উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি চালু করার পর, তার সুযোগ নিয়ে জালিয়াতি করার নজির এই শহরে নতুন নয়। মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতায় এর আগে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে এই অপরাধে। জালিয়াতির অঙ্কও সেখানে কম ছিল না। কিন্তু গত রবিবার চারজনকে গ্রেপ্তার করে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা পুরনো ঘটনাগুলিকে টেক্কা দিয়েছে। অফিসাররা বলছেন, কলকাতা সহ রাজ্যে যে জলিয়াতির ঘটনা ঘটেছে, সেগুলির অধিকাংশেরই মাস্টার মাইন্ড ছিলেন গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের মধ্যে দু’জন।
কীভাবে জালিয়াতিচক্র জাল বিছিয়েছিল? অফিসাররা জানাচ্ছেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সল্টলেকের একটি সংস্থার জিএসটি সংক্রান্ত কারচুপির তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কিছু নথির সন্ধান পান তাঁরা। সেই নথির সূত্রে ধরে এগতে গিয়ে দেখেন, পঙ্কজ বাগলা ও বিষ্ণু সিংহানিয়া নামে দুই ব্যক্তি ৮৬টি সংস্থা খুলে বসেছেন, বাস্তবে যাদের কোনও অস্তিত্ব নেই। সেই কাগুজে কোম্পানিগুলির মূল কাজ ছিল ভুয়ো ‘ইনভয়েস’ বা চালান তৈরি করা এবং তার মাধ্যমে সরকারের থেকে ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট আদায় করা। অর্থাৎ, কোনও সংস্থা যেমন পণ্য বিক্রির পর সরকারকে জিএসটি প্রদান করে, তেমনই তারা যেখান থেকে কাঁচামাল কেনে, সেখানে আগেভাগে মিটিয়ে দেওয়া জিএসটি ফেরত পেতে সরকারের কাছে আবেদন করে। সরকার সেই টাকা ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট হিসেবে ওই সংস্থাকে ফিরিয়ে দেয়। সেই টাকা সরকারের কাছ থেকে আদায় করতেই প্রতারণা শুরু করে তারা।
অফিসাররা বলছেন, বিভিন্ন সংস্থা ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট পেতে এই দু’জনের সাহায্য নিত এবং ভুয়ো চালান তৈরি করাত। পোশাক, ইস্পাত এবং চর্ম ব্যবসাকে সামনে রেখেই মূলত ওই প্রতারণা করা হতো। জালিয়াতি শুধু যে কলকাতায় সীমাবদ্ধ ছিল, তা নয়। এই শহরের পাশাপাশি পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতেও এই কাজের মূল চক্রী ছিলেন তাঁরা। তাঁদের সূত্র ধরেই রাজীব কয়াল ও সঞ্জীব কয়াল নামে আরও দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এঁদের মধ্যে পঙ্কজ বাগলাকে জেল হেফাজত এবং বাকি তিনজনকে পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
কর্তারা বলছেন, যে বিরাট জালিয়াতির জাল তাঁরা গোটাচ্ছেন, তাতে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন রাঘব-বোয়ালের সংস্থাও। এবার তাদের কাজকর্মের দিকেই নজর রাখছেন তাঁরা।