উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
মহাত্মা গান্ধীর দেড়শোতম জন্মবার্ষিকী চলছে। তাই তাঁকে স্মরণ করেই প্রদর্শনীতে হাজির করা হয়েছে দুষ্প্রাপ্য সব স্ট্যাম্প। শুধু যে পশ্চিমবঙ্গের স্ট্যাম্প সংগ্রাহকরাই তাঁদের ঝাঁপি নিয়ে এসেছেন, তা নয়। গোটা দেশ থেকেই আনা হয়েছে এমন কিছু ডাকটিকিটের নিদর্শন, যা দেখলে চমকে উঠবেন অনেকেই। এখনও পর্যন্ত গান্ধীজিকে সম্মান জানাতে, তাঁকে নিয়ে ডাকটিকিট ছাপিয়েছে অন্তত দেড়শো দেশ। তার অধিকাংশই হাজির এই প্রদর্শনীতে। আবার দেড়শোতম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিভিন্ন দেশকে স্ট্যাম্প ছাপাতে আহ্বান করেছিল ভারতীয় হাই কমিশন। তাতেও সাড়া দিয়েছে অন্তত ৭১টি দেশ, এমনটাই জানা গিয়েছে।
কিন্তু শুধুই কি জাতির জনককেই শ্রদ্ধা জানিয়ে দায় সেরেছে ডাক বিভাগের পশ্চিমবঙ্গ সার্কেল? একেবারেই যে তা নয়, প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখলেই তা বোঝা যাবে। অভিনবত্বের উদাহরণ দেওয়া যাক। বৌদ্ধধর্মকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একসময় স্ট্যাম্প তৈরি করেছিল ভুটান, যা ছিল সোনার রাংতায় মোড়া। ড্রাগনের কারুকাজের সেইসব স্ট্যাম্প দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। খ্রিস্টানদের কাছে যেমন বড়দিনের মাহাত্ম্য প্রশ্নাতীত, তেমনই দীপাবলি বা দেওয়ালি ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব, যেখানে অগ্নিশিখায় বিপদ তাড়িয়ে মঙ্গলের আবাহন করা হয়। সিঙ্গাপুর একবার সেই দীপাবলিকে সামনে রেখে স্ট্যাম্প ছাপায়, যা ছিল উজ্জ্বল ও ঝলমলে। দেখলেই যে কোনও ভারতীয়র মনে পড়ে যাবে দেওয়ালির জমকালো রাতগুলির কথা।
ভিভ রিচার্ডকে যাঁরা ক্রিকেটের মাঠে দেখে এসেছেন, তাঁরা কি জানেন, পুরদস্তুর বাদশাহি পোশাকে হাতে তরোয়াল ধরে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রবাদপ্রতিম খেলোয়াড়কে কেমন দেখতে লাগে? জড়োয়া-মণিমুক্ত খচিত সেই রাজকীয় পোশাকের ছবিতেই তৈরি হয়েছে স্ট্যাম্প। ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান বা শচীন তেন্ডুলকরের বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য ছবিতে তৈরি ডাকটিকিটের পাশেই শোভা পাচ্ছে রিচার্ডের ছবি। লেবাননে যুদ্ধের সময় যে ডাকটিকিটের মাধ্যমে চিঠি পাঠাতেন সৈন্যরা, আছে তারও সম্ভার।
ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লস ও ডায়ানার বিয়ের ছবিতে উজ্জ্বল যে স্ট্যাম্প, তা যেমন হাজির হয়েছে প্রদর্শনীতে, তেমনই মেরিলিন মনরোর হরেক পোজ দেওয়া ছবির নানা স্ট্যাম্পও আছে সেখানে। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ক্যুইন এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা মেরিই যে বিশ্বে দীর্ঘতম সময়ে সিংহাসনে থাকা রানি, তা জানান দেয় ওই প্রদর্শনী। সঙ্গে তাঁকে নিয়ে তৈরি বেশ কিছু ডাকটিকিট চমকে দেয় সকলকে।
নোভাম্যাক্স নামে একটি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ তৈরি হয়েছিল একসময়, যা নাকি সন্তানসম্ভবাদের ক্ষেত্রে ভীষণ কার্যকর। বিখ্যাত ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সিপলা’র সেই ওষুধের বিজ্ঞাপন একসময় থাকত পোস্টকার্ড জুড়ে। সেই অভিনব পোস্টকার্ড, বলা ভালো পিকচার কার্ড আছে ওই প্রদর্শনীতে। নরফক আইসল্যান্ড একসময় স্ট্যাম্প তৈরি করত, যা ছিল সুগন্ধীতে ভরপুর। শুধু কি তাই? সুতোর তৈরি নকশার স্ট্যাম্প, মোটা এমব্রয়ডারি, সেরামিক, ধানের তুষের তৈরি স্ট্যাম্প, প্লস্টিকের স্ট্যাম্প, পলিমার, এমনকী কাচের তৈরি ডাকটিকিটও হাজির হয়েছে প্রদর্শনীতে। যাঁরা সেসব চাক্ষুষ করতে চান, তাঁদের জন্য বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চালু থাকছে এই আয়োজন।