর নজর পড়ে। দেখা যায়, সেটি ভাঙা। সেটি পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন, তার মধ্যে থাকা নগদ ও সোনার গয়না নেই। চুরি যাওয়া সোনার গয়নাগুলি তিনি পারিবারিক সূত্রে পেয়েছিলেন। এক একটির ওজন ছিল কুড়ি থেকে তিরিশ গ্রাম। সবমিলিয়ে যার মূল্য, আনুমানিক দশ লক্ষ বলে বাড়ির মালিকের দাবি। এরপরই তিনি বড়বাজার থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
তদন্তে নেমে পুলিস ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। ঘটনার সময় দমকলের কর্মীরা ছাড়া আর কারা ভিতরে ঢুকেছিলেন, তার ছবি  স্থানীয়দের দেখানো হয়। তাঁরা একজন অপরিচিতকে চিহ্নিত করেন। জানা যায়, ওই ব্যক্তির বাড়ি রবীন্দ্র সরণি এলাকায়। এরপরই পুলিস সেখানে হানা দিয়ে আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ঘটনার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিসের দাবি। পাশাপাশি তদন্তকারীদের এও জানিয়েছে, একই কায়দায় বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা সে আগেও ঘটিয়েছে।