গৃহে বা বাইরে পড়ে গিয়ে দেহে আঘাত বা অস্থিভঙ্গ হতে পারে। কাজকর্মে মনোযোগের অভাব। ... বিশদ
রাস্তা পেরিয়ে এবার চলে আসতে হবে বিপরীত দিকে। তারপর পিছন দিকে হাঁটতে হবে ভিক্টোরিয়া পাবলিক সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের দিকে। ২০২০ সালের গোষ্ঠী সংঘর্ষের আঁচ থেকে রেহাই পায়নি এই স্কুলও। একে বাঁপাশে রেখে সামান্য এগিয়ে ঢুকে পড়তে হবে বাঁদিকে। ওই রাস্তা নিয়ে যাবে ব্রিজপুরী এলাকায়। সোজা এগতে থাকলে একের পর এক গলি। কোনওটি শিব গলি, কোনওটি শ্রীরাম গলি, কোনওটি আবার মহর্ষি বাল্মীকি গলি। যেসব কলোনি আবার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত, তার আলাদা কোনও নাম নেই। নম্বর দিয়ে পরিচয়। খানিক এগলেই শিব্বান মডার্ন পাবলিক স্কুল। ২০২০ সালে এই স্কুলে তুমুল ভাঙচুর চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এমনকী অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়েছিল স্কুলের লাইব্রেরিতে।
কেটে গিয়েছে প্রায় চার বছর। ভয়াবহ গোষ্ঠী সংঘর্ষের স্মৃতি এখনও রীতিমতো তাজা উত্তর-পূর্ব দিল্লির এই অংশের বাসিন্দাদের। পরিস্থিতি আপাত শান্ত। ব্রিজপুরী এলাকায় শিব গলির সঙ্গে গলাগলি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে হয়তো গলি নং চার। ভরদুপুরেও সবক’টি গলির বাচ্চারা হইচই করে ক্রিকেটে মেতেছে। শিব্বান মডার্ন পাবলিক স্কুল সংস্কারের পর এখন ঝাঁ চকচকে। দিল্লির সাতটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম এই উত্তর-পূর্ব আসনটি। বিজেপি প্রার্থী করেছে গতবারের এমপি মনোজ তিওয়ারিকে। জোটধর্ম মেনে এখানে কংগ্রেসের প্রার্থী কানহাইয়া কুমার। সেই গোষ্ঠী সংঘর্ষের পর এই প্রথম লোকসভা ভোট। স্থানীয় বাসিন্দারা সেই ক্ষয়ক্ষতির পাল্টা ‘শোধ’ কি তুলবেন ভোটবাক্সেই? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিস্তীর্ণ অংশে।
ব্রিজপুরী এলাকায় শ্রীরাম গলির বাসিন্দা সঞ্জয় শুক্লা বললেন, ‘সাধারণ মানুষ কি অশান্তি চান? চান না। এসবের পিছনে থাকেন রাজনীতির কারবারিরা। কোনও না কোনও উদ্দেশ্য থাকে তাঁদের। রাজায় রাজায় যুদ্ধটাও হয়তো মেকি। কিন্তু উলুখাগড়াদের প্রাণ চলে যায়।’ সংলগ্ন শেরপুর চক এলাকায় একটি বাইকের শোরুমে সেইসময় আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সবক’টি নতুন বাইক পুড়ে যায়। সেই পুড়ে যাওয়া শোরুমের প্রায় গা ঘেঁষেই সবজির ঠেলা নিয়ে বসেন মহম্মদ ফুয়াদ। স্পষ্ট বার্তা তাঁর, ‘আমাদের হাতিয়ার তো ওই ভোটযন্ত্রটিই। তার প্রয়োগ করতে হবে ঠিকমতো। আর যেন কোনও মায়ের কোল খালি না হয়।’ বাবরপুর-মৌজপুর, সীলমপুর, ভজনপুরা, শিববিহারের মতো সংঘর্ষ বিধ্বস্ত উত্তর-পূর্ব দিল্লির এলাকাগুলিতে তাই আলাদাভাবে তৈরি হচ্ছে ভোটারদের ভোট-কৌশল। তার তল পেতেই আপাতত হিমশিম খাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি।